এও এক ‘রামমন্দির’। ঠিকানাও সেই অযোধ্যা। শুধু এখানে কোনও গর্ভগৃহ বা মূর্তি নেই। তৈরি করতেও খরচ হয়নি কোটি টাকা। অথচ শয়ে শয়ে মানুষ প্রতদিন ভিড় জমান এখানেও। ঠিক কীসের কথা বলছি জানেন? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
ছবি- শুভ্ররূপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
অযোধ্যার মন্দিরে প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছে রামলালার। উদ্বোধনের পর থেকে ভক্তের ভিড় লেগেই আছে অযোধ্যার মন্দিরে। তাঁদের প্রায় সকলের মুখে,ই দীর্ঘ প্রতিক্ষা অবসানের তৃপ্তি। এতদিনে রামলালা মাথার উপর ছাদ পেলেন আবেগে ভেসে এমনটাও দাবি করেছেন কেউ কেউ। অথচ সেই অযোধ্যাতেই রয়েছে আরও এক ‘রামমন্দির’। সেখানেও শয়ে শয়ে মানুষ ভিড় জমান প্রতিদিন। তফাৎ একটাই, পুজো দিতে নয়, এখানে সবাই হাজির হন চিকিৎসার জন্য।
আরও শুনুন: ভারতে থাকলে ক্রুশে ঝুলতে হত না যিশুকে, বিস্ফোরক দাবি সংঘনেতার
কথা বলছি, অযোধ্যার ‘শ্রীরাম’ হাসপাতাল সম্পর্কে। যা নবনির্মিত রামমন্দিরেরে লাগোয়াই বলা যেতে পারে। দীর্ঘ ১২০ বছর ধরে অযোধ্যাবাসীকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব সামলে আসছে এই হাসপাতালই। প্রথম থেকেই এই হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা। বর্তমানে যা যোগীর সরকারের দায়িত্বাধীন। শোনা যায়, ১৯০০ সালে এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জনপ্রিয় সমাজ সংস্কারক শ্রী রাম বাহাদুর। সে সময় অযোধ্যা এত জনপ্রিয় ছিল না। কাজেই শহরের বুকে শ্রীরাম হাসপাতালের পরিচিতি ছিল ভালো মতোই। এরপর রাম মন্দির তৈরির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চর্চায় উঠে আসে উত্তরপ্রদেশের এই রাজ্য। বর্তমানে যা গোটা দেশের আলোচনার কেন্দ্রে। শ্রীরাম হাসপাতাল প্রাচীনত্বের পাশাপাশি স্থাপত্য হিসেবেও উল্লেখযোগ্য। এতদিনের পুরনো বিল্ডিং এখনও একইভাবে অটুট রয়েছে। এছাড়া এই হাসপাতালের ভিতরে থাকা মার্বেলেও দেখার মতো। এতদিন হালকা গোলাপি রং করা ছিল বাইরের অংশে। তবে রাম মন্দির উদ্বোধনের আগে এই হাসপাতালের রং-ও বদলে হ্লুদ করে দেওয়া হয়।
আরও শুনুন: তাজমহলে পালিত হবে না শাহজাহানের মৃত্যুদিন, দাবি তুলে মামলা হিন্দু মহাসভার
বর্তমানে অযোধ্যার সবথেকে বড় সরকারি হাসপাতাল এটিই। বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগের চিকিতসাও হয় এই হাসপাতালে। আর পুরোটাই যেহেতু বিনামূল্যে, তাই প্রতিদিন ভিড় হয় চোখে পড়ার মতো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কথায়, এতদিন স্রেফ অযোধ্যাবাসীর সেবার দায়িত্ব সামলে এসেছেন তাঁরা। এবার রামলালার দর্শন করতে আসা পুণ্যার্থীদের কোনও সমস্যা হলেও তাঁরাই দায়িত্ব নেবেন। বলাই বাহুল্য, মন্দির প্রতিষ্ঠার দিন ভিড়ের চাপে যে ভক্ত অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসাও হয়েছিল এই শ্রীরাম হাসপাতালেই। আগামীদিনেও এই ধরনের ঘটনায় সবরকম সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকবে শ্রীরাম হাসপাতাল এমনটাই দাবি কর্তৃপক্ষের।