‘শাসন করা তারই সাজে, সোহাগ করে যে গো।’- রবিঠাকুর তো তেমনই বলে গিয়েছেন কবিতায়। কিন্তু যদি শাসনের বালাই না থাকত, মিলত শুধুই সোহাগ করার লোক, কেমন হল বলুন তো ব্যাপারখানা? আর এবার তেমনটাই সত্যি হতে চলেছে। অর্থের বিনিময়েই মিলবে আদর এবং যত্ন। কোথায় পাওয়া যায় এমন পেশাদার আদর করার মানুষ? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
মনখারাপের সময় বা অফিসের কর্মব্যস্ত একটা দিনের পরে কেউ একজন যত্নআত্তি করবে, আদর করে জিজ্ঞেস করবে, কেমন কাটল দিনখানা? কিংবা মাথায় একটু সোহাগের বিলি কেটে দেবে, এমন কার না ইচ্ছা হয় বলুন তো?
আরও শুনুন: লিট্টি চোখা রান্না, নলকূপের জলে স্নান… ছুটি কাটাতে গ্রামে গিয়ে ‘মাটির মানুষ’ পঙ্কজ ত্রিপাঠী
তবে তার জন্য তো চাই মনের মানুষ, এবং তাঁর হাতে যথেষ্ট সময়। আর আজকের ইঁদুরদৌড়ের যুগে সেই সময় কোথায়? তবে ওই যে বলে, পকেটে রেস্ত থাকলে এই দুনিয়ায় সবই হয়। এমনকী মেলে ভালবাসার মানুষও। বিশ্বাস হচ্ছে না?
তবে আলাপ করুন ব্রিটেনের ব্রিস্টলের বাসিন্দা ট্রেভার হুটনের সঙ্গে। তিনি খুলে ফেলেছেন তাঁর নতুন ব্যবসা। না, শুধু ব্যবসা বললে তাকে ভুল বলা হবে। ট্রেভারের একে কাডল থেরাপি বলতেই বেশি পছন্দ করেন। এক ঘণ্টা আদর করার জন্য ট্রেভর নেন সাত হাজার টাকা করে।
আরও শুনুন: অনস্ক্রিন প্রেমিকাকে চুমু খাওয়ার জন্য আত্মত্যাগ! মাংস খাওয়াই ছাড়লেন ‘থর’ সিনেমার নায়ক
মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত মানুষকে যত্নআত্তি এবং ভালবাসার পরশ দিয়ে আরাম দেওয়ার কাজটাই করে থাকেন ট্রেভর। মুন্নাভাইয়ের ‘জাদু কি ঝাপ্পি’ যেমন কাজ করত ম্যাজিকের মতো, ট্রেভরের ‘ঝাপ্পি’-রও তেমনই গুণ রয়েছে বলেই দাবি করেছেন তিনি।
অনেকেই অবশ্য তাঁর পেশাটাকে ভাল চোখে দেখেনা না। যৌনকর্মীদের সঙ্গে গুলিয়েও ফেলেন অনেকেই। তবে ট্রেভর জানিয়েছেন, যৌনতার সঙ্গে তাঁর পেশার দূর দূর পর্যন্ত কোনও সম্পর্ক নেই। বরাবরই মানুষের সঙ্গে মিশতে ভালবাসতেন ট্রেভর। সেই জায়গা থেকেই এমন একটা অভিনব পেশা বেছে নেওয়া।
তা কাডল থেরাপিস্টদের কাছ থেকে কী কী পাচ্ছেন গ্রাহকেরা? ট্রেভর জানালেন, অপরিচিত সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে মেশার মতো একেবারেই নয় ব্যাপারখানা। বরং মনোযোগ ও যত্ন-সহকারে গ্রাহকদের সঙ্গে মিশে তাঁদের একাকিত্ব ও মনখারাপ কাটাতে সাহায্য করেন কাডল থেরাপিস্টরা। ট্রেভরের মতে, অনেকটাই প্লেটোনিক ঘনিষ্ঠতা বলা যেতে পারে একে। এর সঙ্গে যৌনতার কোনও যোগ নেই।
কখনও সম্পর্কে হোঁচট তো কখনও জীবনের নানা অশান্তি, নানা কারণে ব্যক্তিগত জীবনে ভেঙে পড়েন অনেকেই। আর সেসময় বোধহয় সবচেয়ে ভাল দাওয়াই হতে পারে কারওর পাশে থাকা। আর সেই কাজটাই অর্থের বিনিময়ে করে থাকে ট্রেভরের সংস্থা। আর এ ভাবে মানুষের খারাপ সময়ে পাশে থাকতে পেরে দারুণ খুশি ট্রেভর এবং তাঁর কর্মীরা। এর পাশাপাশি দুঃসময়ে লড়ার জন্য মানসিক জোর দিতে নানা রকম সেশনের ব্যবস্থা করে থাকেন তাঁদের সংস্থা। সব মিলিয়ে মানুষের মন ভাল রাখতে কোনও কসুর রাখছেন না ট্রেভররা। আর সেটাই তাঁর ব্যবসার ইউএসপি।