যাবতীয় নিয়মের ঘেরাটোপ শুরু হয়েছিল মেয়েদের সুরক্ষার কথা ভেবে। সেই নিয়ম আজও চলছে। পোশাকে বিধিনিষেধ থেকে শুরু করে মোবাইল ফোন ব্যবহারে আপত্তি, এখনও এই সবকিছু মেনে চলতে হয় গ্রামের বাসিন্দাদের। কোথায় রয়েছে এমন গ্রাম? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
অনুমতি ছাড়া ছেলে-মেয়ের মেলামেশা নিষিদ্ধ। মেয়েদের মানতে হয় বিশেষ পোশাকবিধি। এমনকি মোবাইল ফোন ব্যবহারের অনুমতিও নেই। কী ভাবছেন, মধ্য প্রাচ্যের কোনও গোঁড়া রাষ্ট্রের কথা বলছি? কিংবা আজ থেকে বেশ কয়েকশো বছর পুরনো সময়ের কথা বলছি? কোনওটাই নয়। এখনও ব্রিটেনের এক গ্রামে ঢুকলে ঠিক এই ছবিই ধরা পড়বে।
আরও শুনুন: চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে হিন্দু ধর্ম, ধর্মগুরুকে সম্মান জানিয়ে এবার উদ্যোগ নিল খোদ নাসা
শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সিনেমা গল্পে যে ব্রিটেন বা ইংরেজদের দেশকে আমরা যেভাবে দেখি, এই গ্রাম একেবারেই তেমন নয়। বরং এর সঙ্গে অন্য কোনও জায়গার তুলনা চলে। কিংবা এখানে গেলেই মনে হতে পারে সময়টা বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে গিয়েছে। কথা বলছি, ব্রিটেনের সাসেক্স অঞ্চলের এক গ্রাম সম্পর্কে। সেখানে মূলত ব্রুডারহফ ক্রিশ্চান কমিউনিটির বাস। তাঁদের সমাজেই প্রচলিত রয়েছে এমন অদ্ভুত সেকেলে নিয়ম। এই মুহূর্তে অন্তত ৩০০ জনের বাস ওই গ্রামে। প্রত্যককেই মেনে চলতে হয় কড়া নিয়ম। অবশ্য নিয়ম বলতে মহিলাদের জন্যই। সবসময় পরতে হয় সম্পূর্ণ শরীর ঢাকা জামাকাপড়। একেবারে গোড়ালি অবধি ঢাকা থাকবে এমন পোশাক ছাড়া আর কিছু পরার অনুমতি নেই। আর এই নিয়ম নতুন নয়। ১৯২০ সালে এই নিয়ম তৈরি হয়েছিল মহিলাদের সুরক্ষার উদ্দেশে। শুধুমাত্র পোশাক বিধি নয়, ছেলে-মেয়ের মেলামেশাতেও ছিল না অনুমতি। আর অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে তো একেবারেই নয়। নিয়ম অমান্য করলে শাস্তিও নেহাতই কম কিছু হত না। তাই সেই সাহস কেউ দেখাত না। এখনও দেখায় না।
আরও শুনুন: রামকে ‘পৌরাণিক’ বললে অপমান! শিক্ষিকাকে বরখাস্ত কি মগজে কারফিউ জারিরই চেষ্টা?
এখানেই শেষ নয়। অনুমতি নেই আধুনিক কোনও যন্ত্রপাতি ব্যবহারেরও। কম্পিউটার, মোবাইল কিছুই ব্যবহার করেন না এই গ্রামের মানুষজন। জীবনযাপন একেবারেই সাধারণ। কোনও অতিরিক্ত দেখনদারি নেই। তবে প্রত্যেককে নির্দিষ্ট একটা কাজ ঠিক করে দেওয়া হয়। তার জন্য কোনও টাকাপয়সা পায় না কেউ। স্বেচ্ছায় করতে হয় সেই কাজ। তাই নিয়েই অবশ্য নিশ্চিন্তে দিন কাটান গ্রামের সকলে। বলাই বাহুল্য, ব্রিটেনের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এই গ্রাম যারপরনায় ব্যতিক্রম। তবু এই নিয়েই এতদিন কাটিয়ে দিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।