আমিষ ছাড়া মুখে রোচে না। কিন্তু পকেটে জোর না থাকলে, এই অভ্যাস বদলে নেওয়াই ভালো। এক লাফে ১২% দাম বাড়ছে আমিষ থালির। নেপথ্যে কারণও রয়েছে। ঠিক কেমন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ভোটের হাওয়ায় আমিষ-নিরামিষে দ্বন্দ্ব বেধেছে অহর্নিশ। তবে সেসব নেহাতই রাজনৈতিক তরজা। বাস্তবে, আপ রুচি খানা-তেই অনেকের বিশ্বাস। কিন্তু বাজারের অবস্থা তা হতে দিচ্ছে কই! লাফিয়ে বাড়ছে মাছ-মাংসের দাম। সামগ্রিক ভাবে সাধারণ থালির দাম বাড়ল ১২%। এদিকে নিরামিষে গ্রাফ একেবারেই নিম্নমুখী। বাড়ার বদলে ৩% কমেছে সাধারণ থালির দাম।
আরও শুনুন:
আমিষ-নিরামিষে দ্বন্দ্ব অহর্নিশ! বহু রূপে সম্মুখে ফিরছে জাতের ভাগাভাগিই?
কথায় আছে, মাছে ভাতে বাঙালি! অস্বীকারের উপায় নেই। বিবেকানন্দ থেকে রবীন্দ্রনাথ, মাছের ভক্ত ছিলেন সকলেই। তাই বলে একা বাঙালির ঘাড়ে আমিষপ্রেমের দায় চাপানো যায় না। লখনউ এর কাবাব থেকে হায়দরাবাদের বিরিয়ানি, কাশ্মীরের গুস্তাবা হোক বা বিহারের চম্পারন মটন, আমিষের বৈচিত্রে এরা সকলেই অনন্য। সুতরাং রোজকার ডাল-ভাতের সঙ্গে স্রেফ একটুকরো মাছ হলেই চলবে না সকলের। কারও কারও প্রয়োজন একবাটি মাংসও। বলা ভালো, সাধারণ আমিষ থালির ম্যেনুতে মূলত মাংসই রাখা হয়। আর এখানেই যত সমস্যা। মানে আমিষ থালির রাতারাতি মূল্যবৃদ্ধির দায় মূলত ওই একটি পদের, মুরগির মাংস। সাধারণ আমিষ থালির অর্ধেক দাম ধরা থাকে এই মাংসের উপর। এদিকে বিগত বছরে ব্রয়লারের দাম বেড়ছে অন্তত ২০ শতাংশ। তার প্রভাব পড়েছে আমিষ থালির দামে। আরও একটা কারণ ভোজ্য তেলের মূল্যবৃদ্ধি। আমিষ রান্না একটু কষিয়ে না করলে ঠিক জমে না, সেক্ষেত্রে তেলের দরকার হবেই। বিভিন্ন কারণে সেই ভোজ্য তেলের দামও বেড়েছে ১৬%। শুধু তাই নয়, পেঁয়াজ, রসুন, আদা সহ বিভিন্ন উপাদান যা আমিষ রান্নায় আবশ্যক সেই সবকিছুর দামই বেড়েছে। তাই জমিয়ে আমিষ খাওয়ার সাধা হলেও পকেট সাথ না দিলে সমস্যা।
আরও শুনুন:
যত দোষ আমিষে! অথচ মাছ-মাংস নয়, ভোটের হাওয়া ঘোরাল ডাল-সবজিও
যদিও, নিরামিষ থালির দাম ৩% কমেছে। তার নেপথ্যে টম্যাটোর দাম কমা। যে সবজি নিয়ে গত বছর মাথা ব্যথা ছিল গোটা দেশের, বছরের শেষেই তার দাম কমেছে। তাও একেবারে ২৪%। তার প্রভাবে দাম কমেছে নিরামিষ থালির। সাধারণত নিরামিষ থালির মেন্যুতে ভাত, রুটি, ডাল, সবজি আর স্যালাড থাকে। এদিকে আমিষ থালিতে ডালের বদলে যোগ হয় মাংস। তাই স্রেফ এই একটি পদের মূল্যবৃদ্ধি আমিষ-নিরামিষ থালির দামে এমন অসম ভাব গড়ে তুলছে। তবে এর থেকে একটাই প্রশ্ন উঠে আসে, এবার কি নিরামিষের দিকেই ঝোঁক বাড়বে আমিষ প্রেমীদের? ভোটের হাওয়ায় যে ইস্যুতে এত উত্তেজনা ছড়িয়েছিল, আগামী দিনে সেই দ্বন্দ্ব কি একেবারেই প্রাসঙ্গিকতা হারাবে, প্রশ্ন উঠছে ওয়াকিবহাল মহলে।