পর্দায় দেখা যাচ্ছে উদ্দাম সঙ্গমের দৃশ্য। বিভিন্ন ভঙ্গিতে শরীরী খেলায় মেতে উঠেছেন নরনারীরা। আর সেই দৃশ্য থেকেই চোখ সরাতে পারেন না অনেকেই। কিন্তু পর্ন ছবি দেখা কি আসলে অপরাধ? কী বলছে দেশের আইন? শুনে নেওয়া যাক।
ফোনের পর্দা জুড়ে শরীরী ওলটপালট। দেখতে দেখতে শরীর জুড়ে শিরশিরানি। এ যেন এক নিষিদ্ধ জগতের হাতছানি। লোকে দেখে ফেললে বেজায় অস্বস্তি। কিন্তু না দেখেও থাকা যায় না। বলছি পর্ন ছবির কথা। প্রকাশ্যে তা নিয়ে যতই ফিসফিসানি চলুক, সরকার একের পর এক পর্ন সাইট নিষিদ্ধ করুক, তারপরেও পর্ন দেখায় কিন্তু কমতি নেই। এমনকি রাজনৈতিক অধিবেশনে বসে পর্ন দেখেছেন কোনও বিধায়ক, এমন অভিযোগও উঠেছে। আর এই সূত্রেই কথা ওঠে, পর্ন দেখা কি তাহলে অপরাধ? প্রকাশ্যে না দেখলেও, গোপনে পর্ন দেখেন তো অনেকেই। তাঁরাও কি তাহলে আইনের চোখে অপরাধী? সম্প্রতি এক মামলায় সে প্রশ্নের জবাব দিল কেরল হাই কোর্ট।
ঠিক কী জানিয়েছে আদালত?
আরও শুনুন: পছন্দের পর্ন অভিনেত্রীর সঙ্গে যখন খুশি যৌনতার সুযোগ, আর কী ম্যাজিক দেখাবে এআই!
জানা গিয়েছে, রাস্তার ধারে বসে মোবাইলে পর্নোগ্রাফি দেখার জন্য এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯২ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। এই ধারা অশ্লীল বই এবং বস্তুর বিক্রয়, বিতরণ এবং প্রদর্শনকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে। কিন্তু হাই কোর্টের সাফ বক্তব্য, পর্নোগ্রাফি গোপনে দেখলে তা অপরাধ নয়। তা তখনই অপরাধ, যখন তা প্রকাশ্যে প্রচার বা প্রদর্শন করা হবে। আদালত জানিয়েছে, অন্য কাউকে না দেখিয়ে কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে পর্নোগ্রাফি দেখেন, তাহলে ২৯২ ধারা অনুযায়ী তা অপরাধ নয়। এই প্রসঙ্গে যৌনতা এবং যৌন ছবি যে দীর্ঘদিন ধরে মানবসভ্যতার একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই ইতিহাসের কথাও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি পিভি কুন্নিকৃষ্ণণ। তিনি জানিয়েছেন, পর্ন দেখা একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত পছন্দ হতেই পারে। বরং তাতে হস্তক্ষেপ করা তাঁর গোপনীয়তায় অনুপ্রবেশ করার শামিল। আর এই যুক্তিতেই ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ সামাজিকভাবে যে ধারণাই থাকুক না কেন, কেউ নিজের মতো করে গোপনে পর্ন ছবি দেখলেও তা যে অপরাধের আওতায় পড়বে না, সে কথাই স্পষ্ট করে দিয়েছে কেরল হাই কোর্ট।