২০১৯ সালের শেষ দিকে পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছিল মারণ ভাইরাস নোভেল করোনা। এখনও পুরোপুরি থেমে যায়নি তার আস্ফালন। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় প্রহর গুনছি আমরা। জানেন কি, গত শতকেও পৃথিবীতে হানা দিয়েছিল এমনই এক মহামারি? কী উপায়ে রক্ষা পেয়েছিল মানুষ?
সময়টা গত শতকের মাঝামাঝি। সেবারও ঘটনাস্থল চিন। হংকং-এ এক নতুন ধরনের ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হল। না, ইনফ্লুয়েঞ্জা নতুন নয়, যেমন করোনা ভাইরাসও অচেনা ছিল না। কিন্তু কোনও চেনা ভাইরাসও যদি নতুন রূপে আক্রমণ শানায়, যে রূপ চিকিৎসকদের অচেনা, তাহলে সমস্যা আদৌ কমে না। অচেনা রোগ মানেই তার ওষুধ নেই। আবার বিজ্ঞানীদের কাছেও ভাইরাসের এই নতুন চেহারা পরিচিত নয়, ফলে তাকে মোকাবিলা করার উপযোগী ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার করতেও সময় লাগে। অর্থাৎ করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে যেমনটা আমরা দেখেছি, প্রায় সেরকমই ঘটনা ঘটেছিল আজ থেকে ৬০-৬৫ বছর আগেও। অবস্থা এতটাই ঘোরালো হয়ে এল যে ১৯৫৭ সালের ১৭ই এপ্রিল নিউ ইয়র্ক টাইম্স-এর শিরোনামে উঠে এল এই নতুন রোগের খবর। তখনও অবশ্য কোনও বিজ্ঞানী বা চিকিৎসক কেউই বুঝে উঠতে পারেননি অবস্থাটা ঠিক কতখানি ঘোরালো হয়ে উঠতে চলেছে।
আরও শুনুন: করোনার Vaccine সারাতে পারে Cancer, আশ্চর্য তথ্য নয়া গবেষণায়
ব্যতিক্রম একজন। তিনি মাইক্রোবায়োলজিস্ট, নাম মরিস হিলম্যান। তিনি এর মধ্যেই একটা আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন, যা তাঁকে এই রোগের স্বরূপ বুঝতে সাহায্য করেছিল। জিনের মিউটেশনের মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস যে নিজের রূপ পালটে ফেলে, এই বিষয়টা হিলম্যান ততদিনে আবিষ্কার করেছেন। তার দৌলতেই আমেরিকায় বসে তিনি যখন হংকং-এ ছড়িয়ে পড়া ওই অদ্ভুত অসুখের খবর পেলেন, এটুকু বুঝতে পারলেন যে এই ভাইরাসের আক্রমণ গড়াবে অনেক দূর পর্যন্ত। সুতরাং কীভাবে এই ভাইরাসকে রুখে দেওয়া যায়, তাই নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করলেন তিনি।
আরও শুনুন: অ্যালঝাইমার্স নিয়ে অবহেলা নয়, সকলকে সচেতন করলেন মীর… এই নিয়ে কী মত চিকিৎসকদের?
খবরের কাগজে রোগের খবর পাওয়ার পরের দিনই হিলম্যান সোজা দ্বারস্থ হলেন মার্কিন সেনাবাহিনীর। আবেদন করলেন ওই ঘাতক ভাইরাসটির নমুনা সংগ্রহ করার জন্য। প্রায় একমাস বাদে তাঁর হাতে এল সেই স্যাম্পল, হংকং-এ কর্মরত একজন অসুস্থ নৌসেনার গার্গল করা জল। এতদিনে আমরা জানি, ভ্যাকসিন তৈরি করার জন্য সবচেয়ে জরুরি উপাদান ওই ভাইরাসেরই স্যাম্পল। বোঝাই যাচ্ছে, সেটা হাতে এসে যাওয়ার ফলে হিলম্যানের প্রাথমিক কাজ হয়ে গিয়েছিল। সেই স্যাম্পল হাতে এবার তিনি পৌঁছলেন ফার্মাসিগুলোতে, যাতে ভ্যাকসিন তৈরির সুযোগ পান।
শুনে নিন বাকি অংশ।