ছবি আঁকার কতই না ধরনধারণ! পেনসিল স্কেচ, প্যাস্টেল, জলরং, তেলরং, গ্লাস পেন্টিং, তালিকাটা বিরাট লম্বা। কিন্তু চুল দিয়ে ছবি আঁকা? এমনটা কখনও শুনেছেন? তবে শুনে নিন এই আঁকিয়ে ব্যক্তিটির কথা।
ছবি আঁকার উপাদান নাকি মানুষের মাথার চুল! সাদা পাতার উপর চুলের সজ্জাই তৈরি করে দিচ্ছে একেকটি মুখের অবয়ব। স্পষ্ট চিনে নেওয়া যায়, সে মুখ কোনও না কোনও তারকার। এমন তাক লাগানো কাজই করে ফেলেছেন এই ব্যক্তি। ছবি আঁকার জন্য পেনসিল কিংবা রঙের বাটির প্রয়োজন পড়ে না তাঁর। লাগে কেবল মানুষের মাথার বেশ খানিকটা চুল। আর তাই দিয়েই সাদা পাতার উপরে বিখ্যাত গায়ক কিংবা অভিনেতাদের মুখ ফুটিয়ে তোলেন তিনি। রীতিমতো চমকে দেয় সেই নিখুঁত পোর্ট্রেটগুলি।
আরও শুনুন: বরফ-সাদা হিমবাহের বুক চিরে নেমে আসে রক্তের ধারা! অবাক করবে আন্টার্কটিকার এই ‘রক্তাক্ত ঝরনা’
এই শখ পূরণের জন্য ম্যানিলায় একটা আস্ত সেলুনের অর্ধেক মালিকানা নিয়ে ফেলেছেন এই ব্যক্তি, জেসটোনি গার্সিয়া। যে কোনও সেলুনেই দেখা যায় কাটা চুলের রাশি। দিনের শেষে সেগুলো ঝাঁট দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়, কিংবা কোনও ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই সেলুনটি ব্যতিক্রম। এখানে কাটা পড়া চুল হয়ে ওঠে শিল্পের উপাদান। গার্সিয়ার আঁকার জন্য কাঁচামালের জোগান আসে এই সেলুন থেকেই।
কিন্তু কেন এমন অভিনব উপায়ে ছবি আঁকেন তিনি?
আরও শুনুন: প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নাকি পঞ্চপাণ্ডব, দিনের অধিকাংশ সময়েই সমুদ্রে অদৃশ্য থাকে এই শিবমন্দির
আসলে ওই ব্যক্তির পেশাই তাঁকে বাধ্য করেছিল এমন উপায় খুঁজে নিতে। ৩২ বছর বয়সি গার্সিয়া পেশায় নাবিক। বছরে ৮ মাস জলেই কাটে তাঁর। সবসময় হাতের কাছে পেনসিল কিংবা রং পাওয়া সম্ভব হয় না। এইরকম এক পরিস্থিতিতে নিজের মাথার চুল কেটে ছবি তৈরি করতে শুরু করেছিলেন গার্সিয়া। সেটা ২০২১ সাল। প্রথমে নিজের একটি আত্মপ্রতিকৃতি দিয়েই কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। পরে তারকাদের মুখও তুলিতে ধরতে শুরু করেন। হ্যাঁ, এই ধরনের আঁকার জন্য তুলিই তাঁর একমাত্র হাতিয়ার। সরু তুলিতে আঠালো রেজিন লাগিয়ে তা দিয়েই ক্যানভাসে চুল সাজান তিনি। একেকটি ছবি শেষ করতে সময় লাগে দুই থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত। তবে এত ধৈর্য আর এত সময়ের বিনিময়ে যে ছবি তৈরি হয়, তা সত্যিই তাক লাগিয়ে দেওয়ার মতো। এইভাবেই তিনি নিজের অবসাদ, হতাশা, বিষণ্ণতার মোকাবিলা করেন, বলে জানিয়েছেন জেসটোনি গার্সিয়া।