পোলট্রি ফার্মে মোরগ-মুরগি পালন হবে, সেটাই তো স্বাভাবিক। কিন্তু যদি দেখা যায় সেখানে যত্নে লালন করা হচ্ছে একটি শিয়ালকে, তবে অবাক হতে হয় বইকি। বাস্তবে ঠিক তেমনটাই ঘটেছে কর্ণাতকে। তবে প্রশ্ন জাগে, কেন পোলট্রি ফার্মে শেয়াল পালন করছিলেন মালিক? আসুন শুনে নিই মালিকের জবাব।
পোলট্রি ফার্মে শিয়াল পালন করছিলেন এক ব্যক্তি। খবর পেয়ে ফার্মে হানা দেন তদন্তকারীরা। গিয়ে দেখেন, সত্যিই ফার্মের খাঁচায় বন্দি একটা মাস সাতেকের শিয়ালশাবক। বন্যপ্রাণীকে আটকে রাখার দরুন কর্ণাটকের ওই পোলট্রি ফার্ম মালিক লক্ষ্মীকান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও শুনুন: দাঁড়িপাল্লায় কনের সঙ্গে রাখা অসংখ্য সোনার ইট! অভিনব কায়দায় ওজন পাকিস্তানের বধূকে
তবে পোলট্রি ফার্মে শিয়াল শাবক পালনের ঘটনায় অবাক অনেকেই। সাধারণত এতে হিতে বিপরীত হওয়ারই কথা। তাহলে মালিকের এমন ইচ্ছা হল কেন? জানা গিয়েছে, কর্ণাটকের বহু অঞ্চলেই শিয়াল পুজোর রীতি রয়েছে। একে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসাবেই গণ্য করা হয়। এমনিতেও প্রাচীন সভ্যতাগুলিতে শিয়াল-দেবতার আরাধনার চল ছিল। সেই সংস্কারই এখনও জারি রয়েছে কোনও কোনও অঞ্চলে। পোলট্রি ফার্মের মালিক লক্ষ্মীকান্তও সেই সংস্কারে বিশ্বাস করেন। তবে তিনি শুধু শিয়াল দেবতার উপাসনা করেছেন তাই-ই নয়। খোদ শিয়ালকেই বন্দি করে রেখেছিলেন তাঁর ফার্মে। মাস সাতেক আগে তিনি জঙ্গল থেকেই এই সদ্যোজাত শিয়ালটিকে উদ্ধার করেন। তারপর পরম যত্নেই লালন করছিলেন তাকে। তাঁর দাবি, এই শিয়াল-দেবতাই বয়ে আনবে সৌভাগ্যের খবর।
আরও শুনুন: ৩ হাজার কোটির মালিক! বিশ্বের সবচেয়ে ধনী কুকুরকে ঘিরে থাকেন লাস্যময়ী তরুণীরা
এভাবেই বেশ চলছিল। কিন্তু কোনও ভাবে এই খবর গিয়ে পৌঁছায় সেই রাজ্যের তদন্তকারীদের কানে। তাঁরা গিয়ে শিয়াল-শাবকটিকে উদ্ধার করে। পরীক্ষা করে দেখা হয় যে, শিয়ালটির কোনও ক্ষতি হয়নি। বরং সে বেশ সুস্থই আছে। এখন তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দিলে সে বন্য জীবনে ফিরতে পারবে কিনা, তাও পরীক্ষা করে দেখা হয়। শেষমেশ শিয়ালটিকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তদন্তকারীরা। এদিকে বন্যপ্রাণকে অবৈধ ভাবে আটকে রাখার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই ব্যক্তিকে। আপাতত ওই ব্যক্তিকে ১৫ দিন জেল হেফাজতে রাখারই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারতবর্ষে মূলত তিন প্রজাতির শিয়াল পাওয়া যায়। তবে অবৈধ শিকারের কারণে এর মধ্যে কোনও কোনও প্রজাতি বিপদগ্রস্ত বলেও চিহ্নিত হয়েছে। এই অবস্থায় শিয়ালকে দেবতা জ্ঞানে নিজের কাছ এনে রাখতে গিয়ে বিপদেই পড়লেন ওই ব্যক্তি।