দক্ষিণ দিল্লি ঘুরে ঘুরে প্রতিদিন ৭০-৮০ মটকায় জল ভরেন তিনি। শহরবাসীকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্যকর স্যালাডও বিতরণ করেন। অথচ ৭০ বছরের মানুষটা নিজে ক্যানসারের রোগী। হাজার বাধা সত্বেও বছরের পর বছর ধরে কেন এই কাজ করে চলেছেন দিল্লির ‘মটকা ম্যান’?
বাবাকে ‘মটকা ম্যান’ নামটা দিয়েছিল কন্যা। ‘ক্ষেপা’ বাবার একবারের জন্মদিনে এই নাম দিয়েছিল মেয়ে। দেবে নাই বা কেন! প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় ওঠেন ‘মটকা ম্যান’ অলগ নটরাজন। এরপর তাঁর কাজ হল ৭০-৮০টা বড়সড় মটকায় পানীয় জল ভরে ফেলা। দক্ষিণ দিল্লি ঘুরে ঘুরে এই কাজ করে বেরান নটরাজন। কেন করেন? যাতে করে রাজধানীর পথেঘাটে থাকা তৃষ্ণার্ত মানুষ অন্তত একঢোক জল পান করতে পারেন।
৭২ বছরের নটরাজন ক্যানসারের রোগী। সেই মানুষটাই দিল্লি শহরের ভয়ঙ্কর গ্রীষ্ণকালে একশোটা অবধি মটকায় জলের ব্যবস্থা করেন। মটকা কিনে বিভিন্ন জায়গায় রাখা, সেই মটকায় জল ভরা, গোটা কাজটাই কিন্তু নটরাজনের ব্যক্তিগত উদ্যোগ। এখানেই শেষ নয়, সপ্তাহে একবার বিনামূল্যে স্বাস্থ্যকর স্যালাডও বিতরণ করেন নটরাজন। কমপক্ষে ৪০০ জন আম আদমি এই খাবার পায়।
আরও শুনুন: লম্বা হচ্ছে গোটা দুনিয়া, ভারতীয়দের উচ্চতা কেন কমছে?
‘মটকা ম্যান’ নটরাজন জানান, শুরুতে প্রচুর বাধার মুখে পড়েছি। আমার মটকাগুলোকে পাত্তা দেয়নি সাধারণ মানুষ। অনেকে সন্দেহের চোখে দেখেছে। কেউ কেউ ভেবেছে আমি বোধ হয় আম আদমি পার্টির লোক। রাজনৈতিক অভিসন্ধিতে এই কাজ করছি। ভবিষ্যতে কাউন্সিলর বা এমএলএ হতে চাই বলে ছদ্ম জনসেবা করে বেরাচ্ছি। নটরাজন আরও বলেন, সমাজসেবা জিনিসটা মোটেই সহজ না। খোদ মহাত্মা গান্ধীকেও হাজারও ঝামেলায় পড়তে হয়েছিল।
আরও শুনুন: এই ভারতীয় মহারাজার নামে পোল্যান্ডে আছে রাস্তা-পার্ক-স্কুল, কেন জানেন?
গান্ধী দর্শনে অনুপ্রাণীতে বলেই হয়তো নটরাজন হাল ছাড়েননি। সেই কারণেই কন্যার দেওয়া নাম সার্থক হয়েছে। আজ দিল্লিবাসী একডাকে চেনে তাঁদের ‘মটকা ম্যান’কে।