দুজনেরই বয়স পেরিয়েছে আশি। অথচ মনের বয়স বাড়েনি এতটুকু। না হলে এই বয়সে বিশ্বভ্রমণের কথা কেউ ভাবতে পারেন! তাও মাত্র ৮০ দিনে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। মাত্র ৮০ দিনে গোটা পৃথিবীটা ঘুরে ফেলেছেন দুই আশি ঊর্ধ্ব বৃদ্ধা। কারা করল এমন অসাধ্য সাধন? আসুন শুনে নিই।
ইহার চেয়ে হতেম যদি আরব বেদুইন, চরণতলে বিশাল মরু দিগন্তে বিলীন… দেশবিদেশে ঘুরতে কে না ভালবাসে! ছোটবেলায় বিশ্বভ্রমণের স্বপ্ন দেখেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু সেই স্বপ্ন সত্যি করতে পেরেছেন হাতে গোনা কয়েকজন। গোটা পৃথিবী ঘুরে বেড়ানো তো আর মুখের কথা নয়! যেমন প্রয়োজন অর্থ, তেমন প্রয়োজন সময়। সর্বোপরি এত বড় ভ্রমণের ধকল সহ্য করাও তো সবার পক্ষে সম্ভব নয়। বয়স্ক মানুষদের ক্ষেত্রে তো একেবারেই নয়। কিন্তু এই সমস্ত প্রতিকূলতাকে কার্যত ভুল প্রমাণ করে বিশ্বভ্রমণ সেরে ফেলেছেন দুই প্রৌঢ়া। দুজনেরই বয়স আশি পেরিয়েছে।
আরও শুনুন: সবার উপর মানুষ সত্য! ঈশ্বরের নামে কখনও শপথ নেননি এই মন্ত্রী
কথা বলছি এলি হ্যাম্বি এবং তাঁর বন্ধু স্যান্ডি হেজলিপের সম্পর্কে। দুজনেই মার্কিন নাগরিক। এলি একজন ফটোগ্রাফার ও হেজলিপ পেশায় চিকিৎসক। দুই বন্ধু একেবারে অভিন্নহৃদয়। দুজনেরই ইচ্ছা ছিল জীবনে একবার অন্তত গোটা পৃথিবীটা ঘুরে দেখবেন। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার জেরে সেই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়নি। এভাবেই জীবনের আশিটা বসন্ত পার করে ফেলেন দুজনে। তবে তাঁদের স্বামী মারা যাওয়ার পর দুজনেই আরও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েন। ঠিক করেন যেভাবেই হোক বিশ্বভ্রমণের পরিকল্পনা সফল করবেন। অবশেষে চলতি বছরের শুরুর দিকে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। প্রায় ৮০ দিন বিশ্বের নানা প্রান্ত ঘুরে বেড়ান দুজনে। শুনতে অবাক লাগলেও, মাত্র এই কদিনে বিশ্বের অধিকাংশ দেশের দর্শনীয় স্থান ঘুরে ফেলেছেন তাঁরা। কী ছিল না সেই তালিকায়! মিশরের পিরামিড থেকে আরম্ভ করে আন্টার্কটিকার বরফ। কিংবা নেপালের বুদ্ধমঠ থেকে ফিনল্যান্ডের আশ্চর্য আকাশ। সবই ঘুরেছেন তাঁরা।
আরও শুনুন: মোদির পড়াশোনা নিয়ে প্রশ্ন সিসোদিয়ার! কেমন ছিল অতীত প্রধানমন্ত্রীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা?
তবে এই যাত্রাপথ যে একেবারেই মসৃণ ছিল তা নয়। বিশেষত মেরুপ্রদেশে ঘুরতে গিয়ে যথেষ্ট সমস্যার সম্মুখীন হন দুজনেই। অতিরিক্ত ঠান্ডায় দুজনেই নাকি প্রায় জমে গিয়েছিলেন। তবু থেমে যাননি। মনের জোরে শেষ পর্যন্ত গিয়েছেন। তারপর দুচোখ ভরে দেখেছেন প্রকৃতির অপরূপ শোভা। নিজেদের এইসব অভিজ্ঞতার কথা একটি তথ্যচিত্রের মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন তাঁরা। দেশ বিদেশে যেসব অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁদের, সেইসব মুহূর্তই ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন দুজনে। কখনও পেঙ্গুইনের পাশে দাঁড়িয়ে ছবি, আবার কখনও আদিবাসী নৃত্যের তালে কোমর দোলানো, সবকিছুই ওই তথ্যচিত্রে রেখেছেন তাঁরা। যা দেখার পর রীতিমতো অবাক সকলেই। এই বয়সে এসেও কীভাবে এতটা মনের জোর ধরে রেখেছেন তাঁরা, সেই প্রশ্নই উঠেছে নেটদুনিয়ায়। একইসঙ্গে তাঁদের কুর্নিশও জানিয়েছেন নেটিজেনরা।