নির্বাচনী প্রচারে মোদি-শাহ যদি খোলাখুলি হিন্দুত্বের স্লোগান টানতে পারেন, তাহলে অন্যদের বেলায় আপত্তি কেন? নির্বাচন কমিশনকে এই ইস্যুতে একহাত নিয়েই এবার নয়া ইনিংসের ডাক দিলেন উদ্ধব ঠাকরে। ঠিক কী বলেছেন শিবসেনা নেতা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সদ্যসমাপ্ত বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত হিসেবনিকেশ উড়িয়ে পাঁচ রাজ্যের মধ্যে তিনটিতেই শেষ হাসি হেসেছে বিজেপি। আর তারপরেই হিন্দুত্ব ইস্যুতে একযোগে গেরুয়া শিবির এবং নির্বাচন কমিশনকে একহাত নিলেন শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরে। তাঁর সাফ কথা, নির্বাচনী প্রচারে মোদি-শাহের মুখে যেখানে হিন্দুত্বের স্লোগান শোনা গিয়েছে, এমনকি তা নিয়ে কোনও আপত্তিও করেনি নির্বাচন কমিশন, তাহলে অন্যদের ক্ষেত্রে কমিশন আপত্তি তোলে কীভাবে? অতএব এরপর থেকে তিনিও একইভাবে হিন্দুত্বের পথেই হাঁটবেন বলে কার্যত জানিয়ে দিয়েছেন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও শুনুন: বাবরি ধ্বংসের পর স্তম্ভিত মন্ত্রিসভা… কী প্রতিক্রিয়া ছিল প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও-এর?
চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে সব দলেরই পাখির চোখ ছিল পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট। কেন্দ্রের মসনদ দখলের আগে নিজেদের শক্তি পরীক্ষা করতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপিও। তাই বারে বারে ভোটমুখী রাজ্যগুলিতে সভা, সমাবেশ, প্রচার মিছিল করতে ছুটে গিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের তাবড় নেতারা। মধ্যপ্রদেশে এমনই এক মিছিল থেকে খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে আমজনতাকে বিনামূল্যে রাম মন্দির ভ্রমণের সুযোগ দেওয়া হবে। নির্বাচনী মিছিল থেকে ধর্মকে গুরুত্ব দিয়ে এহেন মন্তব্য করার দিকে কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন উদ্ধব ঠাকরে। যদিও তাঁর চিঠির কোনও উত্তর আসেনি কমিশনের তরফে। এর আগে কর্ণাটকে প্রচার করতে গিয়ে ‘বজরং বলী’-র নামে জয়ধ্বনি দিয়ে ভোট দেওয়ার কথা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদিও। আর এই ঘটনাগুলি তুলে ধরেই উদ্ধবের তোপ, এর আগে ধর্মকেন্দ্রিক স্লোগানের কারণেই শিবসেনা প্রতিষ্ঠাতা বালাসাহেব ঠাকরে-কে ভোট দিতে দেয়নি কমিশন। তাহলে এখন কমিশনের নীরবতার অর্থ কি এটাই যে, এই বিষয়ে আর কোনও বাধা নেই? সুতরাং তাঁদেরও ‘জয় ভবানী’, ‘জয় শিবাজি’, ‘হর হর মহাদেব’-এর মতো স্লোগান দিতে সমস্যা থাকছে না। ফলে এরপরে খোলাখুলি ঈশ্বর কিংবা ধর্মের নাম নিয়েই ভোট চাইবেন তাঁরাও, সাফ বক্তব্য শিবসেনা নেতার।
আরও শুনুন: তিন রাজ্যে গেরুয়া ঝড়, মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা বিদেশের সংবাদমাধ্যমেও
সত্যি বলতে, বালাসাহেবের শিবসেনা হিন্দুত্বকেই গুরুত্ব দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল। এমনকি শিবসেনার উদ্ধব ও শিন্ডে শিবিরে ভেঙে যাওয়ার সময়েও বিদ্রোহীদের অভিযোগ ছিল, উদ্ধবের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির পথ থেকে সরে এসেছে দল। সেখানে উদ্ধব ঠাকরের এই ঘোষণাকে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।