আর জি কর কাণ্ডে চর্চায় উঠে এসেছে কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার বিষয়টি। অথচ কর্মক্ষেত্রে হেনস্তা কি নতুন কোনও বিষয়? সমীক্ষা বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
পার্সোনাল আর প্রফেশনাল আদতে আলাদা, তাই দুই জীবনকে আলাদা রাখাই বাঞ্ছনীয়। এ কথা হামেশাই শোনা যায়। কিন্তু প্রফেশনাল জগতেও যে ব্যক্তিগত পরিসরে হাত পড়ে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পর্যন্ত বিঘ্নিত হয়! হ্যাঁ, কর্মক্ষেত্রে কাজের বাইরে অন্য কিছু থাকার কথা হয়তো ছিল না। কিন্তু সেখানে যে নানাভাবে হেনস্তার ঘটনাও উঁকি দিয়ে যায়, এ কথা তো কোনোভাবেই অস্বীকার করার জায়গা নেই। জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন, লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশন এবং গ্যালাপ-এর এক সমীক্ষা বলছে, বিশ্বজুড়ে প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার।
আরও শুনুন:
কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্তার মুখোমুখি, ভারতীয় আইনে কীভাবে সুরক্ষা পেতে পারেন নারীরা?
সমীক্ষা বলছে, বিশ্বের ১২১টি দেশের ৭৫ হাজার কর্মীর মধ্যে ২২%-ই জানিয়েছেন যে, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি ৫ জনের মধ্যে একজন বিপন্নতার অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে গিয়েছেন। তা কখনও যৌন হেনস্তা, কখনও মানসিক বা অন্য ধরনের আক্রমণ। এই সমস্ত হেনস্তাকে তিন ভাগে ভাগ করা যাচ্ছে, শারীরিক, মানসিক এবং যৌন হেনস্তা। সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রায় ৮.৫ শতাংশ মানুষ জানাচ্ছেন, তাঁরা কর্মক্ষেত্রে শারীরিক হেনস্তা এবং হয়রানির শিকার। ৮.২ শতাংশ মহিলা জানিয়েছেন যে তাঁরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু তাই নয়, কর্মক্ষেত্রে হেনস্তার শিকার হয়েছেন যাঁরা, তাঁদের ৬০ শতাংশের বেশি জানিয়েছেন যে, তাঁদের সঙ্গে এমন ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে।
আরও শুনুন:
হাসপাতালে কি আদৌ নিরাপদ মহিলা কর্মীরা? আর.জি.কর মনে করাচ্ছে অরুণাকেও
কোনও হেনস্তার ঘটনা যখন বড় কোনও পরিণতিতে পৌঁছয়, তখন এই বিষয়টি নিয়ে চর্চা হয়। কিন্তু সমীক্ষার এই হিসেবই বুঝিয়ে দিচ্ছে, হেনস্তা আসলে পুরনো কোনও বিষয় নয়, নতুনও নয়। আর কর্মক্ষেত্রকে যতই প্রফেশনালের গণ্ডিতে বাঁধা হোক না কেন, সেখানেও হেনস্তার অবিরাম আনাগোনা। যে কর্মক্ষেত্রে দিনের অধিকাংশ সময়ই কাটে, যেখানে জীবনের অনেকটা অংশ জমা পড়ে যায়, তা একরকমের ঘরই হয়ে ওঠার কথা ছিল। অথচ দেখা যাচ্ছে, সেখানেও বিপন্ন হতে হচ্ছে মেয়েদের। কোনও কোনও ক্ষেত্রে পুরুষ, সামগ্রিকভাবে সকল মানুষকেই।