অনলাইনে সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনী খুঁজে পেতে চান? এ কথা ভাবা পুরুষদের পক্ষে যতটা সহজ, এ দেশের মেয়েদের পক্ষে মোটেই তত সহজ নয়। কারণ, নিজের মোবাইল ফোনই নেই অধিকাংশ ভারতীয় মহিলার। ফোন করার জন্যও স্বামীর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকা ছাড়া উপায় নেই তাঁদের। এমনটাই জানাল সাম্প্রতিক সমীক্ষা। কী বলছে রিপোর্ট? শুনে নেওয়া যাক।
মেয়েরা কী করবে, কী পরবে, কী বলবে- অনেক ক্ষেত্রেই সে সবকিছু ঠিক করে দিতে চান বাড়ির কর্তাব্যক্তিটি। তিনি হতে পারেন মেয়েটির বাবা, অথবা স্বামী, এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে ছেলেও। হ্যাঁ, ভারতীয় মহিলাদের ক্ষেত্রে সমীক্ষা চালালে দেখা যায়, নিজেদের জীবনের সিদ্ধান্ত অনেক সময়ই তারা নিজেরা নিতে পারে না। বরং পুরুষদের মুখাপেক্ষী হয়েই থাকতে হয় তাদের। আর সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় এই তথ্যই উঠে এল আরও একবার।
আরও শুনুন: সদ্যোজাত মেয়ের গর্ভেও রয়েছে ভ্রূণ, প্রসবের পর হতবাক মহিলা
সম্প্রতি অক্সফ্যাম-এর ‘ইন্ডিয়া ইনইকুয়ালিটি রিপোর্ট: ডিজিটাল ডিভাইড’-এর ফলাফলে দেখা গিয়েছে, ভারতীয় পুরুষদের মধ্যে যতজনের নিজস্ব মোবাইল ফোন রয়েছে, মহিলাদের ক্ষেত্রে নিজস্ব ফোন থাকার হার তার অর্ধেক। অর্থাৎ কোনও বন্ধু, আত্মীয় কিংবা পরিচিত ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে স্বামীর ফোনটি পাওয়ার জন্যই অপেক্ষা করতে হয় তাদের। এই পরিস্থিতিতে ওই মহিলাদের কোনও নিজস্ব পরিসর থাকা সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি কেউ কোনও সম্পর্কে জড়াতে চাইলেও ওই নজরদারি এড়িয়ে তা কার্যত অসম্ভব। আর ইদানীং কালে যেমন অনেক পুরুষই অনলাইনে সঙ্গিনী খুঁজে নেন, এই মহিলাদের ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনাও থাকছে না।
আরও শুনুন: স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা নয় বয়স, ৮৭ বছর বয়সে দ্বিতীয়বার স্নাতকোত্তর হয়ে নজির ভারতীয় বৃদ্ধার
দেখা যাচ্ছে, যেসব মহিলার নিজস্ব ফোন রয়েছে, তাদের বেশিরভাগই সাধারণ হ্যান্ডসেট। অর্থাৎ যে ফোনের দাম তুলনায় কম। এ দেশের মেয়েদের মধ্যে আধুনিক সুযোগসুবিধাযুক্ত স্মার্টফোন থাকার হার আরোই কম। পরিবারে একটি স্মার্টফোন থাকলে সেটি মহিলার স্বামীর অধিকারেই থাকে, এমনটাই জানাচ্ছে সমীক্ষা। পরিসংখ্যান বলছে, এ দেশের ৬১ শতাংশ পুরুষের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে ওই হার মাত্র ৩১ শতাংশ। অক্সফ্যাম ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে প্রতি তিনজনের মধ্যে মাত্র একজন নারীর হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। এই সংখ্যা ভারতের পুরুষদের তুলনায় প্রায় ৩৩ শতাংশ কম। যেখানে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা প্রচার করা হচ্ছে, সেখানে মেয়েদের মধ্যে ডিজিটাল দুনিয়ায় পা রাখার সুযোগটাই অনেকাংশে কম, এ কথাই স্পষ্ট করে দিল এই সমীক্ষা।