কথায় বলে, সবুরে মেওয়া ফলে। এই ব্যক্তির ক্ষেত্রে অবশ্য ধৈর্যের ঘাটতি হয়নি কোনও দিনই। বাড়ির লোকজনের হাজার কটাক্ষ, হাজার কথাবার্তা সত্ত্বেও লটারি কেনার দৃঢ প্রতিজ্ঞা থেকে তাঁকে টলানো যায়নি কোনও মতেই। আর শেষ পর্যন্ত খুলেই গেল ভাগ্যের দরজা। একদিন হঠাৎ করেই লটারি জিতে গেলেন তিনি। কত টাকার শিকে ছিড়ল তাঁর ভাগ্যে? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
এই বৈশাখ মাস যে তাঁর জন্য সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে তা বোধহয় ঘুনাক্ষরেও টের পাননি এই ব্যক্তি। সেই কবে থেকে লটারির টিকিট কিনে আসছেন তিনি। তবে দীর্ঘ ৩৪ বছরে কোনও দিনই তার ভাগ্যে শিকেয় ছেঁড়েনি। তাই বলে ভাগ্যের উপর ভরসা করা মোটেও ছাড়েননি তিনি। বরং একই রকম উদ্যমে লটারির টিকিট কেটে গিয়েছেন পঞ্জাবের ভাটিন্দা জেলার বাসিন্দা রোশন সিং। সম্ভবত ১৯৮৮ সালে প্রথম বার লটারির টিকিট কাটতে শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে একনিষ্ঠ ভাবে লটারি কেটে চলেছেন রোশন। খুব বেশি হলে কখনও একশো, কখনও দু’শো টাকা পেয়েছেন।
আরও শুনুন: বিয়েবাড়ির মেনুতে শুধুই স্যালাড! খিদের চোটে পিৎজা অর্ডার করে খেলেন নিমন্ত্রিত যুবক
লোকে বলে, জুয়োর নেশা নাকি সর্বনাশা। তা সেসব জেনেও লটারির টিকিট কাটার নেশা থেকে টলানো যায়নি তাঁকে। পেশায় তিনি হোশিয়ারি দ্রব্য বিক্রেতা। ১৮ বছর অন্যের দোকানে কাজ করার পর নিজেই একটা দোকান শুরু করেন রোশন। সেখান থেকে আয় হত বটে, তবে সব খরচ সামলে সেখান থেকে কিছুটা টাকা যে নিজের খরচের জন্য আলাদা করে রাখবেন তা আর সম্ভব হয়ে উঠত না কিছুতেই। নিজের খরচের টাকা বলতে ওই লটারির টিকিট কেনার অর্থ। তা-ও কোনও না কোনও ভাবে ব্যবস্থা করে ফেলতেন ঠিকই। লটারি টিকিট কেনা নিয়ে স্বামীর পাগলামী প্রায়শই দুশ্চিন্তায় ফেলে দিত রোশনের স্ত্রীকে। হাজার নিষেধ, অশান্তি সত্ত্বেও সেই লটারির নেশা ছাড়াতে পারেননি তিনি। তবে শেষপর্যন্ত সেই অসীম ধৈর্যের ফল হাতেনাতেই পেলেন রোশন।
প্রতিবারের মতোই পঞ্জাব রাজ্য সরকারের বৈশাখী বাম্পারের লটারির টিকিট কেটেছিলেন এবারও। নতুন বছর যে এভাবে তাঁর জীবনে অর্থ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসবে তার আশাও করেননি তিনি। তবে শেষপর্যন্ত লক্ষ্মী এসেছে তাঁর ঘরে। আড়াই কোটি টাকার বাম্পার লটারি জিতে ফেলেছেন পঞ্জাবের ওই ব্যক্তি। প্রথম যখন বন্ধুর মুখে খবরটা শোনেন, বিশ্বাসই করতে পারেননি। পরে রামপুরা ফুল লটারি সেন্টার থেকে ফোন আসায় নিশ্চিন্ত হন।
আরও শুনুন: আকাশে হঠাৎ খুলে গেল বিমানের দরজা! হাত দিয়ে আটকে সবার প্রাণ বাঁচালেন দুই যাত্রী
বরাবর ভাবতেন, অন্তত লাখ দশেক টাকা কি তিনি জিততে পারেন না লটারিতে! সেই আশা বুকে নিয়েই লটারির টিকিট কেটে চলতেন রোশন। তবে শেষমেশ সেই ইচ্ছেপূরণ হয়েছে তাঁর। আয়কর কেটেকুটে হাতে ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা মতো পাবেন রোশন। শুধু রোশনের জীবনেই যে মিব়্যাকেল ঘটেছে তা নয়। বৈশাখী বাম্পার লটারির ইতিহাসেও নাকি প্রথম বার কেউ এত বড় অঙ্কের টাকা জিতলেন।
সব মিলিয়ে এত বড় লক্ষ্মীলাভ রাতের ঘুম কেড়েছে রোশনের। আপাতত লটারির টাকা দিয়ে নতুন একটা ব্যবসা শুরু করতে চান তিনি। যাতে তিন সন্তানের ভবিষ্যতের আর কোনও ভাবনা না থাকে।