অনলাইন জালিয়াতির ঠেলায় মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। তবে এবার মানুষ নয়, জালিয়াতির শিকার নাকি খোদ ই-কমার্স সংস্থাই। ব্যাপারটা ঠিক কী? আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
মাঝে মাঝেই ই-কমার্স অ্যাপে ঢুকে পড়ে পোশাকআশাক কিনে ফেলি আমরা অনেকে। তবে অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে যে জালিয়াতির চোখরাঙানি এখন বহাল তবিয়তে জেগে আছে, সে কথাও এখন আমাদের জানা। তা নিয়ে অল্পবিস্তর সতর্কও থাকেন ক্রেতারা। কিন্তু খোদ ই-কমার্স সংস্থারও যে এবার সতর্ক হওয়ার পালা এসেছে, তা কে জানত! দেখা যাচ্ছে, এবার ক্রেতা নন, আস্ত ই-কমার্স সংস্থাই জালিয়াতির শিকার। আর সে জালিয়াতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা!
এমনিতে অনলাইনে পোশাক কিনে থাকি আমরা সকলেই। ব্যস্ত সময়ে দোকান বাজারে যাওয়ার সময় বের করাই তো এক বড় ঝক্কি। যদিও এখন পথের মোড়ে মোড়ে হাতছানি দিচ্ছে চোখধাঁধানো শপিং মল, কিন্তু কাজকর্মের চক্করে সবসময় তো আর তার দরজা ঠেলে অন্দরমহলে পা রাখা হয় না। ই-কমার্স সংস্থাগুলিই সেখানে বড় ভরসা। কোনও একটিমাত্র বিপণি নয়, এক ছাদের তলায় হাজির যাবতীয় ছোট-বড় বিপণি, তারই সঙ্গে আবার নানারকম সেলের ইশারা, পছন্দের জিনিসটি জমিয়ে রেখে পরে কেনার সুযোগ- সব মিলিয়ে অনলাইন কেনাকাটা এখন অনেকেরই নয়নের মণি। কিন্তু সেই অনলাইন কেনাকাটার শখকে হাতিয়ার করেই যে ইদানীং কালে অস্ত্র শানাচ্ছে প্রতারকেরা, সে কোথাও বলাই বাহুল্য। সাম্প্রতিক কালে একাধিক বার এমন নানা জালিয়াতির খবর সামনে এসেছে। কোনও কিছু কিনতে গিয়ে এই জালিয়াতদের পাল্লায় পড়ে ভুল পেমেন্ট গেটওয়েতে ঢুকে পড়েছেন কেউ, আর নির্ধারিত সংস্থার বদলে টাকা চলে গিয়েছে জালিয়াতের কাছেই- এমনটা শোনা যাচ্ছে মাঝে মাঝে। তবে এবারে গল্পটা খানিক অন্য। লেনদেনে নয়, জালিয়াতি ঘটেছে অর্ডার দেওয়ার ক্ষেত্রেই। আর তার জেরেই ৫০ কোটি টাকার বিপুল লোকসানের মুখোমুখি নামী ই-কমার্স সংস্থা মিন্ত্রা।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরু পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে সংস্থাটি। জানা যাচ্ছে, বিভিন্ন জিনিস মিলিয়ে মোট ৫০ কোটি টাকার অর্ডার দেওয়া হয়েছিল এই ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে। ব্র্যান্ডেড জামা, জুতো, গয়না, অ্যাকসেসরিজ- কী নেই তার মধ্যে! তার মধ্যে ৫৫২৯টি অর্ডারের ঠিকানা বেঙ্গালুরু। এবার জিনিসগুলিতে কোনও সমস্যা রয়েছে, বা কোনও অংশ খোয়া গিয়েছে, এমন অভিযোগ তুলে রিফান্ড চাওয়া হয়েছে সংস্থার কাছে। নিজেদের নীতি মেনে সংস্থাও টাকা ফেরত দিতে থাকে। এই অর্ডার এবং রিফান্ডের মধ্যে গোলমাল তৈরি করেই জালিয়াতি করা হয়েছে, যা প্রকাশ্যে এসেছে পরবর্তী অডিটের সময়। রাজস্থানের কোনও একটি জালিয়াত গ্যাং-ই এই পুরো ঘটনার মাস্টারমাইন্ড, এমনই সন্দেহ করছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। তবে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না শেষমেশ, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েই যাচ্ছে।