কোনও মহিলার মস্তিষ্কের মৃত্যু হলেও তার গর্ভ ব্যবহার করা হোক। এমনটাই প্রস্তাব দিলেন এক গবেষক। যা শুনে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। ঠিক কী বলেছেন ওই গবেষক অধ্যাপক? শুনে নেওয়া যাক।
কোনও মহিলার ব্রেন ডেথ, অর্থাৎ মস্তিষ্কের মৃত্যু হলেও তাঁকে শারীরিকভাবে জীবিত রাখার দাবি তুললেন এক গবেষক অধ্যাপক। তাঁর মতে, মস্তিষ্কের মৃত্যু হলেও ওই মহিলার গর্ভকে কাজে লাগানো যেতে পারে। আসলে, এক্ষেত্রে এমন মহিলাদের গর্ভকে সারোগেট হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে, এমনটাই প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। যে মহিলারা প্রাকৃতিকভাবে মা হতে পারেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা সুবিধাজনক হতে পারে বলেই দাবি ওই গবেষকের। জার্নাল অফ থিওরেটিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড বায়োএথিক্স-এ সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই মর্মেই প্রস্তাব দিয়েছেন নরওয়ের ওই গবেষক, অ্যানা মাজদর।
আরও শুনুন: সদ্যোজাত মেয়ের গর্ভেও রয়েছে ভ্রূণ, প্রসবের পর হতবাক মহিলা
জানা গিয়েছে, ওই গবেষক নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ে প্র্যাকটিক্যাল ফিলোজফি বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। সম্প্রতি কলম্বিয়ান মেডিক্যাল কলেজের ওই জার্নালে গর্ভের প্রয়োজনে দেহদান বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র পাঠিয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রস্তাব অনুযায়ী, ওই দেহদানের ক্ষেত্রে আগেভাগেই দাতা মহিলার অনুমতির প্রয়োজন হবে। কারণ এই বিশেষ দেহদানের ক্ষেত্রে দাতার মৃত্যুর পর দেহ দান করার ব্যাপার নেই। চিকিৎসকেরা যদি ঘোষণা করেন যে ওই মহিলার ব্রেন ডেথ হয়ে গিয়েছে, সেক্ষেত্রে তাঁকে সারোগেট মা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, এই মর্মেই অনুমোদন দিয়ে রাখবেন ওই মহিলারা। ওই গবেষকের মতে, এর ফলে দুদিকেই একটি করে বিকল্প পথ খোলা থাকছে। অর্থাৎ যে মহিলা প্রাকৃতিকভাবে মা হতে পারছেন না, তিনি এই পদ্ধতির সুবিধা নিতে পারবেন। এমনিতে কোনও মহিলাকে সারোগেট হিসেবে নিয়োগ করতে গেলে যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক ব্যয় ও অন্যান্য আইনি জটিলতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, এক্ষেত্রে সেই জটিলতা অনেকটা কমে যাবে বলেই দাবি ওই গবেষকের। পাশাপাশি ধাত্রী মায়ের স্বাস্থ্যের কোনও সংকটও এক্ষেত্রে প্রভাব ফেলবে না। আবার, কেউ যদি দেহদান করতে ইচ্ছুক না হন, সেক্ষেত্রে দেহ দান না করেও এই পদ্ধতিতে অন্য মানুষের উপকারে আসতে পারবেন তিনি। একে অঙ্গদানের মতো একটি বিষয় বলেই দেখতে চেয়েছেন ওই গবেষক।
আরও শুনুন: গর্ভনিরোধক বড়ি খেলে মহিলাদের সম্পর্কে কী ভাবে পুরুষরা? জানাল সমীক্ষা
যদিও এই প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নেটিজেনরা। এ ধরনের প্রস্তাবকে নারীবিদ্বেষী ও পিতৃতান্ত্রিক বলেও মনে করছেন অনেকে। সব মিলিয়ে এই প্রস্তাবকে যে তাঁরা মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না, সে কথাই বুঝিয়ে দিয়েছেন নেটিজেনরা।