স্বভাবে নয়, অভাবে চোর। তবে সহৃদয়ই বলতে হয়। কেননা চুরির পর চৌর্যবৃত্তির কারণ জানিয়ে একখানা চিঠিও লিখে রেখে গিয়েছে চোর। কী লেখা সেই চিঠিতে? আসুন শুনে নিই।
দোকান খুলে চক্ষু চড়কগাছ মালিকের। মিষ্টির দোকান, তাই সকাল সকাল দোকান খুলেছিলেন জয়সলমিরের ওই ব্যক্তি। দোকান খোলা মাত্র দেখেন, চারিদিকে মিষ্টি ছড়িয়ে আছে। টাকাপয়সা যে জায়গাটিতে থাকে, সেখানটাও ফাঁকা। বুঝলেন দোকানে চুরি হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেন পুলিশে। পুলিশ এসে এদিক-ওদিক দেখতে শুরু করে। দোকানদারকে কিছু প্রশ্নও করে। আর ওই খোঁজাখুঁজি করতে গিয়েই তাদের হাতে আসে একটি চিঠি। চিঠি দেখে তো পুলিশও অবাক। আর কেউ নয়, খোদ চোরই সে চিঠি লিখে রেখে গিয়েছে মালিকের উদ্দেশে।
আরও শুনুন: বেশ্যালয়ে যান স্বামী, জেনে ফেলে গোপনে পিছু ধাওয়া করে ‘প্রতিশোধ’ নিলেন স্ত্রী
কী লেখা সেই চিঠিতে? চিঠিতে লেখা-
স্যার,
আমি খারাপ মনের মানুষ নয়। হ্যাঁ, আমি আপনার দোকানে চুরি করেছি। তবে অন্য কোনও কারণে নয়, খিদের জন্য। কাল থেকে কিচ্ছু খাইনি। খুব খিদে পেয়েছিল। তাই দোকানের উপরের তিনটে ইট সরিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ি। টাকাপয়সা নিতে ঢুকিনি, শুধু কিছু খাব বলেই ঢুকেছিলাম।
আমি জানি, আপনি গরিব। আপনার দোকানে চুরি হয়েছে, তাই সান্ত্বনা দিতেই এই চিঠি লিখছি। বিশ্বাস করুন, বেশি মিষ্টি খাইনি। দুরকমের মোট চারটে মিষ্টি খেয়েছি। কিন্তু ঘটনাচক্রে পায়ে খুব লাগল। এর জন্য আবার ডাক্তারের খরচ আছে। তাই পিগি-ব্যাঙ্ক থেকে টাকাপয়সা নিলাম।
একটাই অনুরোধ, পুলিশকে ফোন করবেন না। ওরা আমার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না। উলটে আপনার থেকে টাকা নেবে। আপনি আমার যা উপকার করেছেন, তা সারাজীবন মনে রাখব।
ইতি,
আপনার অতিথি
আরও শুনুন: ২৮ বছরের বিধবা পুত্রবধূকে বিয়ে ৭০ বছরের বৃদ্ধ শ্বশুরের, জানাজানি হতেই ছড়াল চাঞ্চল্য
এমন চিঠি হাতে পাওয়ার পর আর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে চাননি ওই দোকান-মালিক। তিনি জানিয়েছেন, তিনি নিজেও গরিব। তাঁর দোকানে চুরি হয়েছে, টাকা-পয়সা খোওয়া গিয়েছে তা-ও সত্যি। কিন্তু এই চিঠি হাতে পাওয়ার পর আর ওই চোরের বিরুদ্ধে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয়। অতএব সহৃদয় চোরকে ‘অতিথি’ ধরে নিয়েই তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন। পুলিশে অভিযোগ দায়ের না হলেও এই চিঠির কথা ছড়িয়ে পড়েছে নেটদুনিয়ায়। বহু চুরির ঘটনাই কৌতূহল উদ্রেক করে। কিন্তু চোরের এমন মর্মস্পর্শী চিঠি শুধু বাস্তবে কেন, সম্ভবত গল্পেও বিরল।