পুরভোটে বাজিমাত তৃণমূলের। সবুজ ঝড়ের মধ্যেও তাহেরপুরে জয়ী বামেরা। চার দশক পর কাঁথি পুরসভা হাতছাড়া অধিকারী পরিবারের। গড় রক্ষায় ব্যর্থ অধীর-সহ হেভিওয়েট নেতারাও। আত্মপ্রকাশেই চমক ‘হামরো পার্টি’-র। ইউক্রেনে প্রাণ গেল আরও এক ভারতীয়র। মাদক মামলায় শাহরুখ-পুত্র আরিয়ান খানকে ক্লিনচিট দিল NCB’র বিশেষ তদন্তকারী দল।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 1 মার্চ 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- রুশ গোলায় ইউক্রেনে মৃত্যু ভারতীয় পড়ুয়ার, সমবেদনা জানালেন মোদি-মমতা
আরও শুনুন: 28 ফেব্রুয়ারি 2022: বিশেষ বিশেষ খবর- শুরু হল ৪৫তম কলকাতা বইমেলা, উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী
বিস্তারিত খবর:
1. পুরভোটে ফের জয়জয়কার ঘাসফুল শিবিরের। ১০৮ পুরসভার ২২৭৬ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮৩৩টি ওয়ার্ডেই জয়ী হল তৃণমূল। সব মিলিয়ে ১০২ টি পুরসভাই রয়েছে ঘাসফুলের দখলে। বিজেপির দখলে ৬৩টি ওয়ার্ড। বামেরা পেয়েছে ৫৮টি ওয়ার্ড এবং কংগ্রেস জিতেছে ৫৯টি ওয়ার্ডে। উল্লেখ্যযোগ্যভাবে নির্দল প্রার্থীরা জিতেছে ১৫৮টি ওয়ার্ডে। বিপুল জয়ের পর দলের কর্মী-সমর্থক ও নেতাদের শুভেচ্ছা জানালেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটারে তিনি লেখেন, “আমাদের বিশাল জয়ের জন্য মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ। জয়ী প্রার্থীদের অনেক শুভেচ্ছা।” তিনি আরও জানান, “জয়ের সঙ্গেই দায়িত্ব বাড়ে। যত জিতব তত নম্র হতে হবে। শান্ত হতে হবে। স্নিগ্ধ হতে হবে।”
এদিকে বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধী স্থান পেলেও পুরভোটে কার্যত খাতাই খুলতে পারল না বিজেপি। কয়েকটি ওয়ার্ড পেলেও একটি পুরসভাও পায়নি গেরুয়া শিবির। এই ফল মানতে রাজি নন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “এটা একটা প্রহসনের ফল। রাজ্যে গণতান্ত্রিক ভোট হওয়া সম্ভব নয়। এই ফল মানছি না।” একই সুর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর গলাতেও। তৃণমূলকে খোঁচা দিয়ে ব্যঙ্গের সুরে তিনি বলেন, “যে সমস্ত জায়গায় বিরোধিরা জিতেছে সেটা দুর্ঘটনা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে মানুষের ঘৃণা শাসকদলের রিগিংকে ছাড়িয়ে গিয়েছে!” সেই সুরে সুর মিলিয়ে বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “ভোট লুট হয়েছে। রীতিমতো সন্ত্রাস হয়েছে। এভাবে ভোট হতে পারে না।” পুরনির্বাচনে ভরাডুবির পরই চিন্তন শিবিরের বৈঠকের ডাক বঙ্গ বিজেপির। আগামী ৫ মার্চ হবে এই বৈঠক। যদিও বিরোধীদের তোলা পুরভোটে অশান্তির অভিযোগকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “১১,২৮০টি বুথে ভোট হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটা বুথে সমস্যা হয়েছে। সেগুলিকেই বড় করে দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যম। মানুষ আমাদের সমর্থন দিয়েছে। তাঁদের ধন্যবাদ।”
2. রাজ্য জুড়ে সবুজ ঝড়ের মধ্যেও আশার আলো দেখছে বামেরা। নদিয়ারর তাহেরপুরের দখল এবারও বামদের হাতেই। আগের নির্বাচনেও এই কেন্দ্রে জিতেছিল বামেরাই। এদিকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকে খাতা খুলতে ব্যর্থ হল বিজেপি। কাঁথি পুরসভায় চার দশকের জেতার রেকর্ড অক্ষুণ্ণ রাখতে এবার ব্যর্থ অধিকারী পরিবার। ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র দুটিই দখলে আনতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। ১৮টি ওয়ার্ডে হইহই করে জয় হাসিল করলেন তৃণমূল প্রার্থীরা। একটি ওয়ার্ড গিয়েছে নির্দলের দখলে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরাজয় শুভেন্দু শিবিরের প্রার্থী, উত্তর কাঁথির বিধায়ক সুমিতা সিংহের। তিনি ৬ নং ওয়ার্ড থেকে হেরেছেন তৃণমূল প্রার্থীর কাছে। শুধু অধিকারী পরিবার নয়, সবুজ ঝড়ে প্রায় উড়েই গিয়েছেন হেভিওয়েট প্রার্থীরা। নিজের ওয়ার্ডে জিততে পারেননি রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জয় ছিনিয়ে নিতে ব্যর্থ অধীর রঞ্জন চৌধুরীও। ১৯৯৮ সাল থেকে অধীর চৌধুরীর গড় হিসেবে পরিচিত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর এলাকা। লড়াই করেও এবার গড়রক্ষা করতে পারলেন না তিনি। বিজেপির দাপুটে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গড়েও পরাজয়ের ছায়া।কোনওমতে বিধায়ক হিরণ নিজের আসনে জয় পেলেও পুরবোর্ড গড়তে পারল না বিজেপি। ৩৫ ওয়ার্ডের পুরসভায় বিজেপিকে মাত্র ৬টি আসন পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হল। উল্লেখযোগ্যভাবে বিজেপির সমসংখ্যক আসন পেল কংগ্রেসও। ধাক্কা খেলেন অর্জুন সিংও। কাঁচরাপাড়া থেকে টিটাগড় এই ৮টি পুরসভায় খাতাই খুলতে পারেনি বিজেপি। সবমিলিয়ে রাজ্যের শাসকদলের উন্নয়নের জোয়ারে খড়কুটোর মতো ভেসে গেলেন বিরোধী নেতারা।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।