ফল বা মিষ্টি নয়, সরস্বতী পুজোর প্রসাদ পেন। মন্দির থেকেই তা বিতরণ করা হল ভক্তদের। হামলে পড়ে সকলে চেয়ে নিলেন সেই প্রসাদ। কোথায় ঘটেছে এমন কাণ্ড? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
সরস্বতী পুজো। বিদ্যার দেবীর আরাধনা। এদিন পড়াশোনার ছুটি। বই-খাতা-পেন-পেন্সিল সব ঠাকুরের সামনে। বিশ্বাস, ঠাকুরের কাছে রাখা পেন দিয়ে পরীক্ষা দিলে, ভালো ফল হবেই। সেই ধারণাতেই দক্ষিণের এক মন্দিরে সরস্বতী পুজোর প্রসাদ হিসেবে বিলি হল ১ লক্ষ পেন।
:আরও শুনুন:
‘হাতে তাগা বেঁধে স্কুলে কেন?’ ছিঁড়ে ফেলতে বাধ্য করলেন শিক্ষিকা, তারপর…
ঘটনা কর্নাটকের আইনাভিল্লি বিনায়ক মন্দিরের। সরস্বতী নয়, এখানে আরাধ্য গণেশ। সেখানেই নিষ্ঠাভরে পুজোর আয়োজন হয় বসন্ত পঞ্চমীতে। সেই অর্থে গণেশও জ্ঞানের দেবতা। তাই তাঁর আরাধনা করা যেতেই পারে। প্রতিবছর এই মন্দিরে এমনই নিয়ম পালিত হয়ে আসছে। উৎসব চলে টানা তিনদিন। ভিড়ও হয় রীতিমতো। তবে আকর্ষণ বলতে এই মন্দিরের বিশেষ প্রসাদ। ভক্তদের দেওয়া হয় একটি করে কলম। একইরকম দেখতে। মন্দিরের নাম লেখা তার উপর। প্রতিটি কলমই গণেশ বিগ্রহের সামনে পুজো করা হয়েছে। সংখ্যায় প্রায় ১ লক্ষ। সবকটিই বিলি করা হয়েছে ভক্তদের মধ্যে। অনেকেই মনে করেন, এই কলম সৌভাগ্যের প্রতীক। কেউ কেউ পড়াশোনার জায়গায় শুভ চিহ্ন হিসেবে রেখে দেন। কেউ আবার যত্ন করে ব্যবহার করেন। সম্প্রতি এই কলম পুজোর ভিডিও নেটদুনিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। আর সেখানেই ধর্মের সঙ্গে শিক্ষার জুড়ে যাওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন কেউ কেউ।
:আরও শুনুন:
যিনি সারদা, তিনিই সরস্বতী… শ্রীমাকে দেখিয়ে বলে গিয়েছিলেন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ
আসলে ধর্ম কখনও হিংসা বা হানাহানির কথা বলে না। অজ্ঞানতার কথাও কোনও ধর্মগ্রন্থে লেখা নেই। তাই সঠিক শিক্ষা পেতে গেলে ধর্ম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। নিজের হোক বা অন্যের, সব ধর্মকেই সম্মান দেখানো উচিৎ। একথাও বলা আছে সেই ধর্মের গ্রন্থেই। একসময় বেদ, উপনিষদ পাঠ্য হিসেবে দেখা হতো। এখনও হয় না বলা ভুল, তবে মূল সংস্কৃতে অধ্যয়নের চল কমেছে। প্রচলিত ভাষায় অঙ্ক-বিজ্ঞান-সাহিত্য-ইতিহাস চর্চা হয়। তবে এই সবকিছুর শিকড় যে বেদ বা প্রাচীন গ্রন্থে, সে কথাও জোর গলায় দাবি করেন অনেকে। সুতরাং শিক্ষা আর ধর্মের পথ যে আলাদা, তা বলা যায় না কোনওভাবেই। সেখানে মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে কলম বিলি অবাক করার মতো ঘটনা নয়।