অবাধেই মিটল কলকাতা পুরভোট। বিরোধীদের অশান্তির অভিযোগ ভিত্তিহীন। জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অশান্তিতে তৃণমূল জড়িত থাকলে হবে শাস্তি। কড়া বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ভোটের দিনেই রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ের। ক্রমশ চিন্তা বাড়াচ্ছে ওমিক্রন। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই আসতে চলেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 18 ডিসেম্বর 2021: বিশেষ বিশেষ খবর- পুরভোটের আগে তারাতলায় অস্ত্র-সহ গ্রেপ্তার ৩, আঁটসাঁট নিরাপত্তা
আরও শুনুন: 17 ডিসেম্বর 2021: বিশেষ বিশেষ খবর- রাজ্যের মুকুটে নয়া পালক, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাদানে শীর্ষে বাংলা
বিস্তারিত খবর:
1. মোটের উপর অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হল পুরভোট। বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটদানের হার ৬৫.৪০ শতাংশ।
ভোট উপলক্ষে শহরের নিরাপত্তার বর্ম আগে থেকেই ছিল আঁটসাট। অশান্তি এড়াতে চালু ছিল রাজ্য পুলিশের কন্ট্রোল রুম। উৎসবের মেজাজেই শুরু হয় ভোটগ্রহণ পর্ব। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তির খবর আসতে থাকে। সুকিয়া স্ট্রিটের বেসরকারি হাসপাতালের ছাদ থেকে বিরিয়ানি (Biriyani) বিলি করে ভোট কেনার চেষ্টা। এমনই অভিযোগ উঠল মানিকতলার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে শিয়ালদহের টাকি স্কুলের সামনে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। গুরুতর জখম হন ২ ব্যক্তি। ভোটারদের ভয় দেখাতে বোমাবাজি করা হয় বলে দাবি তৃণমূলের। ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে ক্যালকাটা অ্যাংলো গুজরাটি স্কুল ও জৈন বিদ্যালয়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা যায়। কংগ্রেস প্রার্থী সন্তোষ পাঠক এবং তৃণমূল প্রার্থী শক্তিপ্রতাপ সিংয়ের পোলিং এজেন্টদের অভিযোগ, বহিরাগতরা এসে বুথ দখল করে নেয়। দফায় দফায় হাতাহাতি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামে ব়্যাফ। সন্তোষ পাঠকের পোলিং এজেন্ট অমিতাভ চক্রবর্তীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।
পুরভোটে কলকাতায় দুই এলাকায় বোমাবাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে কলকাতা পুলিশ। সাংবাদিক বৈঠক করে কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানান, জৈন স্কুলের হাতাহাতির ঘটনায় ইতিমধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টাকি স্কুলের বোমাবাজির ঘটনায় ধৃত ১। ভোটের অশান্তির ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিশের জালে ৭২ জন। যদিও পুলিশের দাবি, শান্তিপূর্ণ ভাবেই হয়েছে ভোট।
এদিন বিকেলে মিত্র ইনস্টিটিউশনে ভোট দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হচ্ছে। মানুষ শান্তিতে ভোট দিচ্ছে, আমি খুশি।” পুরভোটের সকাল থেকে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে অশান্তির অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। সেই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “কেউ ভোটে প্রার্থী দিতে পারছে না, ভোট হচ্ছে না, এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পরিকল্পনামাফিক নানারকম অভিযোগ করা হচ্ছে।”
2. পুরভোটে বেনজির ভাবে একজোট বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্ব। দুর্নীতির অভিযোগে একযোগে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হয় তিন দল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে ভোট বাতিলের দাবিও জানায় তারা। রবিবার দুপুরে ভোটে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে থানার সামনে অবস্থানে বসেন সিপিএম প্রার্থী শ্রাবণী চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, পুর নির্বাচনে বেনিয়ম হচ্ছে। ভোট বাতিল করতে হবে। এর পর তাঁর বিক্ষোভে যোগ দেন কংগ্রেস প্রার্থী মৌমিতা কালি। একইসঙ্গে বিক্ষোভে বসেন বিজেপি নেতা-কর্মীরাও। সকলের দাবি, বাতিল করতে হবে পুরভোট। বিরোধীদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাজ্যের শাসকদল। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ভক্তব্য, কলকাতায় শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। বিরোধীদের সংগঠন নেই, ভোট পাবে না জেনেই এই ধরনের অভিযোগ তাদের।
এদিকে ভোটে প্রহসন হয়েছে, এই অভিযোগে সোমবার ও মঙ্গলবার রাজ্যজুড়ে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে বামফ্রন্ট। ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, কলকাতা কর্পোরেশনের নির্বাচনকে যেভাবে প্রহসনে পরিণত করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে তার প্রতিবাদ হবে। যেখানে সোমবার সম্ভব হবে না সেখানে মঙ্গলবার অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে। সোমবার দুপুরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হবে। পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছে বিজেপিও। এই দাবি নিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হতে চলেছে গেরুয়া শিবির।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।