রাম মন্দিরে যাবেন রাম ভক্তরা। ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিমন্ত্রণ অভিযান শুরু করেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। আমন্ত্রণ পত্রের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ‘অক্ষত’ চাল। ঠিক কেন এই উপাচার ব্যবহার হচ্ছে রাম মন্দিরে ভক্তদের নিমন্ত্রণ জানাতে? হিন্দু পুজোয় এই অক্ষত চালের গুরুত্বই বা কী? আসুন শুনে নিই।
রাম মন্দিরের উদ্বোধন ঘিরে সাজো সাজো রব অয্যোধ্যায়। বাদ নেই দেশের অন্যান্য শহরও। গেরুয়া শিবিরের উদ্যোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যবস্থা করা হচ্ছে একাধিক কর্মসূচির। বিশেষ ট্রেনে রাম মন্দির নিয়ে যাওয়া হবে বিজেপি সমর্থকদের। তার আগে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিশেষ নিমন্ত্রণ সারছেন হিন্দু পরিষদের নেতারা।
আরও শুনুন: প্রেমিক ঠকিয়েছেন, আয়কর অফিসে ট্যাক্স ফাঁকির তথ্য ফাঁস করে বদলার প্রেমিকার
এক্ষেত্রে নিমন্ত্রণ পত্রের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে অক্ষত চাল। যা হিন্দু ধর্মে যে কোনও পুজোয় অতি প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে বিবেচ্য হয়। জানা গিয়েছে, গোটা দেশের প্রায় ৫ লক্ষ গ্রামে এই অক্ষত চাল বিলি করা হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক কেন এই অক্ষত চাল হিন্দু ধর্মে গুরুত্বপূর্ণ?
আরও শুনুন: সরযূর তীরে বসবে পঞ্চ ধাতুর উচ্চতম রাম মূর্তি, প্রস্তাবে সায় যোগী আদিত্যনাথের
আসলে, পুজোর উপাচার হিসেবে ব্যবহৃত এই চাল এক ধরনের নৈবেদ্য বলা যায়। তবে স্রেফ থালায় সাজিয়ে দেওয়ার জন্য নয়। এই চাল দিয়েই দেওয়া হয় অর্ঘ্য। ঘট স্থাপন কিংবা অন্য কোনও কাজেও অক্ষত চাল আবশ্যক। অনেক সময় চালের সঙ্গে সিঁদুর কিংবা হলুদ্গুঁড়ো মেশানো হয়। মূলত পঞ্চ দেবতার পুজোর ক্ষেত্রে এই চাল আবশ্যক। গণেশ, দুর্গা, শিব, বিষ্ণ এবং রামের পুজো অক্ষত চাল ছাড়া সম্ভব নয়। স্বস্তি উবাচ জাতীয় আচার পালনের ক্ষেত্রেও অক্ষত চাল ছিটানো হয়। যে প্রকারের উপাচারেই পুজো হোক, অর্থাৎ পঞ্চোপাচার বা ষড়শোপাচার, সব ক্ষেত্রেই অক্ষত চাল মূল উপাচার। আবার অন্য কিছু ঠিকমতো যোগাড় করতে না পারলেও এই অক্ষত চাল ব্যবহার করে পুজো করা সম্ভব। শাস্ত্রমতে অক্ষত চাল অখণ্ডতার প্রতীক। এই উপাচারেই যাবতীয় দৈব শক্তির সঞ্চার হতে পারে। অনেক সময় পুজোর শেষে মন্ত্রপুত চাল রেখে দেওয়ার কথা শোনা যায়। এ আসলে ওই অক্ষত চাল-ই যা দেবপুজোয় ব্যবহার করায় তার মধ্যে শুভ শক্তির সঞ্চার ঘটেছে। শাস্ত্রজ্ঞদের মতে, ভগবানকে নৈবেদ্য প্রদানের সময় অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে চাল যেন কোনওভাবেই ভাঙা না হয়। অল্প হলেও, যেটুকু ব্যবহার করা হবে তা যেন একদম সঠিক সম্পূর্ণ হয়। আবার আশীর্বাদি টীকা পরানোর সময়ও সিঁদুরের সঙ্গে অক্ষত চাল ব্যবহার করা হয়। সুতরাং একথা বলাই বাহুল্য অক্ষত চাল হিন্দু পুজোয় অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সেই হিসাবে রাম মন্দিরের পবিত্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে ব্যবহার করা হচ্ছে এই অক্ষত চাল।