সাম্প্রতিক কালে হিজাব বিতর্ক ঘিরে উত্তাল হয়েছে দেশ। কিন্তু জানেন কি, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তেই রয়েছে নির্দিষ্ট পোশাকবিধি? যা না মানলে দিতে হতে পারে জরিমানাও! আসুন, শুনে নেওয়া যাক সেইসব আশ্চর্য নিয়মের কথা।
কোথাও নিষিদ্ধ বোরখা, তো কোথাও আবার চটি পরা বারণ। আর কেবল মুখের কথাতেই বারণ নয়, এইসব নিয়ম না মানলে দিতে হতে পারে মোটা অঙ্কের জরিমানাও। আজ্ঞে হ্যাঁ, পোশাকের বিষয়ে এমনই সব বিধিবিধান চালু রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। শুনে নেওয়া যাক সেইসব পোশাকবিধির কথা, নইলে বেড়াতে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন আপনিও।
আরও শুনুন: স্ত্রীর জন্মদিন ভুলে গেলেই হতে পারে হাজতবাস! কোথায় এমন নিয়ম রয়েছে জানেন?
কিছুদিন আগেই হিজাব বিতর্কে উত্তাল হয়েছিল দেশ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা যাবে না, এই মর্মেই রায় জারি করেছিল কর্ণাটক হাই কোর্ট। সেই রায়ের প্রেক্ষিতে ভিন্ন মতও শোনা গিয়েছে অবশ্য। কিন্তু জানেন কি, পৃথিবীতে এমন দেশও রয়েছে, যেখানে বোরখা পরা আইনত নিষিদ্ধ? হ্যাঁ, এমনই নিয়ম চালু রয়েছে ফ্রান্সে। আসলে মুখ ঢাকা কোনও পোশাকই ফ্রান্সের রাস্তায় পরার নিয়ম নেই। নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখেই এহেন নিয়ম জারি করেছে সে দেশের প্রশাসন। তাই ফ্রান্সের রাস্তায় কোনও মহিলা বোরখা পরে হাঁটতে পারবেন না। এমনকি খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী মহিলারা বিয়ের সময় যে হালকা ওড়না দিয়ে মুখ ঢাকেন, তেমনটাও নিষিদ্ধ এই দেশে। মুখ ঢাকার উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে সুইটজারল্যান্ডেও। এমনকি কেউ বোরখাজাতীয় কোনও মুখ ঢাকা পোশাক পরলে তাকে জরিমানা করা হবে, চলতি বছরেই এমন প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পার্লামেন্টে। ওই বিল পাশ হলে জরিমানার পরিমাণ দাঁড়াবে ১০০০ সুইস ফ্রাঁ, অর্থাৎ ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮২ হাজার টাকা।
আরও শুনুন: পর্ন দেখলেই জরিমানা নয় হাজতবাস! ফোনে আপনার কাছেও কি এসেছে হুমকি?
আবার এর উলটো নিয়মও আছে কোথাও কোথাও। বোরখা নয়, সেখানে নিষেধের মুখে পড়েছে বিকিনির মতো খোলামেলা পোশাক। ইদানীং ছুটি পেলেই মলদ্বীপের সৈকতে আগুন জ্বালান বলি-টলির বিকিনি পরিহিতা অভিনেত্রীরা। কিন্তু সেখানেও সব জায়গায় বিকিনি পরার অনুমতি নেই মোটেও। প্রাইভেট রিসর্টের নিজস্ব বিচ এবং কয়েকটি সৈকতেই রয়েছে বিকিনি পরার সুযোগ। একই নিয়ম জারি ক্রোয়েশিয়ার হাভারেও। আবার স্পেনের বার্সেলোনা এবং ম্যালোর্কাতে শুধুমাত্র সমুদ্রসৈকত এবং সেই সংলগ্ন রাস্তাতেই বিকিনি পরার অনুমতি রয়েছে। অন্যত্র কোথাও বিকিনি পরলে রীতিমতো শাস্তি হতে পারে।
আপত্তি রয়েছে চটিতেও। স্পেনে চটি পরে গাড়ি চালালে দিতে হয় মোটা অঙ্কের জরিমানা। আবার গ্রিসের ঐতিহাসিক স্থানগুলিতে উলটো নিয়ম। সেখানে হাই হিল পরার উপরে জারি কড়া নিষেধ। প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলির যাতে ক্ষতি না হয়, সেজন্যই নাকি রয়েছে এমন নিয়ম।
কুয়েতের আইন মোতাবেক, বিপরীত লিঙ্গের মতো সাজপোশাক করাটাই বেআইনি। ২০০৯ সালে ক্রস ড্রেসিং-এর অপরাধে ৬৭ জন পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছিল সুদানের প্রশাসন। উত্তর কোরিয়াতে আবার কোনও মহিলার ট্রাউজার পরার অনুমতি নেই। কিম জং উনের রাজত্বে বেঁধে দেওয়া হয়েছে মেয়েদের স্কার্টের দৈর্ঘ্যও। মিনিস্কার্ট পরা নিষিদ্ধ উগান্ডাতেও। যে কোনওরকম খোলামেলা পোশাকের উপরেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এই দেশটি। যুক্তি থাক বা নাই থাক, এই দেশগুলিতে বেড়াতে গেলে এইসব নিয়মকানুন মেনে চলা ছাড়া কিন্তু উপায় নেই।