দিনে টানা ২২ ঘণ্টা ঘুমোতে পারেন তিনি। ঘুমের এমন ঝোঁক যে চোখের পাতা খুলে রাখাই দায়। এমনকী টানা ৪ দিনও ঘুমিয়ে থেকেছেন তিনি। ভাবছেন তো, এরকম কেউ কি আদৌ থাকতে পারেন? উত্তরটা হল, নিশ্চয়ই পারেন। আসুন তাঁর এই অবিশ্বাস্য ঘুমের গল্প আমরা শুনে নিই।
ঘুম না আসার অসুখে ভোগেন অনেকেই। কিন্তু যে মহিলার কথা আমরা বলছি, তাঁর ক্ষেত্রে ঘুম আসাটাই অসুখ। এমন সে অসুখ যে তিনি দিনে প্রায় জেগেই থাকেন না। ২২ ঘণ্টাও ঘুমিয়ে থাকতে পারেন। বছর আটত্রিশের জোয়ানা কোকসের এই ঘুমের গল্প ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে।
আরও শুনুন: খাবারের ব্যাগে ভরা আস্ত মমি, ধরা পড়তেই মমিকে প্রেমিকা বলে দাবি যুবকের
তবে ঘুম আসা যে আদতে অসুখ, তা তিনি গোড়ায় বুঝতে পারেননি। সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগত তাঁর। ঘুমে দু-চোখের পাতা এক হয়ে যেত। সেটা ২০১৭ সাল। প্রথম যখন এরকম লক্ষণ দেখা যায় তিনি বুঝতেই পারেননি যে, হচ্ছেটা কী! অনেকে বলেছিলেন যে, তিনি ক্রনিক ডিপ্রেশনের শিকার। তাই এরকম অবস্থা। সেইমতো তিনি চিকিৎসাও শুরু করেন। কিন্তু অবসাদের কোনও চিহ্ন দেখা যায়নি। ফলত চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করেন যে, অবসাদে তিনি ভুগছেন না। তাহলে? কোনও কারণই খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। এদিকে ঘুমের বহর বেড়েই চলেছিল। কোনওরকম কাজ তিনি করতে পারেন না। গাড়ি চালানো তো অসম্ভব। খাওয়া-দাওয়াই ঠিকঠাক করে হয় না। হাতে-গরম তৈরি খাবার থাকলে ভালো, নইলে খাবার গরম করতে করতেই হয়তো তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। আর একবার ঘুমিয়ে পড়লে তাঁকে জাগানো মুশকিল। যদি তিনি নিজে জেগে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে হ্যালুসিনেশন হতে থাকে। অসংখ্য মাকড়সাকে চোখের সামনে বেয়ে যেতে দেখেন তিনি। সব মিলিয়ে বেজায় মুশকিলে। বছর দুয়েক পরে এক চিকিৎসক তাঁকে জানান যে, এই ঘুম আসলে এক ধরনের স্লিপ ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ ঘুম সংক্রান্ত একটি বিশেষ অসুখ। গত ৬ বছরে তিনি একবারই ১২ ঘণ্টার মতো জেগে থাকতে পেরেছিলেন। সেটিই সর্বোচ্চ। টানা চারদিন ঘুমিয়ে থাকারও রেকর্ড আছে তাঁর। আপাতত চিকিৎসা চলছে, তবে খুব যে উন্নতি হয়েছে তা নয়। আর তাই ঘুম কাটানোর জন্য এখন একজন ভালো ডাক্তারবাবুরই সন্ধান করছেন এই মহিলা।