রাস্তাঘাটে-বাজারে বেরোলেই এখন স্কুটির রমরমা। হরেক রঙের হরেক কিসিমের স্কুটি। আজকালকার মেয়েদের প্রিয় বাহন হয়ে উঠেছে এই যানটি। এককালে স্কুটার ছিল যুদ্ধ-যান, বিশ্বযুদ্ধের সময় একে দিয়ে করানো হত পিওনের কাজ। সেখান থেকে আসা স্কুটি এখন যেন নারী-স্বাধীনতার খোলা পোস্টকার্ড। শুনে নিন সেই গল্প।
‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির পিয়া ওরফে করিনা কাপুরকে মনে আছে তো? আর সেই বিখ্যাত স্কুটির দৃশ্য? ফ্রেম জুড়ে লাদাখের দুর্দান্ত ল্যান্ডস্কেপ। স্কুটি চালিয়ে কনের সাজেই ফুংসুক ওয়াংড়ু ওরফে আমির খানের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন পিয়া। আর বাকিটা… ইতিহাস।
‘রব নে বনা দি জোড়ি’ থেকে ‘দম লাগাকে হাইসা’, বিগ বি অভিনীত ‘তিন’ থেকে ‘জলি এলএলবি’- বলিউড-টলিউডের অজস্র ছবি জুড়েই আজকাল স্কুটির রমরমা। শুধু সিনেমা কেন, রাস্তাঘাটে বেরোলেও আজকাল প্রচুর স্কুটির দেখা মেলে। বাইক, মোটরসাইকেল ঘিরে ছেলেদের একচ্ছত্র আধিপত্য তো যুগে যুগে ছিলই। ব্যতিক্রম থাকলেও তা হাতে গোনা।
আরও শুনুন: প্লেন নয়, জাহাজ নয়, বাসে করেই পাড়ি কলকাতা থেকে লন্ডনে… সত্যিই কি ঘটেছিল এমন ঘটনা?
তবে স্কুটি কিন্তু কেড়ে নিয়েছে আজকের মেয়েদের মন। নানা কারণেই স্কুটিকে পছন্দের তালিকায় উপরে রাখছেন ক্রেতারা। একে তো, সহজ ও নিরাপদ। দ্বিতীয়ত, বহরে ছোট হওয়ার কারণে অলিগলি দিয়ে সহজেই যাতায়াত করা যায় এই গাড়িতে। ফলে ভারতীয় বাজারে ক্রমশ জনপ্রিয়তা বাড়ছে যানটির।
কিন্তু জানেন, কোথা থেকে এসেছে এই স্কুটি। এর পিছনের ইতিহাস?
আদতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ম্যাসেঞ্জার সার্ভিস হিসেবে কাজ করত এই বাহনটি। এক সেনা ছাউনি থেকে অন্য সেনা ছাউনিতে খবর আদানপ্রদানের জন্য এই স্কুটার নিয়েই ছুটে যাওয়া হত। কোনও কোনও স্কুটারে আবার লাগানো থাকত প্যারাশ্যুট, তেমনি ভাবেই বানানো হত সেটিকে। বায়ুসেনারা সেটিকে মাটিতে নামার সময় ব্যবহার করতেন।
আরও শুনুন: কেবল শান্তির দূত নয়, বিশ্বযুদ্ধে গুপ্তচরের কাজও করেছিল পায়রা
এই স্কুটিই দারুণ জনপ্রিয়তা পায় যুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপে। একের পর এক বোমা-হামলায় ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছিল সেখানকার রাস্তাঘাট। বিমানের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেক বিমানপ্রস্তুতকারক সংস্থাই সেসময় স্কুটার তৈরির দিকে ঝুঁকতে থাকে। যুদ্ধোত্তর ইতালিতে শুরু হয় ভেসপা স্কুটারের ব্যবহার। পিয়াগিও নামে একটি সংস্থা সেখানে এই স্কুটার তৈরি শুরু করে। ১৯৪৮-এর দিকে ‘বাজাজ’ অটো সংস্থার হাত ধরে বাইরে থেকে ভারতে এল সেই ভেসপা স্কুটার। সেসময় ভারতের বাজারে সাংঘাতিক প্রভাব ফেলেছিল এই স্কুটার। ১৯৫০-এর দশক থেকে দেশের মাটিতে স্কুটার তৈরি শুরু হল। কোমর বাঁধল একাধিক সংস্থা। তারপর থেকে এই যানে জনপ্রিয়তা আর কেউ ছুঁতে পারেনি। যাতায়াতের নিজস্ব একটি সহজ সুলভ উপায় খুঁজে পেয়েছিলেন যেন ভারতীয়রা।
বাকি অংশ শুনে নিন।