কোনও সরকারি নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করেননি তাঁরা। বদলে গুরুত্ব দিয়েছেন নিজেদের অন্তরের তাগিদকেই। আর সেই তাগিদ থেকেই চার বছর ধরে প্রতিদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আসছে এই গ্রাম। দেশপ্রেমের এমন অভিনব নজির দেখে মুগ্ধ সকলেই। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
স্বাধীনতা দিবসের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশের প্রতিটি বাড়ি এবং প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র। ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ নামের এই প্রকল্পে শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক দেশবাসীই। কিন্তু কোনোরকম সরকারি নির্দেশে নয়, নিজেদের উদ্যোগেই প্রতিদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আসছে এই গ্রাম। তাও এক-দুদিন নয়, টানা চার বছর ধরেই এই কাজ করছেন গ্রামবাসীরা। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন তামিলনাড়ুর প্রত্যন্ত অঞ্চলে থাকা সিরুথামুর গ্রামের বাসিন্দারা।
আরও শুনুন: হর ডিশ তিরঙ্গা… স্বাধীনতার উদযাপনে সমস্ত খাবারই জাতীয় পতাকার রঙে সাজাল রেস্তরাঁ
২০১৭ সাল থেকে এই কাজ শুরু করেছেন ওই গ্রামবাসীরা। তার আগে অবশ্য গ্রামে জাতীয় পতাকা তোলা হত না এমনটা নয়। তবে প্রজাতন্ত্র দিবস ও স্বাধীনতা দিবস, এই দুটি বিশেষ জাতীয়তাবাদী দিনেই পতাকা উত্তোলন করতেন তাঁরা। কিন্তু ২০১৭ সালে থেকে রোজই সকালে জাতীয় পতাকা তোলার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। জাতীয় সংহতি প্রকাশ করার জন্যই তাঁরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। আরও বড় কথা হল, রোজকার জীবনেও এই সংহতির পরিচয় দিয়ে চলেছেন তাঁরা। সেই কারণেই যে কেউ পতাকা তুলতে পারেন সেখানে। গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান বা কোনও বিশেষ ব্যক্তিকেই যে পতাকা উত্তোলনের দায়িত্ব দিতে হবে, এমন কোনও শ্রেণিবৈষম্য সেখানে জারি করা হয়নি। কেবল প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটার সময়ে পতাকা তোলার নিয়মটিই রীতিমতো নিষ্ঠাভরে মেনে চলেন গ্রামবাসীরা। ঝড়জল প্রাকৃতিক দুর্যোগ যাই আসুক না কেন, এই নিয়মের ব্যত্যয় হয় না। পতাকা তোলার পর, জাতীয় সংগীত গেয়ে, স্যালুট করে দিনের কাজকর্ম শুরু করেন গ্রামবাসীরা।
আরও শুনুন: দেশপ্রেমের বার্তা দিতে অভিনব উদ্যোগ, চোখের মধ্যে জাতীয় পতাকা আঁকলেন ব্যক্তি
সব মিলিয়ে শ-তিনেক পরিবারের বাস এই গ্রামে। সকলেরই পেশা কৃষিকাজ। পুথিগত শিক্ষা কারোরই হয়তো খুব বেশি নেই। কিন্তু ব্যক্তিগত ভালবাসাই হোক কি দেশের প্রতি প্রেম, তা তো একান্তই অন্তরের আবেগ। তাই কোনও চাপিয়ে দেওয়া নিয়ম নয়, নিজেদের আন্তরিক চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়েই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আসছেন এই গ্রামবাসীরা।