সমানাধিকারের দাবিতে অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেছেন মেয়েরা। তবুও কি সব বেড়া ভেঙে ফেলা সম্ভব হয়েছে? জানেন কি, এমন অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে এই একুশ শতকেও মেয়েদের প্রবেশ নিষেধ? মন্দির থেকে শৌখিন পর্যটন কেন্দ্র, এমন অনেক কিছুই রয়েছে এর আওতায়। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
কেবল পুণ্যস্থানে নয়, একাধিক ক্লাব বা পার্কেও প্রবেশ করতে পারেন না মেয়েরা। যেমন ধরা যাক জার্মানির গ্যালাক্সি ওয়াটার পার্কের কথা। ইউরোপের বৃহত্তম উষ্ণস্নানের আয়োজন রয়েছে এই ওয়াটার পার্কেই। কিন্তু এখানকার দ্রুতগতির রাইডগুলি মেয়েদের জন্য নিষিদ্ধ। ওইসব রাইডে চড়ে মেয়েদের যৌন অঙ্গে ক্ষতি হতে পারে, এই ভয়েই এহেন নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ।
আরও শুনুন: সৈনিকের পেশা বদলে হলেন পর্ন তারকা, কিন্তু স্তন প্রতিস্থাপনের জন্য কী করলেন অভিনেত্রী?
আমেরিকার মেরিল্যান্ডের বার্নিং ট্রি ক্লাবেও রক্ষণশীলতার দরুন প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না মহিলাদের। এই গলফ ক্লাবে যেতে পারেন কেবল ধনী পুরুষেরাই।
গ্রিসের মাউন্ট অ্যাথোস অঞ্চলে দেশবিদেশ থেকে মানুষ বেড়াতে এলেও খ্রিস্টানদের কাছে এটি আদতে তীর্থস্থান। হাজার হাজার বছর ধরে এখানে মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ। জাপানের ওকিনোশিমা দ্বীপেও পবিত্রতার কথা ভেবেই মেয়েদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। কারণ স্থানীয়দের ধারণায় ঋতুচক্র বিষয়টিই অপবিত্র।
আরও শুনুন: কফি থেকে আইসক্রিম… প্রিয় ‘খাদ্য’ তৈরি হচ্ছে অন্য প্রাণীর বর্জ্য থেকে, জানেন?
ঋতু নিয়ে প্রশ্ন তুলেই মেয়েদের প্রবেশ করতে দেয় না ভারতের শবরীমালা মন্দির। কেরলের এই মন্দিরে মেয়েদের প্রবেশ করতে চাওয়া নিয়ে আইনি লড়াই শোরগোল ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশেই। আসলে ভক্তদের বিশ্বাস, এই মন্দিরের দেবতা আয়াপ্পান ব্রহ্মচারী। সেই কারণেই ঋতুযোগ্য বয়সের কোনও মেয়েকে এই মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না, পাছে দেবতা চঞ্চল হন। কিন্তু ২০১৯ সালে খোদ সুপ্রিম কোর্ট এই মন্দিরে মেয়েদের প্রবেশের অনুমতি দেয়। পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মন্দিরে প্রবেশ করেন দুই মহিলা। যদিও এই ঘটনার জেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন ভক্তরা। এমনকি তারপর ফের মন্দির শুদ্ধ করেন কর্তৃপক্ষ।
কেবল শবরীমালা মন্দিরই নয়, হরিয়ানার কার্তিক মন্দিরেও মেয়েদের প্রবেশ নিষেধ। শোনা যায়, এই মন্দিরে একবার ধ্যানে বসেছিলেন কার্তিক। তাঁর সেই ধ্যান ভঙ্গ করতে এক পরমাসুন্দরী অপ্সরাকে পাঠানো হয়। ক্রুদ্ধ দেবসেনাপতি ওই অপ্সরাকে পাথরে পরিণত হওয়ার অভিশাপ দেন। নারীর সূত্রে কার্তিকের ধ্যানভঙ্গ হয়েছিল বলে এই মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ।
অসমের পাতবাউশি সাতরা নামের পবিত্র স্থানটিতেও একই নিষেধের মুখে পড়তে হয় মেয়েদের। ২০১০ সালে ২০ জন মহিলাকে নিয়ে ওই অঞ্চলে প্রবেশের অনুমতি সংগ্রহ করেছিলেন সে রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল জে বি পট্টনায়ক, কিন্তু সেই ঘটনাটি ব্যতিক্রম হিসেবেই থেকে গিয়েছে।