বিয়েবাড়ির আয়োজন মানেই আজকাল যাকে বলে ‘বিগ ফ্যাট ওয়েডিং’। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ। প্যান্ডেল থেকে বাহারি আলোর সাজ, আংটি বদল থেকে কনে-বিদায়, সব কিছুই হতে হবে আপ টু দ্য মার্ক। আর এই পুরো আয়োজনের পিছনে জলের মতো টাকা খরচ তো হয়ই, তার সঙ্গে পরিবেশের ক্ষতিও কিন্তু কিছু কম হয় না। এখন যে নবদম্পতির কথা বলব, তাঁরা কিন্তু হেঁটেছেন সেই চেনা ছকের বাইরে। পরিবেশের কথা মাথায় রেখে তাঁদের বিয়ের আয়োজনে ছিল অভিনবত্ব। আসুন, শুনে নেওয়া যাক সেই পরিবেশবান্ধব বিয়েবাড়ির গল্প।
গোটা বিশ্ব জুড়েই আজকাল শুরু হয়েছে ‘মিনিমালিজম’-এর চর্চা। ‘অল্পেতে খুশি হবে দামোদর শেঠ কি?’- বলার দিন শেষ। বরং অল্পে পরিতৃপ্তির জীবনদর্শনকেই আয়ত্ত করার কথা বলে এই ‘মিনিমালিজম’। এবার নিজেদের বিয়ের অনুষ্ঠানে সেই দর্শনকেই বাস্তব রূপ দিলেন এক দম্পতি। শুধু তাই নয়, পরিবেশের কথাটাও কিন্তু ভোলেননি তাঁরা।
বিয়ে মানেই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ, একগাদা অতিথি আর পরিবেশের দফারফা। এই চেনা ছবির বাইরে গিয়ে তাঁরা আয়োজন করলেন পরিবেশবান্ধব বিয়ের। না, ধুমধামে ত্রুটি ছিল না এতটুকুও। তবে পরিবেশ রক্ষা ও বিয়ের দেদার খরচ বাঁচানো- দুটি কাজই সফল ভাবে করেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: মাঝবয়সে হাতে স্টিয়ারিং, ট্রাক চালিয়ে নেটিজেনদের কুর্নিশ আদায় মহিলার
কিছু দিন আগেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন ইটালির বাসিন্দা আনা মাসিলো এবং দিওগো লিনহেয়ার। বরাবরই পরিবেশের কথা ভাবতে ভালবাসেন তাঁরা। আর নিজেদের বিয়েতেও রাখতে চেয়েছিলেন সেই ছাপ। তাই আয়োজন করে বসলেন পরিবেশবান্ধব বিয়েবাড়ির। যেখানে পরিবেশের পাশাপাশি স্বল্পে-পরিতৃপ্তির বা মিনিমালিস্ট দর্শনকেও গুরুত্ব দিয়েছেন তাঁরা। গোটা আয়োজনে তাঁদের খরচ হয়েছে মাত্র ২ লক্ষ টাকা। ভাবতে পারেন? লোকজন ডেকে একটা গোটা বিয়ের অনুষ্ঠান, তাতে খরচ মাত্র ২ লক্ষ টাকা। এবং কোনও রকম কিছু নষ্ট করা হয়নি এই অনুষ্ঠানে।
একটি বাগানে আয়োজন করা হয়েছিল বিয়ের অনুষ্ঠান। যা পুরোটাই সাজানো হয়েছিল শুকনো পাতা ও ফুল দিয়ে। অতিথিদের হাতে যে পোশাক উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়, তা-ও ছিল সেকন্ড হ্যান্ড। এমনকি আনা এবং দিওগো নিজেরা যে পোশাক পরেছিলেন ওই দিন, তা-ও ছিল রিসাইকেবল ফেব্রিক দিয়ে তৈরি।
আরও শুনুন: নাক দিয়ে ঠেলে পাহাড়ে তুললেন চিনেবাদাম, অভিনব কীর্তিতে বিশ্বরেকর্ড ব্যক্তির
বিয়ের দিন সকাল থেকেই আকাশের মুখ ছিল ভার। ঝিরঝির করে বৃষ্টিও হচ্ছিল। তবে মূল অনুষ্ঠানের সময় সকলকে অবাক করে মেঘের ফাঁক থেকে বেরিয়ে আসে সূর্য। ঠিক এভাবেই যেন একসঙ্গে জীবন শুরু করার স্বপ্ন দেখেছিলেন দুজনে। যা সত্যি করতে পেরে আনন্দ ধরে রাখতে পারেননি দম্পতি।
বরাবরই পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করে এসেছেন আনা ও দিওগো। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারও চালান নানাবিধ। নিজেদের জিরো-ওয়েস্ট বিয়ের ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাগ করে নিয়েছেন দম্পতি। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে চর্চা। যে ভাবে নিজেদের বিয়ের অনুষ্ঠান দিয়ে পরিবেশকে সুস্থ রাখার বার্তা দিয়েছেন এই দম্পতি, তাকে কুর্নিশ করেছে নেটদুনিয়া।