কেবল উত্তরের পাহাড়েই নয়, দেশের দক্ষিণেও পড়ে বরফ। শীতের সফরে তুষারপাত দেখার সাধ হলে ঢুঁ মারতেই পারেন সেদিকে। তবে জানেন কি, কোন জায়গার কথা হচ্ছে? তবে আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
যারা পাহাড় ভালোবাসেন, বরফে মোড়া পাহাড় দেখার ইচ্ছে থাকে তাদের সবার মনেই। কিন্তু চাইলেই কি আর পাওয়া যায়? দেশের মধ্যে বরফ পড়ে, এমন জায়গাই বা কটা! উত্তরের পাহাড় বা দার্জিলিং-সিকিমে বরফ পড়ছে কি না, সেদিকেই তাকিয়ে থাকেন ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা। কিন্তু জানেন কি, কেবল উত্তরে নয়, দক্ষিণেও বরফের দেখা মেলা সম্ভব? ভাবছেন, এ আবার কেমন আজগুবি কথা? ভারতের দক্ষিণ দিকে সাগরের দেখা মেলা সহজ। উত্তরের তুলনায় ঠান্ডাও কমই পড়ে সেখানে। সেখানে আবার বরফ আসবে কোথা থেকে! না, এ কিন্তু কোনও তামাশা নয়। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা এমনই। চাইলেই প্রকৃতি যেমন তার ছোঁয়ায় শুকনো মাটিকে ফুলে ফলে ভরিয়ে তুলতে পারে, ঠিক তেমন করে উত্তপ্ত বালিকেও বদলে দিতে পারে সাদা বরফের আস্তরণে।
সে জায়গার নাম লাম্বাসিঙ্গি। বিশাখাপত্তনমের সবুজ পাহাড়ি উপত্যকায় ঘেরা। শুধু শীতে নয়। এই লাম্বাসিঙ্গি গ্রামটি সারা বছরই ঢাকা থাকে ঘন কুয়াশায়। আর শীত পড়া মাত্রই তাপমাত্রার পারদ নামতে থাকে চড়চড় করে। থামে মাইনাস ২ ডিগ্রিতে গিয়ে। আর তখনই লাম্বাসিঙ্গির কোলে যেদিকেই তাকাবেন, সেদিকেই আপনার চোখে পড়বে শুধু সাদা বরফের কুচি। শীত পড়তে না পড়তেই গ্রামে একে একে বাড়তে থাকে পর্যটকের সংখ্যা। লাম্বাসিঙ্গি গ্রামটি পূর্বঘাট পর্বতের কোল জুড়ে শুয়ে আছে, তাই এই গ্রামটিকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয়, ‘কোরা বায়ালু’। তেলুগু ভাষার এই শব্দটির এর অর্থ, ‘বাইরে থাকলে যে কেউ ঠান্ডায় জমে যাবে’। তাহলেই ভাবুন। যে গ্রামের নামের মধ্যেই ঠান্ডা নিয়ে এমন সতর্কবার্তা, সেই গ্রামে উপস্থিত হলে আপনাকে কতটা ঠান্ডার মুখে পড়তে হবে।
আরও শুনুন: ঘুরতে গেলেই মিলবে অবাধ যৌনতার সুযোগ! বিশ্বের কোন কোন দেশে রয়েছে এই সুবিধা?
সমুদ্র থেকে লাম্বাসিঙ্গির অবস্থান মোটামুটি ১০২৫ মিটার উঁচুতে। চা-কফির বাগান, স্ট্রবেরির খেত, আপেলের খামার, নানান প্রজাতির পশুপাখি আর গাছপালার সৌন্দর্য, কী নেই সেখানে! তবে লাম্বাসিঙ্গিতে উপস্থিত হলে সেখানকার জনপ্রিয় সুসান ফুলের বাগান দেখতে ভুলবেন না যেন।
এবার প্রশ্ন হল, সেখানে গিয়ে পৌঁছবেন কেমন করে? তাহলে শুনুন। আকাশপথে যেতে চাইলে ‘লাম্বাসিঙ্গি’ থেকে নিকটতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি হল বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দর। লাম্বাসিঙ্গি থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১১৫ কিলোমিটার। আর রেলপথে যেতে চাইলে আপনাকে পৌঁছাতে হবে ‘আনাকাপোল্লে’ রেলওয়ে স্টেশন। আর সেখান থেকে ৭২ কিলোমিটার গেলেই আপনি পৌঁছে যাবেন আপনার গন্তব্য লাম্বাসিঙ্গি।