না হয় বিয়ে। আর হলেও কিছুদিনের মধ্যেই বউ চলে যায় বাপের বাড়ি। নাটের গুরু আর কেউ নয়, খুদে মাছি। মাছির জ্বালাতেই অস্থির এই গ্রামের বিবাহিত এবং অবিবাহিত যুবকরা। কোথায় সে গ্রাম? আসুন শুনে নিই।
ছোট্ট মাছি যে সুখী দাম্পত্যের অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে, কে জানত! অথচ বাস্তবে হয়েছে ঠিক তাই-ই। মাছির জন্য বিয়ে হতে হতেও হয়নি। এদিকে বিয়ে হলেও রেগে বউরা চলে যাচ্ছেন বাপের বাড়ি। আর সব দেখেশুনে অবিবাহিতরা তো বেজায় চিন্তায়। উত্তরপ্রদেশের হরদোই জেলার অহিরোরি ব্লকের বেশ কয়েকটি গ্রামের পুরুষদের অবস্থা এখন এমনটাই।
আরও শুনুন: পোষ্যকে গাড়িতে রেখে দোকানে মালিক, অবাক করা কাণ্ড ঘটাল ‘চালক’ কুকুর
সম্প্রতি বাধিয়ান পুরা গ্রাম থেকে অন্তত ছয় জন স্ত্রী স্বামীর ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ এই মাছির উপদ্রব। এতটাই তিতিবিরক্ত তাঁরা যে, স্বামী অনুরোধ-উপরোধ করলেও তাঁরা আর ফিরতে নারাজ। এমনকী কেউ কেউ বলেছেন, যদি সম্পর্ক ভাঙে, তা-ও সই! কিন্তু তাঁরা আর ওই মাছির জ্বালা সহ্য করতে পারবেন না। আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামেরও অবস্থা এমনটাই। চতুর্দিকে মাছির উপদ্রবের কথা এতটাই ছড়িয়েছে যে, দূর দূরান্ত থেকেও চট করে কেউ বিয়ের সম্বন্ধ নিয়ে আসে না। আবার যদি বা আসে, তা-ও কোনও না কোনও ভাবে ভেস্তে যায়। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, একবার এক বিয়ের দেখাশোনায়, অতিথিদের মিষ্টি দেওয়া মাত্র এমন ভাবে মাছি ভনভনিয়ে এল যে, দেখেশুনে বিয়ে বাতিল করে দিয়ে চলে গেলেন তাঁরা। এমনকী বিয়ে চলাকালীনও মাছির উপদ্রবে বিয়ে ভেঙেছে বলে শোনা গিয়েছে।
আরও শুনুন: বছরখানেকেই ১ মিটার লম্বা, পোষ্য বিড়ালের বিশ্ব রেকর্ডের অপেক্ষায় মালকিন
সমস্যাটা অবশ্য সাধারণ নয়। জানা গিয়েছে, বছর কয়েক আগে চালু হয়েছিল একটি পোলট্রি ফার্ম। আর তারপরই গ্রামে বাড়তে থাকে মাছির সংখ্যা। শেষ তিন বছরে তা অসহ জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। হাজার হাজার মাছির জ্বালায় যে লোকের ঘর-সংসার অব্দি ভাঙছে, সে-কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন গ্রামপ্রধান। গ্রামবাসীরা এ প্রতিবাদও করেছেন। পুরুষদের সঙ্গে সঙ্গে মহিলারাও সরব হয়েছেন। কিন্তু তাতে অবশ্য পরিস্থিতি বদলায়নি। এ বছর সেই গ্রামে আর কোনও বিয়েই হয়নি। যদিও মাছি সংক্রান্ত অসুখ-বিসুখের খবর নেই। তবে মাছি যে এ গ্রামে একই সঙ্গে আপদ আর বিপদ হয়ে উঠেছে, সে কথা গ্রামবাসীরা হাড়ে হাড়েই জানেন।