কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে গিয়ে অপমানিত হলেন অসমের তরুণী। শর্টস পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসায় পরীক্ষা দিতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন পরীক্ষক। শেষপর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে পরীক্ষায় বসার অনুমতি পান বছর উনিশের জুবিলি।
তালিবানি আফগানিস্তানে নয়, পড়শি রাজ্য অসম সাক্ষী হল পোশাক ফতোয়ার। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে গিয়ে অপমানিত হলেন তরুণী। কেন? যেহেতু তিনি শর্টস পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। পরীক্ষিক তাঁকে ওই পোশাক পরে পরীক্ষা দিতে বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে পারলেন তরুণী?
পারলেন বটে। তবে কি-না তার জন্য তাঁকে পরীক্ষকের শর্ত মানতে হল। কী সেই শর্ত? তা জানার আগে গোটা ঘটনা বিস্তারে জেনে নেওয়া দরকার।
আসলে গত বুধবার ছিল অসম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা। সেই মতো অসমের গিরিজানন্দ চৌধুরী ইনস্টিটিউট অব ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেস-এর পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছান তেজপুরের বিশ্বনাথ চরিয়ালের বাসিন্দা জুবিলি তামুলি। নির্দিষ্ট সময়ে বাবার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে আসেন তিনি। কিন্তু ‘দোষ’ করে ফেলেছিলেন। যার জেরে পরীক্ষিক জানিয়ে দেন, জুবিলি পরীক্ষা দিতে পারবেন না। কী ‘দোষ‘?
আরও পড়ুন: বোরখা ছুঁড়ে ফেলে রঙিন পোশাকে উজ্জ্বল, তালিবানের চোখে চোখ রেখে প্রতিবাদে আফগান মহিলারা
‘দোষ’-এর নাম শর্টস। শর্টস পরে পরীক্ষা দেওয়া যাবে না বলে ‘নিদান’ দেন পরীক্ষক। স্বভাবতই যা মানতে রাজি হননি তরুণী। তিনি দাবি করেন, অ্যাডমিট কার্ডে নির্দিষ্ট পোশাকের কথা উল্লেখ নেই। তাই সুবিধে মতো পোশাক পরে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছেন। পরীক্ষকের সঙ্গে কার্যত বচসায় জড়িয়ে পড়েন বছর উনিশের জুবিলি তামুলি। যদিও তাঁর কোনও কথাই শোনেননি পরীক্ষক। এর পর পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসেন জুবিলি। বিষয়টি জানাজানি হতে পরীক্ষার কন্ট্রোলার জুবিলিকে শর্তসাপেক্ষে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেন। কী সেই শর্ত?
অভিযোগ, তাঁকে বলা হয়, পা ঢাকা প্যান্ট পরে পরীক্ষায় বসতে হবে। পরিস্থিতির চাপে জুবিলির বাবা পোশাকের দোকানে ছুটে যান। ৮ কিলোমিটার দূরের দোকান থেকে পোশাক নিয়ে আসেন। যদিও তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছাতে তাঁকে বলা হয়, সমস্যা মিটেছে। কীভাবে?
আরও পড়ুন: মণিপুরী কন্যার পদকজয়ে উচ্ছ্বাস, তবু তাঁদের প্রতি মনোভাব কি বদলাবে?
জুবিলি জানান, আমাকে জানলার পর্দা দেওয়া হয় পা ঢেকে বসার জন্যে। জুবিলি প্রশ্ন তুলেছেন, কোভিডবিধি মেনে মাস্ক পরা হচ্ছে কি না সেটা দেখা হল না। শরীরের উত্তাপ মাপা হল না, অথচ কে কী পোশাক পরে আসছে তা নিয়ে মাথাব্যথা পরীক্ষকদের!
জুবিলির বক্তব্য কড়া, কিন্তু যুক্তিযুক্ত, বলছেন অনেকেই। তালিবানি আফগানিস্তানে নয়, পড়শি রাজ্য অসমে জুবিলির সঙ্গে যা হয়েছে তা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছে নেটাগরিকরা।