খাঁটি হাওয়া খেতে চান? না, নিখরচায় মিলবে না তা। তার জন্য খরচ করতে হবে ঘণ্টায় আড়াই হাজার টাকা। হ্যাঁ, হাওয়া বিক্রি করার এমন জমজমাট ব্যবসাই ফেঁদেছেন এক ব্যক্তি। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
সুকুমার রায় কবিতায় লিখেছিলেন এমন এক লোকের কথা, যে ছায়া ধরা আর তা বিক্রি করার ব্যবসা করে। এই ব্যক্তির কাণ্ডটাও যেন অনেকটা তেমনই। তবে ছায়া নয়, হাওয়া বিক্রি করাই তাঁর ব্যবসা। এক ঘণ্টার জন্য হাওয়া কিনতে গেলে খরচ করতে হবে স্থানীয় মুদ্রায় এক হাজার বাট। আর ভারতীয় মুদ্রায় তার মূল্য প্রায় আড়াই হাজার টাকা।
আরও শুনুন: সেঁকার আগে রুটির উপর থুতু ছিটিয়ে দিচ্ছেন রাঁধুনি! ভিডিও দেখে ক্ষোভ উগরে দিলেন নেটিজেনরা
হ্যাঁ, এমনই জমজমাট ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন থাইল্যান্ডের এক ব্যক্তি। ৫২ বছরের ওই ব্যক্তি পেশায় কৃষক। নাম দুসিত কাচাই। নিজস্ব ফার্মও রয়েছে তাঁর। আর সেই ফার্মের দৌলতেই এই নয়া ব্যবসার কথা ভেবেছেন তিনি। পর্যটকদের চড়া দামে হাওয়া বিক্রি করতে শুরু করেছেন ওই ব্যক্তি। তবে তা এক ঘণ্টার জন্যই। এরপর কোনোরকম খরচখরচা ছাড়াই ওই ফার্মে ঘোরা যাবে, এমনকি মিলবে খাবারদাবারও।
আসলে পৃথিবী জুড়ে পরিবেশ দূষণ যেভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে গোটা দুনিয়ারই ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে। যার জেরে ক্রমশ থাবা বাড়াচ্ছে ইশ্ব উষ্ণায়ন। বাতাসে মিশে থাকা ধূলিকণা আর দূষিত পদার্থের জোরে বিভিন্ন বড় বড় শহরকে মাঝে মাঝেই আঁধারে ঢেকে দিচ্ছে ধোঁয়াশা। থাইল্যান্ডের বড় বড় শহর, বিশেষ করে, রাজধানী ব্যাঙ্ককও তার বাইরে নয়। এমনিতেও এয়ার কোয়ালিটি কন্ট্রোল বোর্ড-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিশ্বের অধিকাংশ শহরেই বায়ুর গুণমান স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক নিচে। এই পরিস্থিতিতে শহরের দূষণ থেকে দূরে, পরিবেশের মধ্যে দিন কাটানোর সুযোগ খোঁজেন অনেক মানুষই। আর সেই মওকাতেই লাভের ব্যবসা জমিয়েছেন ওই ব্যক্তি। থাইল্যান্ডের ফু লায়েন খা জাতীয় উদ্যানের সীমানাতেই রয়েছে তাঁর ফার্ম। ওই এলাকাটি এমনিতেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। বন, পাহাড়, ঝরনা- কী নেই সেখানে! আর বলাই বাহুল্য, এসবের কারণে ওই এলাকার বাতাসেও নাগরিক দূষণের ছোঁয়া নেই। আর এই খোলামেলা পরিবেশে সতেজ বাতাসে শ্বাস নেওয়ার জন্য ওই ফার্মে আসতেই পারেন পর্যটকেরা।
আরও শুনুন: দল বদল করা বিধায়কদের ‘যৌনকর্মী’-র সঙ্গে তুলনা, বিতর্ক উসকে মন্তব্য কংগ্রেস নেতার
তবে ওই ব্যক্তি এ কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, পরিবেশ ধ্বংসের অভ্যাসকে না থামাতে পারলে কেবল শৌখিনতার জন্য এখানে আসা উচিত নয়। তা ছাড়া, সাধারণ পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা নিলেও, বৃদ্ধ বৃদ্ধা এবং শিশুদের জন্য কোনোরকম মূল্য ধার্য করেননি ওই ব্যক্তি। হাওয়া বিক্রি করার নামে আসলে পরিবেশ সচেতনতাই বাড়িয়ে তুলতে চান বলে জানিয়েছেন থাইল্যান্ডের ওই কৃষিজীবী।