চাঁদের গায়ে মানুষের পা পড়ার পর পার হয়ে গিয়েছে অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময়। তবুও এখনও নাকি চন্দ্রপৃষ্ঠে জ্বলজ্বল করছে সেই পায়ের ছাপ। সম্প্রতি এমনটাই জানাল মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। এমনকি এই কথার প্রমাণে একটি ভিডিও-ও পোস্ট করেছে সংস্থা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যে মানুষ একদিন আগুনের ব্যবহার পর্যন্ত জানত না, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে আমূল পালটে ফেলেছে সে-ই। এমনকি পৃথিবীর বাইরেও পা রেখেছে সে। সামগ্রিক মহাকাশে তো বটেই, চাঁদ কিংবা মঙ্গল অভিযানও করে ফেলেছে আদিম মানুষের বর্তমান রূপ হোমো স্যাপিয়েন্স। প্রথম চন্দ্রাভিযান যখন সফল হল, অর্থাৎ প্রথম যেদিন চাঁদে পা রাখল মানুষ, সেই দিনটি নিঃসন্দেহেই তাই মানবসভ্যতার কাছে এক বড়ো মাইলফলক। চাঁদের মাটিতে পা রাখার সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি নিয়ে প্রবাদের মতো ঘোরে একটি বাক্য, ‘one small step for man, one giant leap for mankind’। আর এই কথাটি যিনি বলেছিলেন বলে মনে করা হয়, সেই নীল আর্মস্ট্রং-ই ছিলেন চাঁদে নামা প্রথম মানুষ। মানুষের আর মানবসভ্যতার পদক্ষেপের এই তুলনা তিনিই টেনেছিলেন কি না তা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু তিনি নিজে যে চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রথম পদক্ষেপ করেছিলেন, এবার আক্ষরিক অর্থেই তার পাথুরে প্রমাণ দিল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল এরোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ওরফে নাসা।
আরও শুনুন: দ্রৌপদী নাম হয়েছিল স্কুলে, নিজের ‘আসল’ নাম জানালেন দেশের নয়া রাষ্ট্রপতি
১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই ছিল সেই বিশেষ দিন। নাসার অসংখ্য বিজ্ঞানী এবং গবেষকের অক্লান্ত প্রচেষ্টাকে সার্থক করে সেদিনই সফলভাবে চাঁদে পৌঁছায় অ্যাপোলো ১১। যে মহাকাশযানটিতে ছিলেন নীল আর্মস্ট্রং, এডুইন অলড্রিন এবং মাইকেল কলিন্স। এমন একটি বিপজ্জনক অভিযানে তাঁরা অংশ নিয়েছিলেন, যেখান থেকে ফিরে না আসার আশঙ্কা ছিল ষোলো আনা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব আশঙ্কাকে হারিয়ে অক্ষত দেহেই পৃথিবীর বাইরের অন্য এক দুনিয়ায় পৌঁছতে পারেন তাঁরা, আবার মরমানুষের এই পৃথিবীতে ফিরেও আসেন সফলভাবেই। সেই বিশেষ দিনটির উদযাপন করতেই নিজেদের আর্কাইভ থেকে সম্প্রতি একটি আশ্চর্য ভিডিও ভাগ করে নিয়েছে নাসা। যে ভিডিওতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে একজোড়া পায়ের ছাপ। নাসা জানিয়েছে, চাঁদের মাটিতে নীল আর্মস্ট্রং-এর যে পায়ের ছাপ পড়েছিল, ৫৩ বছর পরেও তা একইভাবে রয়ে গিয়েছে সেখানে। পাশাপাশি সেদিনের একটি ছবিও ভাগ করে নেওয়া হয়েছে নাসার তরফ থেকে। যেখানে চন্দ্রপৃষ্ঠে নেমেছে অ্যাপোলো ১১, আর তার থেকে কিছুদূরে দেখা যাচ্ছে নীল আর্মস্ট্রং-এর ছায়াও।
আরও শুনুন: অটোগ্রাফই জীবনবিমা! চাঁদে যাওয়ার আগে কী পরিকল্পনা করেছিলেন মহাকাশচারীরা?
এই পঞ্চাশ বছরে মহাকাশ গবেষণায় আরও অনেকখানি এগিয়ে গিয়েছে মানুষ। কিন্তু সেই সাফল্যের ইতিহাস খুঁজতে গেলে ওই দিনটিকে অস্বীকার করার কোনও সুযোগ নেই। চাঁদের মাটিতে অক্ষয় হয়ে থাকা ওই একজোড়া পায়ের ছাপ হয়তো সে কথাই ফের মনে করিয়ে দিল।