যে যত বড় অপরাধী, তাকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কারের অঙ্ক ততই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে। কিন্তু এখানে গল্পটা উলটো। অপরাধীকে ধরিয়ে দিলে পুরস্কার মিলবে বটে, তবে মাত্র ৫০ পয়সা। কী মানে এই ঘোষণার? আসুন, শুনেই নেওয়া যাক।
এক বছর ধরে পুলিশের ঘুম কেড়ে নিয়েছে এই অপরাধী। তাকে ধরতে গিয়ে নাজেহাল তাবড় পুলিশ অফিসারেরা। এই অবস্থায় তার খোঁজ পাওয়ার জন্যেই পুরস্কার ঘোষণা করেছিল রাজস্থান পুলিশ। কিন্তু সেই পুরস্কারের অঙ্ক দেখে তো সবার চোখ চড়কগাছ। সাধারণত কোনও অপরাধী কত ভয়ংকর সেই বুঝেই তার মাথার দাম ধার্য করা হয়। অর্থাৎ বলা যেতে পারে, এও এক মাপকাঠি। অপরাধের দুনিয়ায় কার গুরুত্ব কতখানি, তা বুঝে নেওয়ার মাপকাঠিই বটে। এখানে অপরাধী যে জবরদস্ত, তা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু তাকেই ধরা বা তার খবরাখবর দেওয়ার মূল্য নাকি মোটে ৫০ পয়সা। মোটা টাকা পুরস্কারমূল্যের বদলে মাত্র ৫০ পয়সা পুরস্কার! কিন্তু কেন এমন সামান্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে পুলিশ? তাহলে খুলেই বলা যাক।
আরও শুনুন: রামনামই সম্বল, কানাকড়ি ছাড়াই খাতা খোলা যায় অযোধ্যার এই ব্যাঙ্কে
আসলে বছরখানেক আগেই অস্ত্র আইনে অভিযুক্ত হয়েছিল যোগেশ নামে রাজস্থানের ওই ব্যক্তি। তারপর থেকেই তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে সে রাজ্যের পুলিশ। কিন্তু এখনও পর্যন্ত আইনের হাত ফাঁকি দিয়েই চলেছে সে। এই পরিস্থিতিতেই তার নামে ধার্য করা হয়েছে পুরস্কার। সে ঘোষণা করেছেন খোদ রাজ্যের এসপি দেবেন্দ্র বিষ্ণোই। আর কেন এই পুরস্কারের অর্থমূল্য এত সামান্য, সে কথাও খোলাখুলিই জানিয়েছেন তিনি।
আসলে, ওই যে মোটা টাকা পুরস্কারমূল্যের মাপকাঠিতে অপরাধীরা নিজেদের যাচাই করে নেয়, সেই সুযোগটিই তিনি দিতে নারাজ। তাঁর সাফ কথা, আসলে অপরাধীদের মূল্য ওটুকুই। এর চেয়ে বেশি দাম পাওয়ার কথা নয় তাদের। পুলিশ প্রশাসন তাদের ধরতে পারছে না বলে মোটা অঙ্কের পুরস্কার ঘোষণা করে তাদের আত্মপ্রসাদ আরও বাড়িয়ে দেওয়ার কোনও মানেই নেই- এমনটাই মনে করেন এসপি। এই প্রসঙ্গে সিনেমার কথা টেনে তিনি আরও বলেছেন, অনেক সময় সিনেমায় অপরাধীকে খানিক নায়কের তকমাই দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবের ছবিটা তো তা নয়। ধরা যাক, শোলে ছবিতে গব্বর খলনায়ক ছিল বটে, কিন্তু সেখানেও দেখা গিয়েছিল পুলিশ তার মাথার দাম ৫০ হাজার টাকা ধার্য করেছে বলে সে রীতিমতো গর্বিত। আর এই গর্বের সুযোগই কোনও অপরাধীকে পেতে দিতে নারাজ ওই পুলিশকর্তা। সে কারণেই এহেন পুরস্কারমূল্য জারি করে অপরাধীর মানমর্যাদা আরও খর্ব করতেই চেয়েছেন তিনি।