মেয়েদের দেখলেই ঘোর পাপ। এমনটাই মনে করতেন তিনি। আর তাই, ৮২ বছরের জীবনে কোনও মহিলাকে চোখেও দেখেননি এই ব্যক্তি। এমনকি নিজের মাকেও না। কে ইনি? আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
রামায়ণে শোনা গিয়েছিল ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির কথা। যিনি কখনোই কোনও মেয়েকে দেখেননি। এমনকি নিজের মাকেও জন্মের পর দেখেননি তিনি। কিন্তু বাস্তবে যে তেমনই কোনও মানুষ থাকতে পারেন, এমনটা ভাবাই যায় না, তাই না? কিন্তু অবিশ্বাস্য লাগলেও সত্যি। সত্যি সত্যিই এমন একজন ব্যক্তির খোঁজ পাওয়া যায়, যিনি এই পৃথিবীতে গুনে গুনে ৮২টা বছর কাটিয়ে ফেলেছেন, কিন্তু কখনও কোনও মেয়েকে দেখেননি তিনি। ঋষ্যশৃঙ্গ মুনিকে তাঁর বাবা সকলের চোখের আড়ালে রেখেছিলেন, যাতে কোনও নারীকে দেখে তাঁর সাধনায় ব্যাঘাত না ঘটে। এই ব্যক্তির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা অনেকটা একইরকম। ইনি নিজেও একজন সন্ন্যাসীই বটে। তবে ঋষ্যশৃঙ্গ মুনির মতো তিনি যে নারীর অস্তিত্বের কথাই জানতেন না, এমনটাও নয়। বন্ধুদের কাছে শুনে, বই পড়ে তিনি এটুকু জানতেন যে পৃথিবীতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও থাকে। কিন্তু তাদের কাউকে কোনও দিন স্বচক্ষে দেখার কথা তিনি ভাবেননি। কারণ এই বিষয়টিকে পাপ বলেই মনে করতেন ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: ছোট্ট ভুলে বড় বিপত্তি! অর্ডারের গড়বড়ে বাড়িতে হাজির কন্ডোমের প্যাকেট, বেজায় বিপাকে ব্যক্তি
ওই ব্যক্তির নাম মিহাইলো টোলোটোস। গ্রিসের হালকিডিকির বাসিন্দা ওই ব্যক্তির জন্ম ১৮৫৬ সালে। তাঁকে জন্ম দেওয়ার কিছু ক্ষণ পরই নাকি তাঁর মা মারা যান। অনাথ শিশুটিকে দত্তক নেন গ্রিসের মাউন্ট অ্যাথোসের একটি মঠের সন্ন্যাসীরা। সন্ন্যাসীদের মধ্যেই বেড়ে ওঠেন তিনি। ফলে ছোট থেকেই কঠোর অনুশাসনে তাঁর জীবন বাঁধা পড়ে গিয়েছিল। বড় হওয়ার পর তিনিও সন্ন্যাসজীবনেই প্রবেশ করেন। এদিকে ওই মঠটি অত্যন্ত কট্টরপন্থী। সেখানে কোনও মহিলাকেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হত না। সন্ন্যাসীদের কঠোরভাবে ব্রহ্মচর্য পালন করতে হত সেখানে, আর তাই এমন নিয়ম। যদিও প্রয়োজনে সন্ন্যাসীরা মঠের বাইরে বেরোতে পারতেন। কিন্তু মিহাইলো নাকি কোনও দিনই মঠের বাইরে পা পর্যন্ত রাখেননি। ফলে কোনও দিনই কোনও মহিলার সঙ্গে দেখা পর্যন্ত হয়নি তাঁর। মঠের সন্ন্যাসীরা মনে করতেন, মিহাইলোই বিশ্বের একমাত্র পুরুষ, যিনি কখনও কোনও মহিলার মুখদর্শন করেননি। তাই সন্ন্যাসীদের মধ্যে তাঁর সম্মানও ছিল বেশি। ১৯৩৮ সাল নাগাদ মারা যান মিহাইলো। তখন তাঁর বয়স হয়েছিল প্রায় ৮২ বছর। মৃত্যুর পরেও একইরকম মর্যাদা পেয়েছিলেন এই ব্রহ্মচারী সন্ন্যাসী। এমনকি সংবাদপত্রেও তাঁর কথা ছাপা হয়েছিল। একজন মানুষ চার দেওয়ালের মধ্যে নিজেকে বেঁধে রেখেই ৮২টি বছর কাটিয়ে দিয়েছিলেন, এই তথ্য চমকে দিয়েছিল সকলকেই।