ঠিক যেন অর্ধেক বাঘ, অর্ধেক কুকুর। পৃথিবীতে এরকমই দেখতে এক প্রাণীর অস্তিত্ব ছিল বেশ কয়েক বছর আগেও। কিন্তু বর্তমানে ‘থ্যালাসিন’ নামে এই অদ্ভুতদর্শন প্রাণীটি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। এবার সেই প্রসঙ্গেই বিজ্ঞানীদের দাবি, আবারও নাকি থ্যালাসিনকে ফিরিয়ে আনা যায় পৃথিবীর বুকে। কীভাবে সম্ভব হবে সেই কাজ? আসুন, শুনে নিই।
উচ্চতায় সাধারণ কুকুরেরই মতো। কিন্তু দেহের পিছনের অংশ দেখলে মনে হবে এ যেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার! ছুঁচালো মুখের এই প্রাণীর নাম ‘থ্যালাসিন’। তবে বর্তমানে পৃথিবীর বুকে আর খুঁজে পাওয়া যায় না এই অদ্ভুতদর্শন প্রাণীটিকে। শোনা যায়, বিশ শতকের শুরুর দিকেই একেবারে বিলুপ্তি ঘটে তাসমানিয়া প্রদেশের এই অদ্ভুত প্রাণীটির। তবে বর্তমানে বিজ্ঞানীর দাবি, থ্যালাসিন নামক প্রাণীটিকে নাকি আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
আরও শুনুন: মন্দ কপাল সোমবারের, জঘন্যতম দিন হিসাবে স্বীকৃতি গিনেস বুকে
অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে একসময় অবাধ বিচরণ ছিল এই অদ্ভুতদর্শন প্রাণীটির। কিন্তু প্রায় ৩০০০ বছর আগে এদের কেবলমাত্র তাসমানিয়া প্রদেশেই দেখা যেত। সারা বিশ্বে আর কোথাও এমন প্রাণীর দেখা মিলত না, যার শরীরে বাঘ ও কুকুর উভয় প্রাণীরই বাহ্যিক বৈশিষ্ট আছে। ফলত বিশ শতকের শুরুর দিকেই নিদারুণ হারে চোরাশিকারিদের হাতে প্রাণ যেতে থাকে তাদের। অবশেষে ১৯৮০ সালে অস্ট্রেলিয়ার সরকার সম্পূর্ণ ভাবে বিলুপ্ত হিসাবে ঘোষণা করে এই প্রাণীটিকে। তবে সেই প্রাণীকেই নাকি আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব। এমনই দাবি করেছে মার্কিন মুলুকের কয়েকজন বিজ্ঞানী। টেক্সাস শহরে এক বায়ো টেকনোলজি সংস্থার বিজ্ঞানীদের দাবি, এই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণীটির পুনরায় জন্ম দেওয়া সম্ভব। বিজ্ঞানীদের মতে, ডুনার্ট প্রজাতির ইঁদুরের সঙ্গে থ্যালাসিনের কিছু জিনগত সাদৃশ্য রয়েছে। তাই ডুনার্টের দেহ থেকে প্রাপ্ত ডি-এন-এর রুপান্তর ঘটিয়ে নতুন করে থ্যালাসিনের জন্ম দেওয়া সম্ভব। তবে এর জন্য খরচ হতে পারে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা। তাই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নামীদামী কিছু বিশ্ববিদ্যালয় এই কর্মযজ্ঞে শামিল হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
আরও শুনুন: চলছে মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার, অপারেশন টেবিলেই টানা ৯ ঘণ্টা স্যাক্সোফোন বাজালেন রোগী
বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া কোনও প্রাণীকে নতুন করে ফিরিয়ে আনা বিজ্ঞানজগতে এক উল্লেখযোগ্য দৃষ্টান্ত তৈরি করতে পারে। তাই ইতিমধ্যেই এই কাজে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের স্বনামধন্য ৩০ জন বিজ্ঞানী। এখন থেকে প্রতিনিয়ত জিনের বিবর্তন ঘটানোর কাজ শুরু করলে আগামী ১০ বছরের মধ্যেই জন্ম নিতে পারে থ্যালাসিনের নতুন এক প্রজাতি। তবে এই কাজে যে বায়ো টেকনলজি সংস্থা মূল কাণ্ডারি হিসেবে রয়েছে, তারা নাকি এর আগে ম্যামথ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। সেই কাজ নাকি ইতিমধ্যে শুরুও করা হয়েছে। তাই সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীমহল বর্তমানে তাঁদের এই প্রকল্পের ফলাফল কী হয়, তা দেখতেই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।