কাছের মানুষ নিখোঁজ হলে অনেকেই বিজ্ঞাপন দেন। খোঁজ দিলে পুরস্কারও মেলে। পোষ্য হারিয়ে গেলেও এমনটা করেন কেউ কেউ। কিন্তু পুতুল হারিয়ে গেলে এমন বিজ্ঞাপন দিতে শুনেছেন কাউকে? আসুন শুনে নেওয়া যাক।
মি. বিনের সঙ্গী সেই টেডি বিয়ারের কথা মনে আছে? আকারে বহরে বেশ ছোট পুতুলটাকে নিয়েই সব জায়গায় যেতেন বিন। ঘোরা, খাওয়া, এমনকি ঘুমানোর সময়ও টেডিকে সঙ্গে রাখতেন। কোনওভাবে তার খোঁজ না পেলে রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে পড়তেন। চারিদিকে হন্যে হয়ে খুঁজতেন, কোথায় গেল একমাত্র সঙ্গী। বাস্তবে সেই বিনকেই যেন খুঁজে পাওয়া গেল।
আরও শুনুন: এখানে বসেই মহাভারত লিখেছিলেন গণেশ! ভারতের শেষ গ্রামের হদিশ জানেন?
অবশ্য এই ব্যক্তিকে মি. বিনের মতো দেখতে নয়। মিল বলতে দুজনেরই সঙ্গী টেডি বিয়ার। দুজনেই সঙ্গী টেডি বিয়ার হারিয়ে গেলে অস্থির হয়ে ওঠেন। কোনও এক এপিসোডে দেখানো হয়েছিল টেডি হারিয়েছে বলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন বিন। সেই বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর সাধের পুতুলকে খুঁজেও পেয়েছেন তিনি। এই ব্যক্তিও ঠিক তেমনটাই করেছেন। ইনিও পুতুল হারিয়ে যাওয়ায় বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন। সেখানে পুতুল খুঁজে দেওয়ার জন্য মোটা টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছিলেন। মি. বিনের মতো তিনিও পুতুল খুঁজে পান ওইভাবে। এবার কার্টুন চরিত্র হিসেবে বিন এমন কিছু করছেন তাতে সকলের হাসিই পেত। বাস্তবে একই কাণ্ড কেউ করছেন দেখে রীতিমতো অবাক হয়েছেন সকলেই। কিন্তু তাতে কি! সঙ্গীর খোঁজে বিজ্ঞাপন, কিংবা পুরস্কার দেওয়ার আগে দুবার ভাবেননি ওই ব্যক্তি।
আরও শুনুন: শুধু রাম মন্দির নয়, ১ টাকার জমিতেই মন্দিরের জাদুঘর গড়ছে অযোধ্যা
সঙ্গী টেডিকে নিয়ে প্রায় সব জায়গায় যেতেন এই ব্যক্তি। এমনই এক সফরে সুদূর স্পেনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। যাত্রাপথ দীর্ঘ। সবসময় জেগে থাকা সম্ভব নয়। তাও সজাগ থাকার চেষ্টা করছিলেন টেডির কথা ভেবে। এদিকে পুতুলটিকে ব্যাগবন্দী করেও রাখবেন না। পাছে তার দমবন্ধ হয়ে যায়! আসলে টেডিকে নিজের বন্ধুই ভাবতেন তিনি। কিন্তু স্পেনে যাওয়ার পথে নিজের ভুলেই টেডিকে হারিয়ে ফেলেন তিনি। ভেবেছিলেন, কেউ ভুল করে তাঁর টেডিকে সঙ্গে নিয়ে চলে গিয়েছে। কারণ এ জিনিস চুরি করার ইচ্ছা কারও হতে পারে না বলেই মনে করতেন ব্যক্তি। প্রথমে আশেপাশে লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেন। কেউই কিছু বলতে পারেনি। বাধ্য হয়ে টেডির ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করেন তিনি। সঙ্গে লিখে দেন যে ব্যক্তি খুঁজে দেবে, তাঁকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। তাতেও বেশ কয়েকদিন খোঁজ মেলেনি। অবশ্য ততদিনে টেডি হারানোর খবর অনেকের কাছে পৌঁছেছে। শেষমেশ পুতুলটির খোঁজ মেলে মেট্রো স্টেশনের ডাস্টবিনে। কেউ অপ্রয়োজনীয় মনে করেই ফেলে দিয়েছিল। যদিও সেসব নিয়ে বিশেষ ভাবনা চিন্তা করেননি ওই চীনা ব্যক্তি। সঙ্গীকে খুঁজে পেয়েই তিনি বেজায় খুশি। তাঁর দাবি, এই পুতুল তাঁর জীবনে সবথেকে বেশি মূল্যবান। অন্যরা যাই ভাবুক, টেডিকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকার কথা ভাবতে পারেন না তিনি। আসলে, আমাদের চারপাশে এমন অনেক কিছুই থাকে যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অপ্রয়োজনীয় বলেই ধরে নিই আমরা। একসময় যে রিমোটকন্ট্রোল গাড়ি, খেলনা-বাটি, বেব্লেড, পুতুল পরম যত্নে রাখা হত, বড় হলে সেসব কোথায় যেন হারিয়ে যায়। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বদলে যেতে চায় সবাই। কেউ কেউ ব্যতিক্রম হয়ে থেকে যান মাত্র। ঠিক যেমনটা রয়ে গিয়েছেন চীনের এই ব্যক্তি।