হ্যারি পটারের গল্পে ‘ইনভিজিবিলিটি ক্লোক’ বা অদৃশ্য হওয়ার জামা পরে যেভাবে নিজেকে লুকিয়ে ফেলা যেত, তেমন জামাই নাকি এবার আবিষ্কার করতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি এমনটাই দাবি করল এক প্রযুক্তিনির্ভর পোশাক সংস্থা। ঠিক কী জানিয়েছেন ওই সংস্থার বিজ্ঞানীরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
এমনই আশ্চর্য জামা, যা গায়ে পরলেই গায়েব হয়ে যাবেন সকলের চোখের সামনেই। অর্থাৎ প্রকাশ্যে ঘুরলে ফিরলে কেউই দেখতে পাবে না আপনাকে। রূপকথার গল্পে পড়া এই জাদু জামার আকর্ষণ কে-ই বা এড়াতে পেরেছে! জনমানসের এই চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এবার সেইরকম জামা আবিষ্কারের দিকে ঝুঁকলেন বিজ্ঞানীরা। আর শুধু উদ্যোগ নেওয়াই নয়, ইতিমধ্যেই সে পথে নাকি অনেকখানি অগ্রসরও হয়েছেন তাঁরা। এমনটাই দাবি করল ব্রিটেনের একটি প্রযুক্তিনির্ভর পোশাক নির্মাতা সংস্থা। ভলিবাক নামের ওই সংস্থার বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁরা এমন পোশাক বানিয়ে ফেলতে চলেছেন, যা ফাঁকি দিতে পারবে ইনফ্রারেড প্রযুক্তিকেও। মাত্র বছর দুয়েকের মধ্যেই বাজারে আসতে পারে এমন পোশাক, এমনটাই দাবি তাঁদের।
আরও শুনুন: দেওয়ালে রং করলেই আলো জ্বলবে ঘরে, বিজ্ঞানীদের আশ্চর্য আবিষ্কার সৌর রং
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই গবেষণার কাজে অনেকখানি সাফল্য পেয়েছেন ওই বিজ্ঞানীরা। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে একটি জ্যাকেট তৈরি করে ফেলেছেন তাঁরা। তাতে ব্যবহার করা হয়েছে ‘গ্রাফিন’ নামের এক প্রকার নরম, স্বচ্ছ ও উচ্চপরিবাহী পদার্থ। দেহের তাপমাত্রা ঢেকে রাখতে ৪২টি গ্রাফিনের পট্টি বসানো হয়েছে জ্যাকেটে। বলা যেতে পারে, ফোনের পর্দায় যেভাবে আলো কমানো কিংবা বাড়ানো যায়, তেমনভাবেই, দৈহিক তাপমাত্রার কতটুকু পোশাকের বাইরে আসবে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এই জ্যাকেটে। আর এই জ্যাকেট ভবিষ্যতে অদৃশ্য জামা তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে বলে মত গবেষকদের একাংশের।
কিন্তু কেন এমন দাবি করছেন তাঁরা?
আরও শুনুন: উলটোদিকে ঘুরল বয়সের চাকা, ইঁদুরের মতো মানুষের বয়সও কি কমিয়ে দেবে বিজ্ঞান?
আসলে রাতের অন্ধকারে কোনও মানুষকে খুঁজে পেতে অবলোহিত তরঙ্গ বা ইনফ্রারেড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এই ইনফ্রারেড ক্যামেরায় মানুষের দেহের উষ্ণতা ধরা পড়ে। পোশাক পরেও দেহের তাপমাত্রা যেহেতু লুকিয়ে রাখা যায় না, তাই লুকিয়ে থাকা মানুষকে খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির তুলনা মেলা ভার। এদিকে বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার করা ওই জ্যাকেটে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা সম্ভব হচ্ছে বলেই দাবি। সেক্ষেত্রে ইনফ্রারেড ক্যামেরায় ওই জামা পরা মানুষের অস্তিত্ব ধরা পড়বে না। আর সেই কারণেই, বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, অদৃশ্য হওয়ার জামা তৈরি করার থেকে খুব বেশি পিছিয়ে নেই তাঁরা।