বিক্ষিপ্ত হিংসার মাঝেই ভোটগণনা। সকাল থেকেই পথে রাজ্যপাল। জেলায় জেলায় উড়ছে সবুজ আবির। ট্যুইট করে সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানালেন অভিষেক।’একফোঁটা রক্তপাতও সার্বভৌমত্বের উপর হামলা’, সরব রাজ্যপাল। জয় সত্ত্বেও হিংসা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ পার্থর। ভাঙড়েও জয়ের নিরিখে এগিয়ে শাসকদলই। অশান্তির জেরে গ্রেপ্তার ৭ আইএসএফ কর্মী। শীতলকুচিতে নিরঙ্কুশ জয় শাসক দলের। জিতেই তৃণমূলে যোগদান কাকুরিয়ার সিপিএম প্রার্থীর। স্বামী বিবেকানন্দকে অপমানের জের। অমোঘ লীলা প্রভুকে একমাসের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা ইসকনের।
হেডলাইন:
আরও শুনুন: 10 জুলাই 2023: বিশেষ বিশেষ খবর- উত্তপ্ত মণিপুরে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল, যাচ্ছেন পাঁচ সদস্য
বিস্তারিত খবর:
1. গ্রামবাংলার দখল শাসকদল তৃণমূলের হাতেই। গণনার দিন বেলা যত গড়িয়েছে, তাতে হাসি ফুটেছে শাসকদলের কর্মীদের মুখে। ভোটের আগে থেকে শুরু করে ভোটের দিন পর্যন্ত হিংসাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। যদিও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগে মানুষ পিছপা হননি। তারই ফলাফলে দেখা গেল, মানুষের আস্থা শাসকদলের প্রতিই রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে ৬৩,২২৯ আসনের মধ্যে ৮,০০২টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন প্রার্থীরা। এর মধ্যে তৃণমূল জিতেছে ৭,৯৪৪টি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ৯,৭৩০ আসনের মধ্যে ৯৯১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থীরা। এর মধ্যে তৃণমূল জিতেছে ৯৮১টি আসনে। পাশাপাশি ভোটযুদ্ধেও বাকি দলগুলিকে পিছনে ফেলে বেশি আসনে এগিয়ে ঘাসফুল শিবির। শেষ পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ১৬,৩৬৩টিতে এগিয়ে তৃণমূল। ১৬৮৪ আসনে এগিয়ে পদ্ম শিবির। আর ১২৫৯ আসনে এগিয়ে আছে বাম-কংগ্রেস জোট। এদিকে রাজনৈতিক ময়দানে এই প্রথম উড়ল হলুদ আবির। পুরুলিয়ার আড়শা ব্লকে সিরকাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী মোট সাতজন কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। শাসকদলের এই বিপুল জয়ের জন্য মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সমস্ত রকম প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষ যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের উপর আস্থা রেখেছেন, ট্যুইটে সে কথাই স্পষ্ট করে জানিয়েছেন অভিষেক। তাঁর কথায়, ‘নো ভোট ফর মমতা’ এখন ‘নাউ ভোট ফর মমতা’-য় বদলে গিয়েছে।
2. গণনার দিনও রাজ্যের জেলায় জেলায় ধরা পড়ল অশান্তির ছবি। হয়েছে ব্যালটে কালি ঢেলে দেওয়া, ব্যালট লুটের চেষ্টা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে হাতাহাতি, বোমাবাজি, সংঘর্ষে জখম একাধিক রাজনৈতিক কর্মী। বাঁকুড়ার শালতোড়ায় বিজেপি বিধায়ক চন্দনা বাউড়ির গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ। কেন্দ্রীয় বাহিনীর লাঠির ঘায়ে জখম নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহা। অন্ডালের গণনাকেন্দ্রে যাওয়ার সময় সিপিএমের কাউন্টিং এজেন্টকে অপহরণের অভিযোগ শাসকদলের বিরুদ্ধে। মালদহে, তমলুকে, গাইঘাটায় গণনাকেন্দ্রের বাইরে অবৈধ জমায়েত হঠাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। রানীগঞ্জে ভোট গণনাকেন্দ্রের বাইরে সমর্থকদের নিয়ে বসে পড়েন বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। এদিকে উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া ইত্যাদি একাধিক এলাকায় সংঘর্ষের খবর সামনে এসেছে। মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে বোমাবাজির অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের বাকচায় বোমা বিস্ফোরণে হাত উড়ে গিয়েছে এক বৃদ্ধের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে বোমাবাজির জেরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পাঁচজনকে। উত্তপ্ত হয়েছে ভাঙড়ও। এদিন কলকাতায় ফিরে জেলায় জেলায় ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কথা বললেন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে। পরে হিংসার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রে সবথেকে বড় শত্রু হল হিংসা। এক ফোঁটা রক্তপাতও সার্বভৌমত্বের উপর হামলা বলেই মত তাঁর। দুর্নীতি ও হিংসার বিরুদ্ধে ধর্মুযুদ্ধেরই ডাক দিয়েছেন তিনি। এদিকে বিপুল জয়ের পরেও ভোটে হিংসা নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। হিংসার বিপক্ষে মত দিয়েছেন মদন মিত্র, বাবুল সুপ্রিয়, হুমায়ুন কবীরের মতো নেতারাও। সেই তালিকায় এবার যোগ দিলেন পার্থও।
শুনে নিন বিশেষ বিশেষ খবর।