আদতে পুতুল। রক্তমাংসের নারীও নয়। তবুও বিশ্ববিখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকায় জায়গা করে নিল বার্বি। তাও সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলাদের একজন হিসেবেই।
ইতিহাসে নজিরবিহীন। প্রথমবার বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলার তালিকায় দেখা গেল এমন একজনকে, যে আদতে কাল্পনিক চরিত্র। হ্যাঁ, ফোর্বস ম্যাগাজিন বরাবরই প্রভাবশালীদের যে তালিকা তৈরি করে, সেই বাছাই তালিকায় ঠাঁই মেলা মানেই মুকুটে নতুন পালক যোগ, সেখানেই এবার জায়গা পেয়ে গিয়েছে বার্বি। বলাই বাহুল্য, এমন ঘটনা যে কখনও ঘটতে পারে, সেটাই এতদিনে ভেবে উঠতে পারেননি কেউ। তার উপরে বার্বিকে নিয়েও বিতর্ক কম নেই। কেউ মনে করেন, এই পুতুল একরকম ভাবে নারীবাদের প্রতীক। আবার কেউ মনে করেন, ঘন চুল, নীল চোখ, মেদহীন শরীরী গঠন নিয়ে আসলে নারীকে এক ছকেই পুরে ফেলতে চায় এই বিশেষ ধরনের পুতুল। সাম্প্রতিক কালে গ্রেটা গারউইগের ‘বার্বি’ ছবির প্রেক্ষিতে আরও একবার উসকে উঠেছিল সেই বিতর্ক। কিন্তু বার্বির এই নতুন হাওয়াতেই দেখা গেল, টাইমসের পর এবার ফোর্বসের তালিকাতেও নাম তুলে ফেলল বার্বি।
আরও শুনুন: হোক না বৈবাহিক ধর্ষণ, অভিনয়ে আপত্তি কীসের! সমালোচনা উড়িয়ে সাফাই ববির
গ্রেটা গারউইগ তাঁর ‘বার্বি’ ছবির মাধ্যমে বার্তা দিয়েছিলেন, ‘‘বিকজ বার্বি ক্যান বি এনিথিং, উওমেন ক্যান বি এনিথিং।” ইচ্ছে করলে যে নারীরা যে কোনও অসাধ্য সাধন করতে পারে, এমনটাই বলতে চেয়েছিলেন তিনি। পরিপাটি গোলাপি বাক্স থেকে বেরিয়ে আগাগোড়া পিতৃতন্ত্রে মোড়া এক দুনিয়ায় পা রেখে কীভাবে তার সঙ্গে যুঝতে চাইছিল বার্বি, সে কথা তুলে ধরেছে এই সিনেমা। আর সেই কথা মাথায় রেখেই বার্বিকে আরও বেশি করে গুরুত্ব দিচ্ছে এই বিখ্যাত পত্রিকা। যে ক্ষমতা তার হাত থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সেই ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার জন্যই বার্বির লড়াই- এই বিষয়টিকে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করতে চাইছেন পত্রিকা গোষ্ঠী। তার পাশাপাশি যুদ্ধবিধ্বস্ত পৃথিবীতে বার্বির রঙিন দুনিয়া শান্তির বার্তা দিতে পারে বলেও মত তাঁদের। সর্বোপরি প্রায় ৬৫ বছর ধরে বার্বি যেভাবে বাজার ধরে রেখেছে, তার গুরুত্বও কম নয়। আর এই সব বিষয়গুলিকে মাথায় রেখেই সবচেয়ে প্রভাবশালী মহিলাদের অন্যতম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে বার্বিকে, এমনটাই দাবি ফোর্বস ম্যাগাজিনের।