অপারেশনের সময় রোগীর পেটের ভিতর আটকে গিয়েছিল তোয়ালে। কিন্তু অপারেশনের পর সেকথা বেমালুম ভুলে যান চিকিৎসক। সেই সমেতই পেটের কাটা অংশ সেলাই করে দেন তিনি। পরে রোগীর পেটের যন্ত্রণা শুরু হলে সামনে আসে আসল সত্যি। এমন গাফিলতির নজির কোথায়? আসুন শুনে নিই।
সন্তান প্রসবের পর, পেটে প্রবল যন্ত্রণা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক মহিলা। হাসপাতাল থেকে জানানো হয় অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে এমন ব্যথা হচ্ছে। সেই মতো পাঁচ দিন ভর্তিও রাখা হয় মহিলাকে। কিন্তু তাতেও যন্ত্রণা না কমায় অন্য এক চিকিৎসকের দ্বারস্থ হন তাঁর পরিবার। সেখানে গিয়ে তাঁরা জানতে পারেন মহিলার পাকস্থলীতে নাকি আটকে রয়েছে আস্ত একটা তোয়ালে।
আরও শুনুন: তরুণীর পেট থেকে উদ্ধার ৪ ফুট লম্বা সাপ! অপারেশনের সময় তাজ্জব চিকিৎসকরাও
ঘটানটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আমরোহার বাঁশখেরি গ্রামের এক হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, গ্রামের বাসিন্দা নাজরানা, অস্ত্রোপচারের জন্য স্থানীয় নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানে ডা. মাতলুব নামে এক চিকিৎসক তাঁর অপারেশন করেন। কিন্তু অপারেশনের সময় একটি তোয়ালে নাজরানার পাকস্থলীতে আটকে যায়। অদ্ভুতভাবে অপারেশনের পর সেকথা বেমালুম ভুলে যান ওই চিকিৎসক। পেটের ভিতর তোয়ালে থাকা সত্ত্বেও তিনি কাটা অংশ সেলাই করে দেন। স্বাভাবিক ভাবেই জ্ঞান ফেরার পর ব্যাপক পেটের যন্ত্রণা শুরু হয় নাজরানার। আবার সেই নার্সিংহোমেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। নতুন করে পেট ব্যথার কথা শুনে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, অতিরিক্ত ঠান্ডার জন্য এমন সমস্যা হচ্ছে। তাই তড়িঘড়ি নাজরানাকে ভর্তি করে নেন তাঁরা। এরপর কেটে যায় পাঁচ দিন। তবুও নাজরানার পেটের ব্যথা কিছুতেই কমে না। একইসঙ্গে নাজরানার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। বাধ্য হয়ে তাঁর স্বামী শামসের আলি অন্য ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেই মতো তিনি নাজরানাকে নিয়ে যান আমরোহার এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে গিয়েই প্রকাশ্যে আসে আসল সত্যি। আল্ট্রাসোনোগ্রাফি করে সেখানকার ডাক্তারবাবুরা বুঝতে পারেন নাজরানার পেটের ভিতর আটকে রয়েছে আস্ত একটা তোয়ালে। তখনই অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেন তাঁরা। দ্রুত নাজরানার পাকস্থলীতে আটকে থাকা সেই তোয়ালে বের করা আনা হয়।
আরও শুনুন: ডিপ্রেশনে কয়েন খাওয়া অভ্যাস, ব্যক্তির পেটে ৬৩টি কয়েন পেয়ে তাজ্জব চিকিৎসকরা
ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বেশ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাঁশখেরি গ্রামে। ইতিমধ্যেই চিফ মেডিক্যাল অফিসারের কাছে ডা. মাতলুবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি জানিয়েছেন শামসের। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টির তদন্ত করে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন সিএমও। তবে এ বিষয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি মহিলার স্বামী। তাই তদন্তের রিপোর্ট আসার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবে পুলিশ। এমনটাই জানানো হয়েছে প্রশাসন সূত্রে।