চাপ সামলাতে না পারলে ছাড়তে হবে দায়িত্ব। রাজীব সিনহাকে কড়া বার্তা হাই কোর্টের। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পর্যাপ্ত বাহিনী চাইতে হবে, নির্দেশ কমিশনকে। এত রক্তক্ষয় হলে ভোট বন্ধ করা উচিত। পঞ্চায়েত হিংসা নিয়ে মন্তব্য হাই কোর্টের। প্রার্থীদের নথি বিকৃতি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ আদালতের। ভাঙড় অশান্তিতে তৃণমূলকর্মীর মৃত্যুর জের। নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে দায়ের খুনের মামলা। স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজল কলকাতা-সহ একাধিক জেলা। মালদহে বাজ পড়ে তিনজনের মৃত্যু, আহত ৭।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 19 জুন 2023: বিশেষ বিশেষ খবর- ভোটে অশান্তির অভিযোগ নিজেই দেখবেন রাজ্যপাল, রাজভবনে চালু ‘পিস রুম’
বিস্তারিত খবর:
1. কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে ফের নির্বাচন কমিশনকে ভর্ৎসনা কলকাতা হাই কোর্টের। পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলাপ্রতি মাত্র ১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে বড়সড় প্রশ্নের মুখে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রের কাছে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে আদালতের কড়া বার্তা, “ভোটের কাজের চাপ সামাল দিতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। রাজ্যপাল নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করবেন।”
রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ আগেই দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কমিশন ও রাজ্য সরকার। নির্বাচন মানেই অবাধ হিংসা নয়, মন্তব্য করে হাই কোর্টের রায় বহাল রেখেছে শীর্ষ আদালতও। এই পরিস্থিতিতে কমিশনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রত্যেক জেলায় ১ কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হবে। যার প্রতিবাদে হাই কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা করে বিজেপি। সেই মামলাতেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, কমিশন যে ২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে পাঠিয়েছে, সেটা নির্বাচনের জন্য যথেষ্ট নয়। আদালতের সাফ নির্দেশ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সব জেলায় পর্যাপ্ত বাহিনী মোতায়েনের জন্য কেন্দ্রের কাছে বাহিনী চাইতে হবে কমিশনকে। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের আরও নির্দেশ, ২০১৩ সালে যে পরিমাণ বাহিনী মোতায়েন ছিল, তার থেকে বেশি বাহিনী চাইতে হবে, কারণ এখন জেলার সংখ্যা বেশি। নির্বাচন কমিশনকে এদিনও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার কথা মনে করিয়েছেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।
2. পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির ঘটনায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্ট। এত হিংসা হলে ভোট বন্ধ হয়ে যাওয়া উচিত, মন্তব্য বিচারপতি অমৃতা সিনহার। এই ঘটনা রাজ্যের পক্ষে লজ্জার বলেও মনে করেন বিচারপতি। প্রার্থীরা সময়মতো মনোনয়ন পেশ করতে পারছেন না, তাঁদের মারধর করা হচ্ছে, হুমকি দেওয়া হচ্ছে- এই মর্মে একাধিক মামলা জমা পড়েছে বলেও জানান বিচারপতি সিনহা। মনোনয়ন জমা এবং প্রতীক পাওয়ার পরেও আশ্চর্যজনকভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে ভাঙড়ের অন্ততপক্ষ ১৭ জন সিপিএম প্রার্থীর নাম। তাঁদের রুজু করা মামলাতেই রাজ্যে অশান্তির ঘটনায় উষ্মাপ্রকাশ করেন বিচারপতি। রাজ্যকে কড়া ভর্ৎসনার পর ওই বাম প্রার্থীদের নির্বাচনে লড়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা।
এদিকে মনোনয়নপত্র বিকৃতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হাওড়ার উলুবেড়িয়ার ১ নম্বর ব্লকের বহিরা এবং ধূলিসামলি পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী কাশ্মীরা বিবি ও অনুজা বিবি। দু’জনের দাবি, ওবিসি হওয়া সত্ত্বেও মনোনয়নপত্রের চেকলিস্টে জাতিগত শংসাপত্রের জায়গায় তার উল্লেখ করেননি বিডিও। তাঁরা মনে করেন, নির্বাচনী নথি বিকৃতির ফলে তাঁদের মনোনয়নপত্র স্ক্রুটিনিতে বাদ পড়ে গিয়েছে। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি অমৃতা সিনহার মন্তব্য, “যে আধিকারিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি রাজ্য সরকারি কর্মচারী। তাই রাজ্যের কাছে এই তদন্তের ভার দেওয়া সমীচীন হবে না।” এরপর এই মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগের দিন অর্থাৎ আগামী ৭ জুলাই এই মামলার তদন্ত রিপোর্ট হাই কোর্টে পেশের নির্দেশ বিচারপতি সিনহার। এদিকে এই রায়কে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলে পালটা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।