চাকরির শর্ত অনুযায়ী প্রতি তিন মাস অন্তর কিনতে হবে নতুন পোশাক। সেই ‘ইউনিফর্ম’ পরেই আসতে হবে কাজে। এহেন অদ্ভুত নিয়মের ঠেলায় প্রাণ ওষ্ঠাগত কর্মীদের, এমনটাই অভিযোগ করলেন সংস্থার এক মহিলা কর্মী। আসুন শুনে নেওয়া যাক।
চাকরি করতে গেলে অবশ্যই মেনে চলতে হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিয়ম। কিন্তু সেই নিয়মের গেরোয় যদি পকেট ফাঁকা হয় তাহলে আর কিছুই বলার থাকে না। তেমনই অভিযোগ এনেছেন এক সংস্থার কর্মচারী। তাঁর দাবি, সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি তিন মাস অন্তর তাঁকে কিনতে হয় নতুন ‘ইউনিফর্ম’। যার জন্য প্রতি বছর হাজার হাজার টাকা খরচ হয়ে যায় তাঁর। যেখান থেকে রোজগার হচ্ছে সেই সংস্থার জন্যই যদি অর্ধেক টাকা চলে যায় তাহলে তো মাথায় হাত পড়বেই।
আরও শুনুন: হিন্দু দেবদেবীদের অবমাননার অভিযোগ, মুনাওয়ার ফারুকির অনুষ্ঠান বাতিলের দাবি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের
আসলে এমনই নিয়ম রয়েছে এক নামকরা পোশাক বিপণিতে। নিত্য নতুন ডিজাইনের সম্ভার এলেই তা কেনার কথা বলা হয় দোকানের কর্মচারীদেরই। সেগুলিকেই ব্যবহার করতে হয় নতুন ইউনিফর্ম হিসেবে। তাতেই বেজায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন দোকানের এই মহিলা কর্মী। তাঁর দাবি, কর্তৃপক্ষ চান দোকানের কর্মীদেরই যেন মডেলের মতো দেখতে লাগে। তাই নিত্য নতুন পোশাক কেনার এমন নিয়ম। মহিলার দাবি, প্রয়োজন না থাকলেও কিনতে হয় নতুন পোশাক। তাও আবার নিজের পছন্দের যা খুশি পোশাক নয়। সংস্থার নির্দিষ্ট করে দেওয়া পোশাকেই সাজতে হবে তাঁকে। তিনি আরও বলেছেন, ওই ফ্যাশনদুরস্ত শোরুমে জামাকাপড়ের দাম যথেষ্ট বেশি। তবু বাধ্য হয়েই কিনতে হয় পোশাক।
আরও শুনুন: ‘চড় মারার বদলে আইনের প্যাঁচে মারুন’, পরোক্ষে দেশের বাকস্বাধীনতা নিয়ে কটাক্ষ বীর দাসের
আক্ষেপের সুরে মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে যথেষ্ট আর্থিক সমস্যা রয়েছে। পরিবার টানতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় তাঁকে। তাই এই জামাকাপড় কিনতে বাধ্য করা সত্যিই অনৈতিক। জামাকাপড় নষ্ট না হওয়া পর্যন্ত তিনি নতুন কিছু কেনেন না, সেখানে এভাবে প্রতি তিন মাস ছাড়া নতুন পোশাক কেনা যথেষ্ট বিলাসিতার ব্যাপার। যে সংস্থা তাঁকে মাসের শেষে বেতন দিচ্ছে তাঁদেরই জিনিস কিনে বিজ্ঞাপন করতে হচ্ছে তাঁকে। মালিকের ঘরেই যেন বেতনের বড় অংশ দিয়ে দিচ্ছেন তিনি, এমনটাই অভিযোগ মহিলার। যদিও সংস্থার কর্মী হিসেবে ৭০ শতাংশ ছাড় পান তিনি, তবু এই অতিরিক্ত টাকা খরচে যথেষ্ট বিরক্তই তিনি। নিজের এহেন দুঃখের কথা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় নেটিজেনরাও সহানুভূতি জানিয়েছেন তাঁকে। অনেকেই সেই সংস্থাকে দোষারোপ করেছেন এমন অদ্ভুত নিয়ম বানানোর জন্য। আবার অনেকের দাবি, কোম্পানির উচিত ইউনিফর্ম কেনার টাকা দিয়ে দেওয়া। পাশাপাশি কেউ কেউ তাঁর পুরনো জামাকাপড়গুলি দান করে দেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে নেটদুনিয়াতেও বেশ তোলপাড় ফেলে দিয়েছে এমন অদ্ভুত নিয়ম।