চাকরি পাওয়ার জন্য মানুষ কী না করে! ভাল রেজাল্ট তো থাকতেই হবে, পাশাপাশি হতে হবে স্মার্ট-ও। তার জন্য বিস্তর ট্রেনিং নেওয়া বা গ্রুমিং-এর ক্লাসও করে থাকেন কেউ কেউ। তবে যে মহিলার গল্প এখন বলব, তিনি বাজিমাত করলেন একটা মিমের মাধ্যমেই। বলা যায়, ওই মিমের দৌলতেই ইন্টারভিউতে বাতিল হয়েও ফের ডাক পেলেন তিনি। তা, কী এমন ছিল সেই মিমে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
প্রেম থেকে শুরু করে চাকরি-বাকরি জীবনের নানা ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যান তো থাকেই। তবে, এক মহিলার জীবনে চাকরির ইন্টারভিউতে প্রত্যাখ্যান এবং তার পরে যা যা ঘটল- তা বেশ অভিনব। সৌজন্যে একটি মিম। প্রাথমিক ধাপেই সংস্থার থেকে প্রত্যাখ্যান পেয়েছিলেন চাকরিপ্রার্থী ওই মহিলা। তবে সেই প্রত্যাখ্যানকে তিনি গ্রহণ করেন অন্যভাবে। আর তাতেই ফিরল ভাগ্য।
আরও শুনুন: ৭ ঘণ্টায় ৭৫ বার গাইলেন জাতীয় সঙ্গীত, দেশকে ভালবেসেই বিশ্বরেকর্ড তরুণীর
প্রায় সকলের মতোই হন্যে হয়ে চাকরি খুঁজছিলেন সুইডেনের এই মহিলা। কিন্তু কোনও জায়গা থেকেই কোনও ভাল খবর পাচ্ছিলেন না তিনি। এরই মধ্যে তিনি একটি সংস্থায় চাকরির জন্য আবেদন করেন। ইন্টারভিউ-ও দেন। তবে সেখানেও শিকে ছেঁড়েনি। বরং হাতে আসে প্রত্যাখ্যানের মেল। হতাশ হয়েছিলেন বটে। তবে প্রাথমিক হতাশা কাটিয়ে সেই মেলের প্রত্যুত্তর দিয়ে ফেলেন তিনি। ইদানীং সোশ্যাল মিডিয়ায় মিমের রমরমা। ‘জেনারেশন জেড’-এর পথ ধরেই তিনি জবাবি মেল-এ সংস্থাকে পাঠিয়ে দেন একটি প্রচলিত মিম। আর তাতেই ঘটে যায় মিব়্যাকল।
আরও শুনুন: কোথাও প্রসাদে মানা, কোথাও বসে ভূতের মেলা… অদ্ভুত রীতি দেশের এই ব্যতিক্রমী মন্দিরগুলিতে
কিছুক্ষণের মধ্যেই সংস্থার তরফে আবার একটি মেল পান মহিলা। যেখানে প্রত্যাখ্যানপত্র বাতিল করে তাঁকে ফের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকে সংস্থাটি। যা দেখে বিস্ময়ের সীমা ছিল না মহিলার। নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে, ওই সংস্থার কাছে কী এমন মিম পাঠিয়েছিলেন তিনি? সোশ্যাল মিডিয়ায় সে ব্যাপারটি অবশ্য নিজেই খোলসা করেছেন ওই মহিলা। মিমটি ছিল দশম পোপ লিও-র একটি পোট্রেট। যেটি ১৯৬৪ সাল নাগাদ এঁকেছিলেন ফার্নান্ডো বটেরো নামে জনৈক শিল্পী। মিমটির সেই ছবিতে ইংরেজিতে লেখা ছিল ‘y’ বর্ণটি, আর তার ঠিক পাশেই লেখা ছিল ‘tho’। এটি আসলে সংক্ষিপ্তক্ষরণ। ইংরেজিতে গোটা প্রশ্নটি হল ‘Why though?’ সাধারণত মজার ছলেই এটি ব্যবহার করা হয়। অনলাইনে কোনও আলোচনায় ভিত্তিহীন মন্তব্য হিসাবেই এর ব্যবহারের বহুল প্রচলন রয়েছে। অর্থাৎ মহিলা এইভাবে মেলের উত্তর দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানকে মজার ছলেই নিয়েছেন। এবং সেই প্রত্যাখ্যানের জবাব দেওয়া একরকম ভিত্তিহীনই, তা-ও দিচ্ছেন।
আরও শুনুন: পুলিশের ঘুম ছুটিয়েছিল কলকাতার প্রথম মহিলা সিরিয়াল কিলার
আর এই মিমই ঘটিয়ে ফেলল ম্যাজিক। এইরকম রসিক উত্তর মন কাড়ল সংস্থার কর্তাদের। ফলে চাকরি পাওয়ার হারানো সুযোগ ফিরে পেয়েছেন মহিলা। তাঁর সেই পোস্ট ইতিমধ্যেই দারুণ ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। নেটিজেনদের কমেন্টে ভরেছে সোশ্যাল মিডিয়া। কেউ বলেছেন, ‘অন্ধকার সময়ে এমন সাফল্যের গল্পই তো দরকার আমাদের’। কেউ আবার মহিলাকে দিয়ে ফেলেছেন ‘হিরো’র খেতাব। কেউ আবার তাঁকে ভূষিত করেছেন ‘কমেডি-র রানি’ হিসেবে। সব মিলিয়ে এক মিমে চাকরির সুযোগ থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল জনপ্রিয়তা, সবটাই এখন হাতের মুঠোয় সুইডিশ মহিলার।