বিছানায় নয়, এমআরআই স্ক্যানারের ভিতরেই উদ্দাম যৌনতায় মাতলেন যুগল। জায়গাটি সংকীর্ণ, উপরন্তু জোর শব্দের উৎপাত। কিন্তু কোনও কিছুই ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি তাঁদের মিলনে। আর যন্ত্রের মাধ্যমেই সেইসব ছবি তুলেও রাখলেন অন্য কয়েকজন। কিন্তু কেন প্রকাশ্যেই এমন কাণ্ড ঘটালেন তাঁরা? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
যৌনতা বিষয়টির প্রতি মানুষের আকর্ষণ চিরন্তন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তাকে ব্যক্তিগত রাখতেই পছন্দ করেন। তবে এই যুগল কিন্তু সে পথে হাঁটেননি। কার্যত প্রকাশ্যেই যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছিলেন তাঁরা, তাও আবার একটি এমআরআই স্ক্যানারের ভিতরে, যেখানে প্রতিটি অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ধরা থাকবে। আর এই সবকিছুই হয়েছিল তাঁদের সম্মতিতে। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে সেই ছবিগুলি, আর তার জেরেই ফের চর্চায় উঠে এসেছে বছর তিরিশ আগের ওই ঘটনা।
আরও শুনুন: যৌনাঙ্গে ক্ষতির আশঙ্কায় মেয়েদের প্রবেশ নিষেধ থিম পার্কে, আর কোথায় কোথায় রয়েছে এহেন নিষেধাজ্ঞা?
কিন্তু কেন এমন কাণ্ড করেছিলেন ওই যুগল?
আসলে, এই সব কিছুই হয়েছিল এক গবেষণার প্রয়োজনে। সহবাসের সময় মানবদেহের ভিতরে ঠিক কী ঘটে তা ভালভাবে বুঝতেই এহেন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই পরীক্ষায় স্বেচ্ছাসেবক হতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন গবেষক ইডা সাবেলিস এবং তাঁর প্রেমিক জুপ। প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী উল্লম্ব ভাবে মিলিত হওয়ার কথা ছিল ইডা ও জুপের। কিন্তু তাতে বিশেষ কিছু বোঝা যায়নি। এরপর ইডাই পরামর্শ দেন বিভিন্ন কোণ থেকে ছবি তোলার। এমআরআই যন্ত্রের ভিতর বিভিন্ন ভঙ্গিতে মিলিত হন তাঁরা। দম্পতির মিলনের সময় এমআরআই করেছিলেন নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞানী মেনকো ভিক্টর ভ্যান অ্যান্ডেল। বিজ্ঞানীরা জানান, এই এমআরআই-এর ছবি এবং ফলাফল যৌন মিলন সংক্রান্ত গবেষণায় একটি নতুন দিক খুলে দিয়েছিল।
ঠিক কী দেখা গিয়েছিল সেই গবেষণায়?
আরও শুনুন: ৩০০ পুরুষের সঙ্গে ৩০০ ভঙ্গিতে যৌনতার রেকর্ড! পর্ন তারকার যুগ শেষ বলে দাবি করলেন সেই অভিনেত্রীই
১৪৯২ সালে একটি ছবি এঁকে লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি জানিয়েছিলেন, যোনির আকৃতি একটি সোজা সিলিন্ডার বা চোঙের মতো। এর উপর ভিত্তি করে ধারণ করা হয় যে, একজন পুরুষের লিঙ্গ সরলরৈখিক ভাবে একজন মহিলার যোনিতে প্রবেশ করে। কিন্তু এই নয়া পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, যোনিপথ সরলরৈখিক নয়। আর ঋজু পুরুষাঙ্গও অনমনীয় নয়। বরং মিলনকালে নারীদেহে প্রবেশের পর তা যন্ত্রণা ছাড়াই যোনিপথের আকৃতি অনুযায়ী নিজেকে বাঁকিয়ে নিতে পারে।
১৯৯১ সালে ইডা ও জুপ এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার পর স্বেচ্ছাসেবক হতে এগিয়ে আসেন আরও কয়েক দম্পতি। মোট ১৩ বার শারীরিক মিলনের ছবি তোলা হয় এমআরআই যন্ত্রের ভিতর। অবশেষে ওই সিদ্ধান্তগুলিতে পৌঁছেছিলেন ইডা-সহ অন্যান্য গবেষকরা, যে ফলাফল ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল-এ প্রকাশিত হয়। নারীদেহ, এবং সামগ্রিক ভাবে মানবদেহ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক ধারণা আরও স্পষ্ট করতেই এই পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল, জানিয়েছিলেন ইডা-সহ অন্যান্য গবেষকরা। কিন্তু সেজন্য তাঁরা যেভাবে সব ট্যাবু সরিয়ে এগিয়ে এসেছিলেন, সেই মনোভাবকে কুর্নিশ না জানিয়ে উপায় নেই।