কর্মক্ষেত্রে সুস্থ স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে চায় সংস্থা, তাই মানসিক চাপে রয়েছেন এমন কাউকে কাজে রাখতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। এক সংস্থার এহেন ঘোষণার পরেই বাতিল কর্মীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল আরেক সংস্থা। ব্যাপারটা ঠিক কী?
মানসিক চাপে জেরবার? তাহলে তো কাজ করতে পারবেন না! এই আশঙ্কাতেই একশোর বেশি কর্মীকে ছাঁটাই করেছিল এক সংস্থা। পালটা আরেক সংস্থা এই সংস্থাকেই বুঝিয়ে দিল, মানসিক চাপ রয়েছে বলেই কেউ কাজ করতে পারবেন না এমন নয় মোটেও। বরং তাঁরাও কাজ করতে পারেন, কেননা তাঁরা কেয়ার অর্থাৎ যত্ন করেন। সহজ কথায়, যিনি নিজের জীবনে যত্নের প্রয়োজন অনুভব করছেন, তিনি তো অপর কাউকেও যত্ন করবেন বলে আশা করা যায়। আর সেই যত্নের উপর আস্থা রেখেই ওই ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দ্বিতীয় সংস্থাটি।
বিষয়টা ঠিক কী?
কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপের মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি তো নতুন নয়। তবে নতুন ব্যাপার হল যে আজকাল এ নিয়ে কথা বলার চল বেড়েছে। এমনকি অনেক সংস্থা নিজেরাও কর্মীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার দিকে নজর দিচ্ছেন। আলোচ্য সংস্থাগুলির মধ্যে প্রথমটি সম্প্রতি এক সমীক্ষা করেছিল, কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ আছে কি না জানতে চেয়ে। সেই সমীক্ষাতেই দেখা যায়, চাপ আছে বলেই দাবি করেছেন শতাধিক কর্মী। কিন্তু সে উত্তর সামনে আসতেই উলটো বিপদ। তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখা দূরে থাক, বরং বেছে বেছে ওই কর্মীদেরই ছাঁটাই-এর নোটিস পাঠায় নয়ডার সংস্থাটি। ছাঁটাই-এর যুক্তি কী? না, কর্মক্ষেত্রে সুস্থ স্বাভাবিক কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে চায় সংস্থা, তাই মানসিক চাপে রয়েছেন এমন কাউকে কাজে রাখতে নারাজ কর্তৃপক্ষ।
নয়ডার ওই স্টার্টআপ সংস্থা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রূপটান সংক্রান্ত পরিষেবা দিয়ে থাকে। তাদের এহেন পদক্ষেপের কথা সামনে আসতেই সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর মধ্যেই দ্বিতীয় সংস্থার তরফে ওই কর্মীদের কাজে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে এই পরিস্থিতিতে কার্যত সাফাই গেয়েই প্রথম সংস্থাটি জানিয়েছে, এ সবই আসলে প্রচারের কৌশল। সংস্থার তরফে কোনও কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়নি।
হয়তো সত্যিই এসব প্রচারের অঙ্গ। তবে কর্মক্ষেত্রে কর্মীদের মানসিক চাপ এবং সেই চাপের প্রতি কর্তৃপক্ষের আচরণ কেমন হওয়ার কথা, এই বিষয়টিতেই আরও একবার আলো ফেলল এই ভাইরাল ঘটনা।