পুলিশের সঙ্গে কোনও প্রাণীর সম্পর্ক থাকলে তা অবশ্যই কুকুরের। পাহারা দেওয়া হোক, বা গন্ধ শুঁকে অপরাধী শনাক্তকরণ, সবতেই এদের জুড়ি মেলা ভার। কিছু ক্ষেত্রে ঘোড়ার পীঠে চড়তেও দেখা যায় পুলিশদের। কিন্তু পুলিশের কাজে সাহায্য করছে রাজহাঁস এমনটা কখনও শুনেছেন? তাও আবার জেল পাহারা দেওয়ার মতো কাজের ক্ষেত্রে? আসুন শুনে নিই।
জেল মানেই কড়া নিরাপত্তা। চারিদিকে উঁচু পাঁচিল। তার বাইরে নিশ্ছিদ্র প্রহরী। ইলেকট্রিক তার, গভীর পরিখা, সবই থাকতে পারে জেলের বাইরে। সেইসঙ্গে পুলিশ কিংবা হিংস্র জন্তুর পাহারা। সাধারণত বিশেষ প্রজাতির কুকুরই এই কাজে নিযুক্ত থাকতে দেখা যায়। ব্যতিক্রম ব্রাজিলের এক জেল। সেখানে কুকুরের বদলে জেল পাহারা দেয় রাজহাঁস।
আরও শুনুন: নিখোঁজ স্ত্রী-র চতুর্থ বিয়ের ছবি দেখে মাথায় হাত তৃতীয় স্বামীর…ব্যাপারটা কী?
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। ব্রাজিলের সাও পেদ্রো দে অ্যালকান্তারা জেলের বাইরে অদ্ভুত এক ছবি ধরা পড়বে। চারিদিকে উঁচু পাঁচিলওয়ালা সেই জেলের বাইরে লাইন দিয়ে চড়ছে একপাল হাঁস। আর তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে বড়সড় মাপের এক রাজহাঁস। কিছুক্ষণ অন্তর বেশ গলা ছেড়ে ডাকও দিচ্ছে সেই হাঁস। সবমিলিয়ে ব্রাজিলের ওই জেলের বাইরের ছবি দেখে এতটুকু বোঝার উপায় নেই কোথায় এসেছেন। অন্তত জেল-এর বাইরে রাজহাঁসের পাহারা আর কোথাও দেখা যায় না বললেই চলে। দক্ষিণ ব্রাজিলের সান্টা ক্যাটারিনা প্রদেশে রয়েছে সাও পেদ্রো দে অ্যালকান্তারা জেল। জায়গাটি এমনিতে বেশ নির্জন। কতৃপক্ষের দাবি সেই কারণেই এখানে পাহারার কাজে নিয়োগ করা হয়েছে হাঁস।
কিন্তু জেলের পাহারা দেওয়ার ক্ষেত্রে হিংস্র কোনও পশু না থাকলে আদৌ কোনও কাজের কাজ হবে?
আরও শুনুন: ৫০ টাকায় ১২ টুকরো মাছের আবদার বুড়িমার! সাধারণ মেয়েই যেন সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণা
জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, শুধু হবেই না, বরং আরও ভালোভাবে হবে। কারণ এর আগে এই জেল পাহারার দায়িত্ব সামলাতো কুকুরই। একদল প্রশিক্ষিত কুকুর সবসময় জেলের বাইরে পাহারায় থাকতো। তাদের সরিয়েই বর্তমানে আনা হয়েছে রাজহাঁস। আর এতেই নাকি পাহারার মাত্রা আরও বেড়েছে। জেল কর্তৃপক্ষ এমনটাও দাবি করেছেন, পাহারার কাজে কুকুরের থেকেও হাঁস বেশি তৎপর। তাই এদের দিয়ে পাহারা দেওয়ানো আসলে অনেকটা নিশ্চিন্তের। শুধু তাই নয়, রাজহাঁসকে পাহারার কাজে রাখার আরও কয়েকটা কারণ রয়েছে। প্রথমেই বলতে হয় এদের গলার ডাক নিয়ে। অন্যান্য পশুপাখির তুলনায় এদের গলার স্বর অনেকটাই জোরালো। যা সহজেই কাউকে জাগিয়ে দিতে পারে। এছাড়া রাজহাঁসের অদ্ভুত এক অভ্যাস রয়েছে, এরা একবার কারও পিছু নিলে সহজে ছাড়ে না। তার থেকো বড় ব্যাপার, এদের পরিচর্যার খরচ অনেকটা কম। অন্তত কুকুরের তুলনায় তো বটেই। তবে এই জেল হিসবে প্রথম হলেও, পাহারার কাজে রাজহাঁসের ব্যবহার বেশ প্রাচীনকাল থেকেই চলে আসছে বলা যায়। ব্রাজিলের জেলে নেতৃত্বের জায়গা সামলানো রাজহাঁসটির নাম পিউ-পিউ। যে কোনও সময় ডাকলেই বেশ জোরালো ভাবে সে সাড়া দেয় বলেই দাবি পুলিশ আধিকারিকদের। তাই পিউ-পিউ পাহারায় থাকলে সকলে বেশ নিশ্চিন্ত থাকেন। এখনও পর্যন্ত তাদের কাজে কোথাও কোনও গলদ ধরা পড়েনি। বরং প্রথম থেকেই কুকুরের চেয়েও বেশ ভাল কাজ করছে এই পিউ-পিউ এবং তার সঙ্গী সাথীরা।