হৃতিক রোশনের এক হাতে ছটি আঙুলের খবর তো গোটা দুনিয়া জানে। মানুষের শরীরের এমন ছোটখাটো ব্যতিক্রমের খবর আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু একজন মহিলার দেহেই দুটি যোনি রয়েছে, এমনটা শুনেছেন কখনও? শুনতে অবাক লাগলেও, দুই যোনি নিয়েই জীবন অতিবাহিত করছেন এক মহিলা। শুধু স্ত্রী-যৌনাঙ্গই নয়, দুটি জরায়ুও রয়েছে তাঁর শরীরে। দুই যোনি থাকার জেরে যৌনতার অভিজ্ঞতা ঠিক কেমন, সে কথাই তিনি ভাগ করে নিয়েছেন সম্প্রতি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
একটাই শরীর। অথচ যোনির সংখ্যা দু-দুটি। এমনকী একই সঙ্গে দুই ভিন্ন পুরুষের ঔরসে দুটি সন্তানের জন্মও দিতে পারেন তিনি। দুই যোনি ও জরায়ু নিয়ে এই মহিলা একরকম বিশ্বের বিস্ময়ই।
আরও শুনুন: ‘বিয়ের আগে যৌনতা ব্যক্তিগত বিষয়’, আলিয়াকে নিয়ে মশকরার আবহে সপাট দিয়া মির্জা
অবশ্য লুকোছাপা নয়, এ নিয়ে খোলাখুলিই কথা বলতে ভালোবাসেন আমেরিকার বাসিন্দা লিন বেল। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক, ঠিক কী কারণে নারীশরীরে এরকম বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এহেন শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সূচনা হয় মাতৃগর্ভেই। কিন্তু বাহ্যিকভাবে তার প্রকাশ ঘটে না। ফলে তাঁর শরীরে যে দুটি যোনি আছে, বেশ বড় বয়স পর্যন্ত সে কথা জানতেই পারেননি লিন। যদিও এর কারণে কিশোরী বয়স থেকেই বেশ সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। ঠিকঠাক বুঝতে না পারলেও তাঁর শারীরিক গঠন যে বাকিদের থেকে আলাদা, তা টের পেতেন লিন। বিশেষত ঋতুচক্রের সময় রীতিমতো বিপাকে পড়তেন তিনি। কেননা এক মাসে দুবার ঋতুচক্র হত তাঁর। তা ছাড়া, এই সময়ে মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করতে গিয়ে সমস্যা হত আরও বেশি। পরবর্তী কালে সমস্যা আরও বাড়ে যৌন সংসর্গের সময়। লিন বেল জানিয়েছেন, তাঁর পুরুষসঙ্গীর কাছে যৌনতার বিষয়টিও সবসময়েই যথেষ্ট যন্ত্রণার হত। কিন্তু সেই সমস্যা যে কেন হচ্ছে, সে কথা আদৌ জানতেন না ওই মহিলা। শেষমেশ যখন নিজের এহেন শারীরিক গঠনের কথা তিনি জানতে পারলেন, ততদিনে ২৮টি বছর পৃথিবীতে কাটিয়ে ফেলেছেন তিনি।
আরও শুনুন: আড়াই বছর ধরে টানা যৌন হেনস্তা করেন মায়ের বন্ধু! কিশোরীবেলার অভিজ্ঞতা জানালেন কুবরা সইত
বিজ্ঞানের পরিভাষায় এহেন শারীরিক গঠনকে বলা হয় ‘ইউটেরাস ডাইডেলফিস’। চিকিৎসকেরা বলেন, সাধারণত মাতৃগর্ভে কন্যাসন্তানের যৌনাঙ্গ বিকাশের সময় এমন অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে পারে। একইসঙ্গে দেহে তৈরি হয় দুটি যোনি। কিন্তু আপাতভাবে যা বাইরে থেকে দেখে বোঝাও যায় না। কারণ আসলে যোনির অভ্যন্তরে একটি বিভাজিকার মাধ্যমে দুটি আলাদা পথ তৈরি হয়। এই পথ দু’টি পৌঁছায় আলাদা আলাদা জরায়ুতে। বিরল এই অবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এখন তাঁর লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন ওই মহিলা। এই প্রসঙ্গে একটি ভিডিও-ও বানিয়ে ফেলেছেন তিনি, যা ইতিমধ্যেই নেটমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। শুধু নিজের অবস্থার কথা জানানোই নয়, বিষয়টি সম্পর্কে নেটাগরিকদের একাধিক প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন তিনি।
একই অবস্থার শিকার অস্ট্রেলিয়ার ইভিলিন মিলার নামের এক মহিলাও। তাঁর দেহেও রয়েছে দুটি যোনি ও জরায়ু। প্রথমবার নিজের প্রেগনেন্সি পরীক্ষা করাতে গিয়ে তিনি জানতে পারেন এমন বিরল অবস্থার কথা। হয়তো বিশ্বে আরও অনেকেই এরকম অবস্থার সম্মুখীন হয়েছেন। তবে সকলে সে-কথা বলতে চান। সেখানেই ব্যতিক্রম আমেরিকার লিন বেল। গোপনাঙ্গ হলেও, এই বিশেষ শারীরিক বৈশিষ্ট্যটি গোপন রেখে যে কোনও লাভ নেই, সে কথাই অন্যান্য মহিলাদের এখন বুঝিয়ে চলেছেন তিনি।