কারও চওড়া, কারও চুলে ঢাকা, কারও আবার চামড়ায় অজস্র দাগ। স্রেফ কপাল দেখে মানুষ চেনা না গেলেও, কপাল অনেক কিছু চেনাতে পারে। বিশেষ করে কারও ব্যক্তিত্ব বুঝতে কপালের ভূমিকা রয়েছে ঢের। বিষয়টা ঠিক কেমন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মানুষ চেনা বড় দায়! কিছুদিন ঠিকমতো না মিশলে বোঝা যায় না। মিশলেও যে সবটা বোঝা যাবে, এমন নয়। তবে কেউ কেউ পারেন। একবার দেখলেই বুঝে ফেলেন, সামনের মানুষটি কেমন। এঁরা নাকি মুখ পড়তে জানেন। এমনটা আদৌ সম্ভব?
একেবারে সম্ভব নয় বললে ভুল হয়। বিজ্ঞান মেনেই এমনটা করা যেতে পারে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, কারও চোখ, নাক, ঠোঁটের অবস্থান দেখে বোঝা যায় তার ব্যক্তিত্ব। সবথেকে বেশি মানুষ চেনা যায় কপাল দেখে। এমনিতেই কপালের সঙ্গে ভাগ্যের একটা যোগ খুঁজে ফেরেন অনেকে। কোনও অভীষ্ট সিদ্ধ না হলেই, সেই দোষ চাপে কপালে উপর। আবার দারুণ কিছু প্রাপ্তি হলে বলা হয়, কপালে ছিল তাই হয়েছে। বাস্তবে এই কপালের জোর কতটা সত্যি, সেই নিয়ে তর্ক হতেই পারে। তবে কপাল দেখে যে মানুষের ব্যক্তিত্ব বোঝা যায়, এতে দ্বিমত নেই। সবার আগে চওড়া কপাল। অর্থাৎ চোখের উপর থেকে বেশ খানিকটা অংশ ছেড়ে চুল শুরু হয়েছে। এই ধরনের মানুষেরা অত্যন্ত পরিশ্রমী, মেধাবী, এবং গোছানো স্বভাবের হন। জীবনে কী করতে হবে তা আগে থেকেই স্থির করে নেন এঁরা। তার জন্য সবকিছু করতে রাজি। বন্ধুবান্ধব না পেলেও এঁদের দিব্য চলে যায়। নিজেদের সঙ্গ উপভোগ করেন এই ধরনের মানুষজন। তবে খারা দিকও রয়েছে। আর সেটা হল, এঁদের রাগ। একটু এদিক ওদিক হলেই মেজাজ সপ্তমে চড়ে যায়। সামনে যে থাকবে তাকেই সহ্য করতে হবে রাগের আঁচ। অনেকসময় তা মাত্রা ছাড়ালে বিপদে পড়েন খোদ ব্যক্তিই। পরে সেসবের দাম চোকাতে হয়। এছাড়া মনের দিক থেকেও এঁরা বেশ শক্ত হন। দুঃখ পেলেও বাইরে কাউকে তা বুঝতে দেন না। এরপর ঠিক উলটোটা। অর্থাৎ যাঁদের কপাল তেমন চওড়া নয়। এঁদের স্বভাব চরিত্রও পুরো আলাদা। এঁরা বেজায় আবেগপ্রবণ। অল্পেতেই ভেঙে পড়েন। দুঃখ চেপে রাখতে পারেন না। কাউকে ভালোবাসলে নিজের সবটা উজাড় করে দেন এঁরা। তবে হ্যাঁ, নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পছন্দ করেন এঁরা। সেখানে কেউ নাক গলাতে এলে চটে যান। তাতে সমস্যাও হয় অনেকসময়।
এছাড়াও আরও অনেক ধরনের কপাল হয়। যেমন একটু বাঁকা কপাল। কেশরেখা বা হেয়ারলাইনের হিসাবে এই সোজা বাঁকা হিসাব করা হয়। সেক্ষেত্রে যাঁদের চুলের রেখা একেবারে সোজা লাইনে নেই তাঁরা মনের দিক থেকে খুব খোলামেলা হন। সবসময় বন্ধুদের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পছন্দ করেন। নিজেরাও চট করে ভেঙে পড়েন না। অন্যদেরও সেই পরামর্শ দেন। এঁদের সঙ্গে কথা বলে নতুন কাজের উদ্যম খুঁজে পান অনেকে। তাই এই ধরনের মানুষদের সঙ্গে বন্ধুত্ব হলে তার থেকে ভালো আর কিছু হয় না। কারও আবার চুলের রেখায় ইংরাজি ‘M’ অক্ষরটি ফুটে ওঠে। এঁরা ভীষণ সৃজনশীল হন। সবসময় নতুন কিছু করার খোঁজ চলতে থাকে এঁদের মনে। যাই করেন নিজেদের সেরাটা দেন। কাজও হয় তেমন সুন্দর। চট করে এঁরা রেগে যান না। ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেন। তাতে লাভ বই ক্ষতি হয় না। সঙ্গী হিসেবেও এঁরাই সেরার সেরা, এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সবক্ষেত্রে যে কপাল দেখেই ব্যক্তিত্ব বোঝা যাবে এমন নয়। সেইসঙ্গে মুখের আরও গঠন দেখতে হবে। সবমিলিয়ে কারও ব্যক্তিত্ব বুঝে নেওয়া যেতেই পারে।