দেখতে দেখতে ৭৫ বছরে পা রাখতে চলেছে ভারতের স্বাধীনতা। দেশ জুড়ে মহা সমারোহে পালিত হচ্ছে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’। এই উপলক্ষে চলছে নানা কর্মসূচি, যা তুলে ধরছে দেশের ঐতিহ্য ও গৌরবকে। ঠিক সেই সময়ই, জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডে নাম তুললেন এক তরুণী। আসুন, শুনে নিই তাঁর কীর্তির কথা।
স্কুলের প্রেয়ার লাইনে দাঁড়িয়ে ‘জনগণমন’ গেয়ে ওঠা আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই শৈশবস্মৃতিতে মিশে আছে। স্কুল জীবন পেরিয়ে গেলেও যখনই জাতীয় সংগীত গাওয়ার সুযোগ হয়, প্রত্যেক ভারতবাসীই গর্ব অনুভব করেন। সিনেমা হলে জাতীয় সঙ্গীত বেজে ওঠা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছিল। তবে ঘটনা এই যে, ওই মুহূর্তটিই আমাদের মধ্যে একাত্মবোধের জন্ম দেয়। জাতীয় সঙ্গীত আমাদের সকলকে বেঁধে রাখে এক সূত্র। সেই জাতীয় সঙ্গীত গেয়েই এবার বিশ্বরেকর্ড গড়লেন তেলঙ্গানার এই তরুণী। সাত ঘণ্টায় অন্তত ৭৫ বার ‘জনগণমন’ গেয়ে তিনি জায়গা করে নিয়েছেন ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ড অর্থাৎ WBR-এ।
আরও শুনুন: একটি নয়, কোন বার্তা দিতে দেশে স্থাপন করা হয়েছিল বহু অশোক স্তম্ভ?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘ভারত-বিধাতা’ কবিতার একটি অংশকে ১৯৫০ সালে স্বাধীন ভারতের জাতীয় সঙ্গীত হিসাবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তার আগে অবশ্য ১৯১১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের সাধারণ সভায় প্রথম বার গাওয়া হয়েছিল গানটি। আর তা গেয়েছিলেন স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ। আর পাঁচজন ভারতবাসীর মতোই জাতীয় সঙ্গীতের সঙ্গে এই তরুণীর পরিচয় শৈশবেই। ছোট থেকেই স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জাতীয় সঙ্গীত গাইতেন পান্ডুগা অর্চনা নামে ওই তরুণী। তেলঙ্গানার করিমনগরেই কেটেছে তাঁর ছোটবেলা। স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন হোক বা গণতান্ত্রিক দিবসে, সব ক্ষেত্রেই ডাক পড়ত তাঁর। বিজ্ঞানে স্নাতোকোত্তর স্তরের পড়াশোনা শেষ করার পরে এমএড করেন অর্চনা। আপাতত তেলঙ্গানারই একটি বেসরকারি কলেজে ভাইস প্রিন্সিপ্যাল পদে কর্মরত তিনি।
আরও শুনুন: প্রকৃতির বুকেই আভাস দেশের জাতীয় পতাকার, অপূর্ব দৃশ্যের উল্লেখ ‘অমৃত মহোৎসব’ উদযাপনেও
এ বছর পঁচাত্তর বছরে পা রাখছে ভারতের স্বাধীনতা দিবস। সেই উপলক্ষে গোটা দেশ জুড়ে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠান ও উদযাপনের। চলছে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালন। আর সে কথা মাথায় রেখেই আশ্চর্য কাণ্ড করলেন তরুণী। মাত্র সাত ঘণ্টায় ৭৫ বার গেয়ে ফেললেন জাতীয় সঙ্গীত। ওয়ার্ল্ড বুক অব রেকর্ডে জায়গার পাশাপাশি ইতিমধ্যেই তাঁর এই কীর্তির জন্য তাঁকে সম্মানিত করেছে করিমনগরের পুলিশ কমিশনার ভি সত্যনারায়ণ। অনু্ষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত কালেক্টর এবং শহরের প্রাক্তন মেয়র। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপনে এ ভাবেই দেশমাতৃকাকে সম্মান জানালেন তেলঙ্গানার ওই তরুণী। ইতিমধ্যেই তাঁর কীর্তির কথা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁর এই প্রয়াসের কথা জেনে তাঁকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন বহু মানুষ।