তাঁর বুদ্ধির জেরেই মহিলাদের সুরক্ষায় যোগ হয়েছে কিছু নতুন কবচ। মহিলাদের দৈনন্দিন ব্যবহারের অতি সাধারণ জিনিসকেই তিনি বদলে ফেলেছেন অদ্ভুত কিছু যন্ত্রে। তালিকায় রয়েছে মহিলাদের জুতো, পার্স, এমনকি কানের দুলও। যার মাধ্যমে কোনওরকম বিপদে পড়লে ব্ল্যাঙ্ক ফায়ার থেকে আরম্ভ করে নিকটবর্তী থানায় যোগাযোগ, সবই করতে পারবেন মহিলারা। আসুন, শুনে নেওয়া যাক।
তাঁর নাম শ্যাম চৌরাসিয়া। উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। মহিলাদের সুরক্ষাই তাঁর প্রধান উদ্দেশ্য। তাই মহিলাদের ব্যবহার করা অতি সাধারণ জিনিসকেই তিনি বদলে ফেলেছেন অস্ত্রে। পার্স থেকে শুরু করে জুতো সবকিছুতেই রয়েছে আত্মরক্ষার গোপন অস্ত্র। দেশ জুড়ে মহিলাদের সুরক্ষা যখন প্রশ্নের মুখে, তখন তাঁর আবিষ্কার করা এইসব যন্ত্র অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। তাঁর আবিষ্কার করা যন্ত্রগুলির মধ্যে সবথেকে আকর্ষণীয় বলা যেতে পারে ‘স্মার্ট পার্স’-কে। ভাল করে লক্ষ করলে দেখা যাবে, এই স্মার্ট পার্সের গায়ে রয়েছে একটা প্রায় না দেখতে পাওয়া লাল সুইচ। যাতে আলতো চাপ দিলেই ব্যাগ থেকে ভেসে আসবে, গুলি চালানোর শব্দ। একেবারে সাধারণ পার্সের মতোই দেখতে এই পার্সের ভিতর আসলে একটি ছোট যন্ত্র লুকোনো থাকে, লাল সুইচে চাপ দেওয়ার ফলে ওই যন্ত্র থকেই বের হয় আওয়াজ। যে কেউ হঠাৎ করে সেই আওয়াজ শুনে ভাবতে পারেন বুলেট চলছে কোথাও! ফলত বিপদে পড়লে এই ব্যাগের মাধ্যমে আক্রমণকারীকে অনায়াসেই ভয় দেখাতে পারবেন মহিলারা।
আরও শুনুন: চার সন্তান, তবু অন্তঃসত্ত্বা অবস্থার ছবি নেই রানির… নেপথ্যে কী কারণ?
শ্যামের আবিষ্কার করা অন্যতম একটি যন্ত্রের নাম, ‘স্মার্ট অ্যান্টি-রেপ স্যান্ডেল’। এক্ষেত্রে তিনি মহিলাদের সাধারণ হিল জুতোর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন একটি ব্লুটুথ ডিভাইস। যে ব্লুটুথের মাধ্যমে যেকোনও জায়গায় বিপদের আঁচ পেলেই তাঁরা সংকেত পাঠাতে পারবেন তাঁর কন্ট্যাক্ট লিস্টে থাকা কোনও ব্যক্তি বা নিকটবর্তী থানায়।
শ্যামের বানানোর যন্ত্রগুলির মধ্যে অন্যতম, অদ্ভুত এক কানের দুল। সেই দুলের মধ্যেই নাকি লাগানো রয়েছে জিপিএস ট্র্যাকার। ফলত নিকটবর্তী থানা বা যে কোনও পরিচিতকেই ওই মহিলা বিপদ সঙ্কেত পাঠালে তাঁর পক্ষে ওই মহিলার লোকেশন সহজেই জেনে নেওয়া সম্ভব হবে। নিছক এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়েই এমন অদ্ভুত সব যন্ত্র বানিয়েছিলেন শ্যাম। তারপর সেইসব যন্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে তিনি একটি ভিডিও তৈরি করেন। আর সেই ভিডিও নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই তাঁর উদ্দেশে ভেসে এসেছে ভূয়সী প্রশংসার বার্তা। অনেকেই তাঁর সেই ভিডিওতে কমেন্ট করে জানতে চেয়েছিলেন, এইসব যন্ত্র কীভাবে সাধারণ মানুষের কাছে এসে পৌঁছাবে! সেই উত্তরও নিজেই জানিয়েছেন শ্যাম। তাঁর এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে আব্দুল কালাম ইউনিভার্সিটি। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই তাঁর বানানো এইসব যন্ত্রগুলি সাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জানা গেছে, যন্ত্রগুলি বাজারে এলে দাম হতে পারে প্রায় আড়াই হাজার টাকা।